জাহালমকে ১৫ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে ব্র্যাক ব্যাংককে হাইকোর্টের নির্দেশ
দুর্নীতি মামলায় প্রকৃত আসামির পরিবর্তে তিন বছর ধরে কারাভোগ করা নির্দোষ পাটকল শ্রমিক জাহালমকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ১৫ লাখ টাকা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন হাইকোর্ট।
এ রায়ের এক মাসের মধ্যে ব্র্যাক ব্যাংককে ওই টাকা দিতে আদেশ দেন আদালত।
ব্যাংকের দুই কর্মকর্তা ফয়সাল কায়েস ও সাবিনা শারমিন দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) এর তদন্ত কর্মকর্তাদের কাছে প্রকৃত আসামি আবু সালেকের পরিবর্তে জাহালমের ছবি ও তথ্য দেওয়ায় আদালত ক্ষতিপূরণের এ রায় দেন।
ব্র্যাক ব্যাংক কর্মকর্তাদের দেওয়া ছবি ও তথ্য অনুযায়ী দুদকের তদন্ত কর্মকর্তারা জাহালমকে খুঁজে বের করে এবং তাকে দুর্নীতির মামলায় জড়ায় বলে আদালত পর্যবেক্ষণে বলেছেন।
আজ বুধবার বিচারপতি এফআরএম নাজমুল আহসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চ এ রায় দেন।
দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, আদালতের স্বতঃপ্রণোদিত রুলের ওপর এ রায় দেওয়ার পর, হাইকোর্ট সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের কার্যালয়ের মাধ্যমে ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেডকে একটি প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
বেঞ্চ দুর্নীতি মামলার তদন্ত পরিচালনায় এবং তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগের ক্ষেত্রে দুদককে সতর্ক থাকার নির্দেশনাও দেন, যেন ভবিষ্যতে জাহালমের মতো ঘটনা না ঘটে।
বেঞ্চ পর্যবেক্ষণ করেছেন, দুদকের তদন্তকারী কর্মকর্তাদের তদন্ত পরিচালনার ক্ষেত্রে অবহেলা ও যোগ্যতার অভাব আছে। তবে, জাহালমকে ফাঁসানোর কোনও অসৎ উদ্দেশ্য তাদের ছিল না।
ব্র্যাক ব্যাংক লিমিটেডের আইনজীবী এম আসাদুজ্জামানের এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে যোগাযোগ করা হলেও তা সম্ভব হয়নি।
২০১০ থেকে ২০১১ সালের মধ্যে ব্যবসায়ী আবু সালেকের বিরুদ্ধে সোনালী ব্যাংকের প্রায় সাড়ে ১৮ কোটি টাকা জালিয়াতির মাধ্যমে আত্মসাতের অভিযোগে ৩৩টি মামলা হয়। এর মধ্যে ২৬টিতে জাহালমকে আসামি আবু সালেক হিসেবে চিহ্নিত করে অভিযোগপত্র দেয় দুদক।
ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী আবু সালেকের বাড়ি টাঙ্গাইলের নাগরপুর উপজেলায়। দুদক সে অনুযায়ী সমন জারি করে। দুদক কার্যালয়ে হাজির হয়ে জাহালম বলেন, তিনি সালেক নন। বাংলায় লিখতে পারলেও ইংরেজিতে লিখতে জানেন না। ২০১৬ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি দুদকের এসব মামলায় জাহালম গ্রেপ্তার হন। তিন বছর কারাভোগ করেন জাহালম।
জাহালমের মুক্তি ও ক্ষতিপূরণ বিষয়ে গত বছরের জানুয়ারি মাসে হাইকোর্ট স্বতঃপ্রণোদিত রুল ও আদেশ দেন। ৩ ফেব্রুয়ারি কারাগার থেকে মুক্তি পান জাহালম। ওই বেঞ্চে চলতি বছরের ১২ ফেব্রুয়ারি রুলের ওপর শুনানি শেষ হয়।
Comments