পিস্তল কিনে ফেসবুকে ছবি দিলেন সংসদ সদস্য

ছবি ফেসবুক থেকে নেওয়া

বগুড়া-৭ আসনের সংসদ সদস্যের বিরুদ্ধে পিস্তল কিনে ফেসবুকে ছবি পোস্ট করার অভিযোগ উঠেছে। ওই ছবিটি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে বগুড়ায় সর্বস্তরে এ নিয়ে সমালোচনা শুরু হয়।

বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল এটিএন নিউজের উত্তরাঞ্চলীয় ব্যুরো প্রধান চপল সাহা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘বগুড়া-৭ আসনের সংসদ সদস্য রেজাউল করিম বাবলু গতকাল তার ফেসবুকে অস্ত্রসহ ছবি পোস্ট করেন। ছবি আমি ডাউনলোড করে রেখেছি। একজন আইন প্রণেতা হয়ে তিনি যে কাজটি করেছেন আইনের চোখে তা অপরাধ।’

‘ছবি নিয়ে সমালোচনা শুরু হলে পরে তিনি তা সরিয়ে নেন,’ বলেন চপল সাহা।

সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হলে অনেকে এই ছবি নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করে বলেন, একজন সংসদ কখনোই তার বৈধ বা অবৈধ অস্ত্র সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে দিতে পারেন না। এটা নিয়ে মানুষের মাঝে ভীতি সৃষ্টি হয়েছে।

আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রদান, নবায়ন ও ব্যবহার নীতিমালা-২০১৬ এর অনুচ্ছেদ ২৫ এর (ক) তে বলা হয়েছে, ‘কোনো ব্যক্তি তার লাইসেন্স করা অস্ত্র আত্মরক্ষার জন্য বহন বা ব্যবহার করতে পারবেন। তবে, অন্যের ভীতি বা বিরক্তির কারণ হতে পারে, এমনভাবে প্রদর্শন করতে পারবেন না। এই নির্দেশনা অমান্যকারী ব্যক্তির বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনেও বলা হয়েছে।

এই বিষয়ে বগুড়া-৭ আসনের সংসদ রেজাউল করিম বাবলু ওরফে গুলবাগির সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে মুঠোফোনে তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘ছবিটি আমি আপলোড করিনি।’

নিজের ফেসবুকে কেন দিয়েছেন জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘আমার ফেসবুকে কোথায় পেলেন?’

একজন আইন প্রণেতা হয়ে আইন অমান্য কেন করলেন এমন প্রশ্নের জবাবে রেজাউল করিম বলেন, ‘আসলে গত পরশু গুলশানে ‘আলী আর্মস’ নামক একটি দোকানে অস্ত্র দেখতে যাই। সেখান থেকে আমি একটি অস্ত্র কিনি। সেই ছবি হয়তো আমার কোনো ছেলে-পেলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দিয়ে থাকতে পারে।’

এই ছবি তিনি দেখেননি দাবি করলেও এক পর্যায়ে এমপি বাবলু বলেন, ‘যে অস্ত্রের কথা আপনি বলছেন আমি সেই অস্ত্র কিনিনি, অন্য একটা কিনেছি। খুব সম্প্রতি আমি অস্ত্রের লাইসেন্স পেয়েছি।’

অস্ত্র সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাইলে রেজাউল করিম এই সংবাদদাতাকে বলেন, ‘আপনি আমার বাসায় আসেন।’

২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ  নির্বাচনে বগুড়া-৭ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ছিলেন রেজাউল করিম বাবলু। তখন এই আসনে বিএনপির প্রার্থীদের প্রার্থীতা বাতিল হলে বিএনপি থেকে কেউ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে পারেননি। ফলে, নির্বাচনের একদিন আগে বিএনপির সমর্থন পায় রেজাউল করিম বাবলু। নির্বাচনে তিনি এক লাখ ২৯৯ ভোট পেয়ে বগুড়া শাজাহানপুর এবং গাবতলী উপজেলার (বগুড়া-৭) আসনের সংসদ নির্বাচিত হন। বগুড়ার স্থানীয় কিছু গণমাধ্যমে সাংবাদিকতা করেছেন বাবলু। এমপি নির্বাচিত হওয়ার কিছুদিন পরেই তার নামে বিভিন্ন অনিয়মের খবর প্রকাশ হয় গণমাধ্যমে।

Comments

The Daily Star  | English
Bangladesh transition from autocracy to democracy

Transitioning from autocracy to democracy: The four challenges for Bangladesh

The challenges are not exclusively of the interim government's but of the entire political class.

10h ago