বিশ্বব্যাংকের পূর্বাভাস অর্থনীতির বর্তমান উত্তরণের সঙ্গে সামঞ্জস্যহীন: অর্থমন্ত্রী

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের প্রবৃদ্ধি হার (জিডিপি) নিয়ে বিশ্বব্যাংক যে পূর্বাভাস দিয়েছে তা বাংলাদেশের অর্থনীতির বর্তমান উত্তরণের সঙ্গে সামঞ্জস্যহীন।
অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল। স্টার ফাইল ছবি

অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, বাংলাদেশের মোট দেশজ উৎপাদনের প্রবৃদ্ধি হার (জিডিপি) নিয়ে বিশ্বব্যাংক যে পূর্বাভাস দিয়েছে তা বাংলাদেশের অর্থনীতির বর্তমান উত্তরণের সঙ্গে সামঞ্জস্যহীন।

গতকাল প্রকাশিত বিশ্ব ব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া ইকনোমিক ফোকাস ফল-২০২০ রিপোর্টের প্রতিক্রিয়ায় আজ শুক্রবার অর্থমন্ত্রী এ কথা বলেন।

বিশ্ব ব্যাংকের দক্ষিণ এশিয়া ইকনোমিক ফোকাসের ওই রিপোর্টে বাংলাদেশের জিডিপিতে চলতি ২০২০-২১ অর্থবছরে প্রবৃদ্ধি ১.৬ শতাংশ হবে বলে পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে। ২০২১-২২ অর্থবছরে বাংলাদেশে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৩.৪ শতাংশ। করোনা মহামারির প্রভাবে দক্ষিণ এশিয়া নজিরবিহীন অর্থনৈতিক মন্দা পরিস্থিতির দিকে এগিয়ে যাচ্ছে বলেও উল্লেখ করা হয় ওই প্রতিবেদনে।

তবে, সরকার চলতি অর্থবছরে জিডিপি লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন ৮.২ শতাংশ।

অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের জিডিপি সম্পর্কে তারা যে নাম্বারগুলো বলেছেন সেগুলো করোনার প্রভাবে অর্থনীতির স্বাভাবিক গতি শ্লথ হওয়ার শুরু থেকেই বলে আসছে এবং সেই একই জায়গাতেই তারা এখনো আছে। আমাদের অর্থবছরের তিন মাস পার হয়েছে এখনো নয় মাস সময় আছে। করোনার প্রভাবে যে শ্লথ গতি অর্থনীতিতে তৈরি তা এখন অনেকটা স্বাভাবিক। সরকারের অর্থনৈতিক প্রণোদনা ও সামাজিক সুরক্ষা ব্যবস্থা অর্থনীতিকে সুসংহত করেছে, দরিদ্র ও দুর্বলদের জন্য মৌলিক সেবা ও পণ্যাদি নিশ্চিত করেছে। অভ্যন্তরীণ বেসরকারি ও সরকারি ব্যয়, বিনিয়োগ, রপ্তানি এবং রেমিটেন্সসহ অর্থনীতির প্রায় সকল খাত বেশ সক্ষম অবস্থানে আছে।’

অর্থমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা সকলেই জানি তাদের প্রক্ষেপণের বৈশিষ্ট্যই হলো অত্যন্ত রক্ষণশীল পদ্ধতি। বিশ্ব ব্যাংকের এ যাবৎকালের সব প্রক্ষেপণের একটি তালিকা করে তাহলে দেখা যাবে তারা যে প্রক্ষেপণগুলো করে তা বাস্তবতা হতে অনেক দূরে! আমরা বিশ্বাস করি তারা এবারো সেই গতানুগতিক ধারার একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছেন।’

তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের সক্ষমতার নিরিখে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করি এবং তা অর্জন করি। অর্জন করে বার বার প্রমাণ করতে হয় আমরা সঠিক। এবারও আমরা কাঙিক্ষত প্রবৃদ্ধি অর্জন করে প্রমাণ করব যে আমাদের লক্ষ্যমাত্রাই সঠিক। সাম্প্রতিক সময়ে রেমিটেন্স বাড়লেও এটি সাময়িক মনে করছে অনেকে। বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাতে উৎসাহিত করতে আমরা যখন প্রণোদনার ব্যবস্থা করেছি তখন অনেকেই বলেছিল রেমিটেন্সে এর কোন প্রভাব পড়বে না। কিন্তু বাস্তবতা হলো প্রণোদনার ফলে রেমিট্যান্স প্রবাহ বেড়েছে।’

‘২০১৯-২০ অর্থবছরে শুরু থেকে যখন করোনা ছিল না, রেমিট্যান্স প্রবাহে ছিল ঊর্ধ্বগতি তাই আগামীতে এ ধারা অব্যাহত নাও থাকতে পারে এমন ভাবনা যৌক্তিক নয়,’ বলেন অর্থমন্ত্রী।

দেশের মানুষের উদ্দেশ্যে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা বার বার বলেছি এদেশের মানুষ এদেশের অর্থনীতির প্রাণশক্তি। তারাই আবার প্রমাণ করবে বিশ্বব্যাংক যে প্রক্ষেপণ করেছে তা সামঞ্জস্যহীন। আমরা সবাই জানি সব বাধাবিপত্তি উপেক্ষা করে নিজেদের কষ্টার্জিত অর্থ দিয়ে পদ্মা সেতু তৈরি করছি। প্রধানমন্ত্রী দেশের মানুষকে বিশ্বাস করে দেশের মানুষের জন্য তিনি বাজেটে প্রবৃদ্ধির যে প্রক্ষেপণ বা রূপরেখা দিয়েছেন, আমরা বিশ্বাস করি সকলে মিলে আমরা তা অর্জন করতে সক্ষম হবো।’

আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘গত ১০ বছর বাংলাদেশ জিডিপি প্রবৃদ্ধিতে সকলের উপরে ছিল, আমরা আত্মপ্রত্যয়ী ভবিষ্যতেও সেই ধারা বজায় থাকবে।’

Comments

The Daily Star  | English

Deeper crisis feared as 219 factories shut

With 219 garment factories shut in Ashulia yesterday amid worker unrest along the industrial belts, Bangladesh’s apparel sector is feared to get into a deeper crisis if production does not resume on Saturday after the weekend.  

4h ago