সংরক্ষিত বনের জমি চা কোম্পানিকে ইজারা আত্মঘাতী: টিআইবি

একটি বিতর্কিত ভূমি জরিপের ওপর নির্ভর করে মৌলভীবাজারের হারারগজ সংরক্ষিত বনাঞ্চলের ঠিক মাঝখানের ভূমি ‘খাস জমি’ হিসেবে দেখিয়ে, চা উৎপাদনকারী কোম্পানিকে ইজারা দিতে সংশ্লিষ্ট সরকারি কর্মকর্তাদের একাংশের তোরজোড়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি)।

টিআইবি বলেছে, বনের জমি চা কোম্পানিকে ইজারা দেওয়া হলে সেটা হবে পরিবেশ বিধ্বংসী, আত্মঘাতী ও সংবিধান পরিপন্থী। স্থানীয় পর্যায়ের যেসব কর্মকর্তা সংরক্ষিত বনাঞ্চলটি ধ্বংসের পাঁয়তারা করছে তাদের জবাবদিহি নিশ্চিতের জোর দাবি জানায় দুর্নীতিবিরোধী সংস্থাটি।

সংরক্ষিত বনাঞ্চল ধ্বংসের তোড়জোড়!’ শিরোনামে আজ দ্য ডেইলি স্টারে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছে।

বিবৃতিতে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ড. ইফতেখারুজ্জামান বলেন, ‘শত বছরব্যাপী সংরক্ষিত বনাঞ্চল হিসেবে স্বীকৃত হওয়া সত্ত্বেও পরিবেশ ও প্রতিবেশের জন্য অপরিহার্য এরকম একটি বনাঞ্চলের ঠিক মধ্যবর্তী ভূমি “খাস জমি” হিসেবে চিহ্নিত হওয়ার নজির উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, যা খুবই উদ্বেগজনক। বন্যপ্রাণীর আবাসস্থল হিসেবে পরিচিত বনটি জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা এবং পরিবেশের সুষম ভারসাম্য রক্ষায় খুবই গুরুত্বপূর্ণ। অথচ স্থানীয় সরকারি কর্মকর্তাদের একাংশ পরিকল্পিতভাবে দৃশ্যত প্রভাবশালী একটি মহলের সঙ্গে যোগসাজশে এই অসৎ উদ্দেশ্য বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে ডিজিটাল জরিপে ভূমির শ্রেণি পরিবর্তন করে ‘টিলা রকম’ ভূমির উল্লেখ করেছে। এর ফলে ভূমিটি ইজারা দেওয়া যেতে পারে বলে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সুযোগ তৈরি করা হয়েছে মর্মে যে অভিযোগ উঠেছে, তার যথাযথ তদন্ত সাপেক্ষে প্রকৃত দোষীদের দৃষ্টান্তমূলক জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে।’

একইভাবে, রেকর্ড সংশোধনের জন্য মৌলভীবাজার ভূমি জরিপ ট্রাইবুনালে জেলা প্রশাসন, ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তর ও জুড়ী উপজেলার সহকারী কমিশনারের (ভূমি) বিরুদ্ধে বনবিভাগের বিচারাধীন মামলার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে চা উৎপাদন কোম্পানিকে মামলার নিষ্পত্তি সাপেক্ষে ইজারা দেওয়ার যে সুপারিশ করা হয়েছে, তা প্রশ্নবিদ্ধ। যা একইসাথে চলমান ভূমিবিরোধ নিষ্পত্তির ক্ষেত্রে স্বার্থান্বেষীদের পক্ষকেই ভারি করবে বলে মনে করে টিআইবি।

২০১৪ সালে ভূমি রেকর্ড ও জরিপ অধিদপ্তরের তৎকালীন মহপরিচালকের তদন্তের সুপারিশ অনুযায়ী এই বনভূমির কোনো  ভূমিই ইজারা দেওয়া যাবে না এবং এই ইচ্ছাকৃত ভুলের সঙ্গে জড়িতদের খুঁজে বের করে বিভাগীয় শাস্তি গ্রহণের জন্য সংশ্লিষ্টদের যে নির্দেশনা দিয়েছিলেন তার বাস্তবায়ন হলে, আজ সম্পূর্ণ বনাঞ্চলটি যেভাবে ধ্বংস হওয়ার সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে, সেই সুযোগই তৈরি হতো না উল্লেখ করে ড. জামান বলেন, ‘সার্বিক বিবেচনায় এই সংরক্ষিত বনাঞ্চলকে কেন্দ্র করে একটি স্বার্থান্বেষী মহল পরিকল্পিত কূটকৌশল অবলম্বন করেই অগ্রসর হচ্ছে। যেখানে স্থানীয় কর্মকর্তাদের একাংশের  যোগসাজশের ফলে সম্পূর্ণ বিষয়টি ভুলভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে সরকারের উচ্চ পর্যায়ে। তাই এ সংক্রান্ত কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে অগ্রসর হওয়া জরুরি।’

Comments

The Daily Star  | English

JP central office vandalised, set ablaze

A group of unidentified people set fire to the central office of Jatiyo Party in Dhaka's Kakrail area this evening

1h ago