নির্দোষ প্রমাণিত হয়ে যুক্তরাজ্যে টিকে থাকার লড়াইয়ে বাংলাদেশি শেফ

ছবি: সংগৃহীত

২০০৩ সালে যুক্তরাজ্যের একটি থাই রেস্তোঁরায় শেফ হিসেবে কাজ করার জন্য ওয়ার্ক পারমিট ভিসা নিয়ে ২৭ বছর বয়সে যুক্তরাজ্যে আসেন সাইফুল ইসলাম। দেশটির হোম অফিসের ভুলে দোষী সাইফুল নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করে এখন চালিয়ে যাচ্ছেন টিকে থাকার লড়াই।

যুক্তরাজ্যে আসার আগে তিনি ঢাকায় একটি রেস্তোরাঁয় শেফ হিসেবে কাজ করতেন পটুয়াখালী জেলার এই বাসিন্দা।

২০০৫ সালে তিনি যুক্তরাজ্য পুলিশ এবং হোম অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করে তিনি জানান, নিয়োগকর্তা বেতনের বেশিরভাগ অংশ আটকে রেখে তাকে ১৮ ঘণ্টা কাজ করতে বাধ্য করেন এবং মারধর করেন। হোম অফিস তাকে অন্য কোথাও কাজ করার অনুমতি দেয়।

কিন্তু, তবে বেশ কিছু সমস্যার করণে তিনি যুক্তরাজ্য ছাড়ার হুমকির মুখে পরেন।

ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে আসলে তিনি যুক্তরাজ্যে ইন্ডিফিনিট লিভ টু রিমেইনের আবেদন করেন। দুর্ভাগ্যক্রমে, হোম অফিসের একটি ত্রুটির কারণে তার আবেদন প্রত্যাখ্যান করা হয়। হাম অফিসের এই সমস্যাটি তিনি তাদের জানান।

দেশটির হোম অফিসের তথ্য অনুযায়ী, সাইফুল ইসলাম একজন তালিকাভুক্ত যৌন অপরাধী এবং সাধারণ হামলা ও শারীরিক ক্ষতির জন্য দোষী সাব্যস্ত হয়েছিলেন। এছাড়াও, তিনি বেআইনিভাবে যুক্তরাজ্যে প্রবেশ করেছিলেন এবং এজন্য ২০০৫ সালে তাকে কার্টেলমেন্ট নোটিশ দেওয়া হয়েছিল।

এ সকল তথ্য ভুলে হোম অফিসের রেকর্ডে নথিভুক্ত হয়।

দীর্ঘ আইনি লড়াইয়ের পর ২০১৯ সালে হোম অফিস স্বীকার করেছে যে তাদের গুরুতর ভুর হয়েছে। প্রাথমিকভাবে সাইফুল ইসলামকে পাঁচ হাজার ইউরো এবং ক্ষতিপূরণ হিসেবে আরও এক হাজার ইউরো দেওয়ার প্রস্তাব করে তারা। যা নিতে অস্বীকৃতি জানান সাইফুল ইসলাম।

হোম অফিসের ত্রুটির কারণে, সাইফুল ইসলামের অভিবাসন ইতিহাস মারাত্মকভাবে প্রভাবিত হয়েছে। এই ত্রুটি সংশোধন এবং যুক্তরাজ্যে থাকার অনুমতি নিতে গিয়ে আইনি পরামর্শের জন্য তাকে প্রচুর অর্থ ব্যয় করতে হয়েছে। তাই তিনি ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৩০ হাজার ইউরো দাবি করেন। যা চাওয়া হয়েছে তার অভিবাসন অবস্থা, স্বাস্থ্য এবং আর্থিক ক্ষতির কারণ।

গার্ডিয়ান পত্রিকার সঙ্গে আলাপকালে সাইফুল ইসলাম বলেছিলেন, ‘হোম অফিস আমার সঙ্গে কুকুরের চেয়ে খারাপ আচরণ করেছে। আমি একটি কেলেঙ্কারি এবং জাতি বৈষম্যের শিকার। আমি অনেকগুলো বছর হারিয়েছি, স্বাস্থ্য নষ্ট হয়েছে, প্রচুর অর্থ হারিয়েছি। আমি এর কোনটাই ফিরে পাব না। তবে লড়াই চালিয়ে যেতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ।’

বর্তমানে ৪৪ বছর বয়সী সাইফুল ইসলাম বসবাস করছেন পিটারবারোতে। সেখানকার সংসদ সদস্য পল ব্রিস্টো এবং আইনজীবী অ্যান্ডি কেভ তাকে মামলার বিষয়ে সহায়তা করছেন।

Comments

The Daily Star  | English

US and China reach deal to slash tariffs

The two sides had reached a deal for a 90-day pause on measures and that reciprocal tariffs would come down by 115%.

5m ago