এক শিশু শ্যালককে হত্যা, অপর শ্যালককে হত্যাচেষ্টা

বরগুনায় এক মোসলেম (২২) নামে এক তরুণ তার এক শিশু শ্যালককে (৬) পানিতে ডুবিয়ে হত্যা এবং দেড় বছর বয়সী অপর শ্যালককে হত্যার চেষ্টা করেছে। এ ঘটনার পর স্থানীয়রা তাকে ধরে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে। বরগুনা সদর উপজেলার ডালভাঙা গ্রামের ফারুক মোল্লার ইটভাটা সংলগ্ন বিষখালী নদীর তীরে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে।
আটক মোসলেম। ছবি: সংগৃহীত

বরগুনায় এক মোসলেম (২২) নামে এক তরুণ তার এক শিশু শ্যালককে (৬) পানিতে ডুবিয়ে হত্যা এবং দেড় বছর বয়সী অপর শ্যালককে হত্যার চেষ্টা করেছে। এ ঘটনার পর স্থানীয়রা তাকে ধরে পুলিশের কাছে সোপর্দ করেছে। বরগুনা সদর উপজেলার ডালভাঙা গ্রামের ফারুক মোল্লার ইটভাটা সংলগ্ন বিষখালী নদীর তীরে গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে।

বিষয়টি দ্য ডেইলি স্টারকে নিশ্চিত করেছেন বরগুনা সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তরিকুল ইসলাম। তিনি জানান, মোসলেমের বাড়ি সিরাগঞ্জে। তিনি ঢাকায় রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। প্রাথমিকভাবে মোসলেম হত্যা ও হত্যাচেষ্টার বিষয়টি স্বীকার করেছেন।

হত্যার শিকার শিশুর নাম আবদুল্লাহ। আর যাকে হত্যার চেষ্টা করা হয়েছে, তার নাম আফসান। আজ সকাল সাড়ে ১০টা পর্যন্ত শিশু আবদুল্লাহর মরদেহের সন্ধান পাওয়া যায়নি। পুলিশ ও স্থানীয়রা বিষখালী নদীতে মরদেহ খুঁজছেন।

ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী স্থানীয় বাসিন্দা আবদুর রহিম জানান, ডালভাঙা এলাকার নদীসংলগ্ন একটি দীঘিতে শিশু আফসানকে চুবিয়ে হত্যার চেষ্টা করছিল মোসলেম। বিষয়টি দেখতে পেয়ে তিনি দ্রুত সেখানে গিয়ে ওই শিশুটিকে উদ্ধার করেন। পরে স্থানীয়রা মোসলেমকে আটক করে পুলিশে খবর দেয়। এর আগে, আবদুল্লাহকে পানিতে ডুবিয়ে হত্যার পর মরদেহ বিষখালী নদীতে ভাসিয়ে দেয় মোসলেম।

নিহত শিশু আবদুল্লাহর বাবা ছগীর হোসেন বলেন, ‘তিন মাস আগে অসুস্থ হয়ে আমার স্ত্রীর মৃত্যু হয়। এরপর আবদুল্লাহ (৬) ও আফসানকে (১৮ মাস) আমার দুই মেয়ে লালন-পালন করত। সপ্তাহখানেক আগে জামাতা মোসলেম বরগুনায় আমাদের বাড়িতে বেড়াতে আসে।’

তিনি জানান, বৃহস্পতিবার বিকেলে ডালভাঙা এলাকায় নানা-শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে এসে তার দুই ছেলে আবদুল্লাহ ও আফসানকে নিয়ে ঘুরতে বের হয় মোসলেম। সন্ধ্যার পর তিনি জানতে পারেন তার বড় ছেলে আবদুল্লাহকে পানিতে ডুবিয়ে হত্যার পর মরদেহ বিষখালী নদীতে ভাসিয়ে দিয়েছে মোসলেম। এ ছাড়াও, ছোট ছেলে আফসানকে একই প্রক্রিয়ায় হত্যাচেষ্টার সময় স্থানীয়রা তাকে হাতেনাতে আটক করে।

ছগির আরও বলেন, ‘মোসলেম আমার বড় মেয়ে ছবির জামাতা। ঢাকায় থাকা অবস্থায় আমার মেয়ে ও নাতিকে ঠিকমতো ভরণপোষণ দিত না। তাই মাস খানেক আগে আমার মেয়ে তার সন্তান নিয়ে আমার বাড়িতে চলে আসে। এরপর মোসলেমও সপ্তাহখানেক আগে এসে তার বাচ্চাকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। কিন্তু, আমরা মোসলেমের কাছে আমার নাতিকে দিতে রাজি হইনি। এর জের ধরে মোসলেম এ কাণ্ড ঘটায়।

শিশু শ্যালক আবদুল্লাহকে হত্যার বিষয়টি স্বীকার করে মোসলেম বলেন, ‘আমার ছেলেকে নিয়ে যেতে এসেছিলাম। কিন্তু, আমার স্ত্রী ও শ্বশুর নিয়ে যেতে দেয়নি। এ কারণে ক্ষুব্ধ হয়ে আমি শ্যালক আবদুল্লাহ ও আফসানকে হত্যার পরিকল্পনা করে বেড়াতে নিয়ে যাই। এরপর প্রথমে আবদুল্লাহকে দীঘিতে ফেলে চুবিয়ে হত্যা করে মরদেহ বিষখালী নদীতে ভাসিয়ে দেই। এরপর আফসানকেও একই প্রক্রিয়ায় হত্যার চেষ্টা করি।’

ঘটনার পরপরই স্থানীয়রা ঘাতক মোসলেমকে আটক করে রাখে। খবর পেয়ে গতকাল রাত সাড়ে ৮টার দিকে পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়। পুলিশের কাছেও হত্যার বিবরণ দেয় মোসলেম। স্থানীয়দের কাছ থেকে উদ্ধার করে মোসলেমকে নিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে পুলিশ। পরে তাকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।

বরগুনা সদর থানার ওসি তরিকুল ইসলাম জানান বলেন, ‘নিহত শিশুর মরদেহ উদ্ধারের চেষ্টা চলছে। ঘাতক মোসলেমকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। তার বিরুদ্ধে হত্যা মামলা প্রক্রিয়াধীন।’

Comments

The Daily Star  | English

Army given magistracy power

The government last night gave magistracy power to commissioned army officers with immediate effect for 60 days in order to improve law and order.

7h ago