বিদেশ ফেরতদের আইসিটি প্রশিক্ষণ দিচ্ছে কোডার্স ট্রাস্ট
করোনা মহামারির কারণে বিদেশ থেকে যারা কাজ হারিয়ে দেশে ফিরেছেন, কিংবা দেশে ফিরে কাজ হারিয়েছেন, অথবা যারা আর বিদেশে ফিরতে পারছেন না, তাদের আইসিটি প্রশিক্ষণ শুরু করেছে কোডার্স ট্রাস্ট বাংলাদেশ।
বিদেশফেরত ১৪০ জন বাংলাদেশিকে পাইলট প্রকল্পে এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। আজ রবিবার প্রথম ব্যাচের ৩৫ জন প্রশিক্ষণার্থীকে দিয়ে এই কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
আজ রবিবার এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য জানানো হয়। এতে বলা হয়, বাংলাদেশ প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে অংশীদারিত্বে এই কর্মসূচি শুরু হয়েছে।
কোডার্স ট্রাস্টের উপদেষ্টা (অব.) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আবদুল হালিম জানান, ‘প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় থেকে ৫৭৯৪ জনের তালিকা থেকে ১২৫০ জনের সঙ্গে যোগাযোগ করে কোডার্স ট্রাস্ট। তাদের অনলাইনে প্রশিক্ষণ নেওয়ার সুযোগ ও সুবিধা সবার নেই। তাদের মধ্য থেকেই প্রাথমিকভাবে ১৪০ জনকে নির্বাচন করা হয় যাদের চারটি গ্রুপে ভাগ করে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে।’
তিনি জানান, প্রশিক্ষণের মাধ্যমে দক্ষ হয়ে তারা নিজেরাই হয়ে উঠবেন উদ্যোক্তা কিংবা ফ্রি ল্যান্সিংয়ের মাধ্যমে আয় করতে পারবেন বিদেশি অর্থ।
কর্মসূচির উদ্বোধন করে ওয়েবিনারে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রবাসী কল্যান সচিব আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন বলেন, ‘২০২০ সালের মার্চ থেকে এ পর্যন্ত ১ লাখ ৭০ হাজার প্রবাসী বাংলাদেশি দেশে ফিরেছেন। আমরা মনে করি তাদের প্রত্যেকেই কিছু না কিছু যোগ্যতা ও দক্ষতা নিয়ে দেশে ফিরেছেন, আমরা সেগুলো কাজে লাগাতে চাই। তাদের সেই দক্ষতার স্বীকৃতি দিতে চাই। একই সঙ্গে, তাদের নতুন দক্ষতা দিতেও রয়েছে উদ্যোগ, আইসিটি তার অন্যতম।’
তিনি বলেন, ‘আশা করি এই প্রশিক্ষণের মাধ্যমে নতুন উদাহরণ সৃষ্টি হবে এবং বিদেশ থেকে যারা ফিরেছেন তারা নতুন করে নিজেদের খুঁজে পাবেন।’
কোডার্স ট্রাস্টের কো-ফাউন্ডার আজিজ আহমদ বলেন, ‘আমি নিজে প্রবাসী বাংলাদেশি, যুক্তরাষ্ট্র ছাড়াও বিশ্বের অর্ধশত দেশে গেছি, দেখেছি দেশের অর্থনীতিকে সচল রাখতে এই প্রবাসী শ্রমিকদের ভূমিকা ও আন্তরিকতা। তবে কোভিড-১৯ তাদের নতুন করে বিপদের মুখে ফেলেছে, তাদের জন্যই আমাদের এই উদ্যোগ।’
সবাইকে গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে মনোযোগ দিয়ে প্রশিক্ষণ শেষ করার আহ্বান জানান তিনি। বলেন, প্রশিক্ষণ শেষ করলে শুধু দেশেই না, দেশে থেকে আবার বিদেশের চাকরিও নিতে পারবেন বিদেশফেরত বাংলাদেশিরা।
আজিজ আহমদ বলেন, 'এটি একটি ছোট্ট প্রশিক্ষণ, কিন্তু এই প্রশিক্ষণই বদলে দিতে পারে অনেক কিছু।'
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্যসচিব আবদুল করিম বলেন, ‘একটা সময়ে বলা হতো- নলেজ ইজ পাওয়ার, ইনফরমেশন ইজ পাওয়ার, এখন স্কিল ইজ পাওয়ার।’
তিনি বলেন, ‘আমি আশা করি বিদেশ ফেরতদের এই প্রশিক্ষণের মধ্য দিয়ে আত্ম কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে, এবং তারা আবার আমাদের দেশের অর্থনীতিতে ভূমিকা রাখতে পারবেন।’
ওয়েবিনারে স্টার্ট আপ বাংলাদেশ এর আইসিটি বিভাগের প্রকল্প পরিচালক, অতিরিক্ত সচিব মজিবুল হক বলেন, ‘বিদেশ থেকে যারা এসেছেন তাদের কয়েকটি ক্লাস্টারে ভাগ করে প্রশিক্ষণ দেয়া হবে। সরকারের একার পক্ষে এই কাজ সম্পন্ন করা সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে কোডার্স ট্রাস্ট সহযোগিতায় এগিয়ে এসেছে।
প্রবাসী কল্যাণ সচিব আহমেদ মুনিরুছ সালেহীন তার বক্তব্য বলেন, শুরুতে যা সঙ্কট হিসেবে চিহ্নিত হয়েছিলো পরে তাতেই সম্ভাবনা দেখতে পেয়েছি। আজ সে সম্ভাবনা আলোর মুখ দেখছে।
এই কর্মসূচি সাফল্য পেলে আরও ব্যাপক পরিসরে এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে বলেও জানান তিনি।
Comments