সৌদি অভিবাসীদের ইকামা ও ভিসার মেয়াদ বাড়াতে দিতে হচ্ছে বাড়তি টাকা

সৌদি আরবসহ মধ্য প্রাচ্যের দেশগুলোতে নিজ নিজ কর্মস্থলে যোগ দিতে করোনাভাইরাস পরীক্ষার জন্য ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন কিচেন মার্কেটে অপেক্ষায় অভিবাসী শ্রমিকরা। হাজার হাজার অভিবাসীর চাকরি এবং ইকামা ঝুঁকিতে ছিল ফ্লাইট সংকটের কারণে। অবশেষে তারা তাদের কাঙ্ক্ষিত টিকিট পেয়েছে। ৫ অক্টোবর ২০২০। ছবি: এস এনামুল হক

ছুটিতে সৌদি আরব থেকে আসা অভিবাসী শ্রমিকরা বাংলাদেশে আটকে যান করোনা মহামারিতে ফ্লাইট বন্ধ থাকায়। তাদের ভিসা এবং কাজের অনুমতিপত্রের (ইকামা) মেয়াদ শেষ হতে যাওয়ায় সেগুলো নবায়ন করতে নিয়োগকর্তাদের অনুরোধ জানাচ্ছেন তারা। তবে, অনেকেই অভিযোগ করছেন যে এজন্য তাদের অতিরিক্ত অর্থ দিতে হয়েছে।

রাজধানীর কারওয়ান বাজারে সৌদি এয়ারলাইন্সের টিকিট কিনতে অপেক্ষা করা অন্তত ১০ থেকে ১২ জন অভিবাসী শ্রমিক গতকাল দ্য ডেইলি স্টারকে একথা জানান।

মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, সৌদি সরকার গত জুলাইয়ে শ্রমিকদের জন্য ভিসা ও ইকামার মেয়াদ স্বয়ংক্রিয়ভাবে তিন মাস বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছিল।

গত ২৩ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আবদুল মোমেন জানান, ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে অভিবাসীরা ঢাকায় সৌদি দূতাবাসে তাদের ভিসা নবায়ন করতে পারবেন এবং তাদের ইকামার মেয়াদ ১৭ অক্টোবর পর্যন্ত বৈধ থাকবে।

প্রয়োজনে মেয়াদ আরও বাড়ানো যেতে পারে বলেও জানান তিনি।

ঢাকার কেরানীগঞ্জের অভিবাসী শ্রমিক আব্দুর রহমান গতকাল দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, ১৩ সেপ্টেম্বর ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর তিনি রিয়াদে তার স্পনসরের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলেন।

এক মাসের জন্য তার ভিসার মেয়াদ বাড়ানোর জন্য পরিচিত একজনের মাধ্যমে তিনি স্পনসরকে এক হাজার সৌদি রিয়াল দিয়েছেন।

কারওয়ান বাজারের টিকিটের লাইনে থাকা আব্দুর রহমান বলেন, ‘এমনিতে এর জন্য সর্বোচ্চ ২০০ সৌদি রিয়াল নেওয়া উচিত।’

তিনি গত জানুয়ারিতে দেশে এসেছিলেন এবং তার ভিসার মেয়াদ ছিল ১৩ এপ্রিল পর্যন্ত।

তিনি আরও জানান, তার স্পনসর সম্প্রতি এক বছরের জন্য তার ইকামা নবায়ন করেছেন।

এছাড়াও লাইনে অপেক্ষা করছিলেন মাহমুদুল হাসান, যিনি মাদারীপুর থেকে এসেছেন। ছুটিতে গত জানুয়ারিতে বাংলাদেশে আসেন তিনি। ফিরে যাওয়ার কথা ছিল মার্চ মাসে।

তার ভিসার মেয়াদ ৩০ নভেম্বর শেষ হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘আমার নিয়োগকর্তা বলছেন আমাকে এই মাসের মধ্যেই ফিরতে হবে।’

মানিকগঞ্জ থেকে আসা আনোয়ার হোসেন জানান, ৭ জানুয়ারি তিনি দেশে আসেন এবং ৯ জুলাই তাবুকে তার কর্মস্থলে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল।

তিনি জানান, সরকার জানিয়েছে যে তাদের ভিসা এবং ইকামার মেয়াদ স্বয়ংক্রিয়ভাবে বেড়ে যাবে, তবে তা হয়নি।

তিনি বলেন, ‘আমার ইকামার মেয়াদ বাড়ানো হয়নি। আমাকে আমার স্পনসরের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে যোগাযোগ করতে হয়েছিল এবং এই মেয়াদ বাড়ানোর জন্য ৪৫ হাজার টাকা (দুই হাজার সৌদি রিয়াল) দিতে হয়।’

৩ ফেব্রুয়ারি দেশে ফিরে আসা কেরানীগঞ্জের লিয়াকত হোসেন বলেন, ‘৩০ সেপ্টেম্বর মেয়াদ শেষ হওয়ার পর আমার ইকামার মেয়াদ ১৮ অক্টোবর পর্যন্ত বাড়ানোর জন্য ৬৭ হাজার টাকা (তিন হাজার সৌদি রিয়াল) দিতে হয়েছে।’

জানতে চাইলে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মহাপরিচালক (পশ্চিম এশিয়া) বোরহান উদ্দিন গতকাল দ্য ডেইলি স্টারকে জানান, খুব কম সংখ্যক অভিবাসী শ্রমিক সৌদি আরবে ফিরে যেতে সমস্যায় পড়ছেন। তাদের ক্ষেত্রে সমস্যা হচ্ছে কারণ, তাদের স্পনসররা তাদের ফিরিয়ে নিতে চান না।

Comments

The Daily Star  | English
Former president Hamid airport CCTV footage

The story of Hamid’s exit

Security footage obtained and analysed by The Daily Star shows that Hamid's car reached the barrier gate of the VIP terminal at 12:46am on May 8

11h ago