খুলনায় ট্রিপল মার্ডার মামলার ৩ আসামি ঢাকায় গ্রেপ্তার
খুলনা নগরীর আটরা-গিলাতলা ইস্টার্ন গেট এলাকায় প্রতিপক্ষের গুলিতে তিন জন নিহতের ঘটনার প্রায় তিন মাস পর প্রধান আসামিসহ আরও তিন জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গতকাল রাতে ঢাকার মিরপুরের একটি বাসা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করে খুলনা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) একটি দল।
গ্রেপ্তার তিন আসামিকে খুলনায় নেওয়ার প্রক্রিয়া চলছে। এরা হলেন- মামলার প্রধান আসামি শেখ মিল্টন, তার বড় ভাই দ্বিতীয় আসামি শেখ জাকারিয়া ও তাদের চাচাতো ভাই ছয় নম্বর আসামি শেখ রাজু।
গত ১৬ জুলাই রাত ৮টার দিকে খুলনা নগরীর আটরা-গিলাতলা ইস্টার্ন গেট এলাকার মশিয়ালী গ্রামে আসামিরা পূর্ব প্রস্তুতি অনুযায়ী স্থানীয় গ্রামবাসীর উপর গুলি করে তিন জনকে হত্যা করে। এ ঘটনা গুলিবিদ্ধ হন কমপক্ষে সাত জন। গুলি করার পরপরই তারা পরিবার নিয়ে পালিয়ে যান। ঘটনার দুই দিন পর মিল্টন, জাকারিয়াদের ছোট ভাই মামলার ৩ নম্বর আসামি শেখ জাফরিন হাসানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
খুলনা মহানগর গোয়েন্দা শাখার উপকমিশনার বি এম নুরুজ্জামান দি ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘ঘটনার পর থেকে প্রধান আসামিরা আত্মগোপনে ছিলেন। তাদের গ্রেপ্তারে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান চালানো হয়। বৃহস্পতিবার রাতে তাদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়েছে।’
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও মহানগর গোয়েন্দা শাখার পরিদর্শক এনামুল বলেন, ‘এর আগে মামলার এজাহারভুক্ত ১০ আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। এখন মামলার ২২ আসামির মধ্যে ১৩ জনকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হলো। আগে গ্রেপ্তার ১০ আসামির মধ্যে ৬ জনই আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন।’
উল্লেখ্য, মশিয়ালী আলিয়া মাদ্রাসার ম্যানেজিং কমিটি নির্বাচনে খানজাহান আলী থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সহপ্রচার সম্পাদক মো. জাকারিয়া সভাপতি পদে পরাজিত হন। এ ঘটনার জের ধরে স্থানীয়দের সঙ্গে তার বিরোধের সূত্রপাত হয়। ঘটনাস্থলে তিনি ও তার ছোট ভাই জাফরিন এলোপাতাড়ি গুলি বর্ষণ করেন। এ ঘটনায় মশিয়ালী এলাকার মৃত মো. বারিক শেখের ছেলে মো. নজরুল ইসলাম (৪৫) ও একই এলাকার মো. ইউনুস আলীর ছেলে গোলাম রসুল (৩০) ঘটনাস্থলেই মারা যান। মো. সাইদুল শেখের ছেলে মো. সাইফুল ইসলামকে (২৭) রাতে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (খুমেকে) নেওয়া হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
এ ঘটনার পর উত্তেজিত গ্রামবাসীর পিটুনিতে আহত জিহাদ হোসেন (৩৮) নামে একজন খুমেকে মারা যান।
পরে গ্রামবাসী মশিয়ালী গ্রামের হাসান আলী শেখের পুত্র জাকারিয়া, জাফরিন ও মিল্টনের বসতবাড়ি এবং ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ ১১টি বাড়ি জ্বালিয়ে দেয়।
Comments