পরিণত ব্যাটিংয়ে আলো ছড়ালেন হৃদয় ও ইরফান
কিছুটা মন্থর উইকেটে টপ অর্ডারের সেরা পাঁচ ব্যাটসম্যানকে ৬৫ রানেই হারিয়ে ফেলেছিল শান্ত একাদশ। মাহমুদউল্লাহ একাদশের ক্রমাগত চাপের মধ্যে দাঁড়িয়ে গেলেন যুব বিশ্বকাপ চ্যাম্পিয়ন দলের তৌহিদ হৃদয়, সঙ্গে পেলেন ঘরোয়া ক্রিকেটে অভিজ্ঞ চেনা মুখ ইরফান শুক্কুরকে। ডান-বাম কম্বিনেশনে এই দুজন থিতু হয়ে দারুণ মুন্সিয়ানায় বের করে নিয়েছেন ম্যাচ।
বিসিবির প্রেসিডেন্ট’স কাপের প্রথম ম্যাচে মাহমুদউল্লাহ একাদশকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে শান্ত একাদশ। রোববার মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ১৯৭ রান তাড়ায় নেমে ৫৩ বল হাতে রেখেই ম্যাচ জিতেছে তারা। তাতে আলো ছড়িয়েছেন দুই ব্যাটসম্যান হৃদয় ও শুক্কুর।
দলকে ম্যাচ জিতিয়ে ৭৮ বলে ৫৬ রান করে অপরাজিত ছিলেন ইরফান। ৬৭ বলে ৫২ রান করে দলকে জেতার কিনারে নিয়ে আউট হন হৃদয়।
১৯৭ রান তাড়ায় দুই ওপেনার সাইফ হাসান, সৌম্য সরকারের শুরুটা মন্দ ছিল না। নান্দনিক সব শটে দারুণ শুরু পেয়েছিলেন সাইফ হাসান। কিন্তু তার আউটেই ষষ্ঠ ওভারে বিচ্ছিন্ন হয় এই জুটি। ২২ বলে ৪ বাউন্ডারিতে ১৭ রান করে ইবাদত হোসেনের বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন তিনি। সৌম্যও থিতু হয়ে পড়েছিলেন। শুরুতে কিছু ডট বল খেলায় হাত খুলে মারার একটা ঝোঁক পেয়ে যায় তাকে। ইবাদতের বাজে এক বলে আরও বাজে শটে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ২১ রান করে।
অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্তকে দেখাচ্ছিল সবচেয়ে সাবলীল। উইকেটের ভাষা বুঝে বলে-রানে সমান রেখে এগুচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু বাঁহাতি স্পিনার রাকিবুল হাসানের বলে উইকেটে টেনে বোল্ড হয়ে যান এই বাঁহাতি। এরপরের দুই উইকেট ভীষণ দৃষ্টিকটু।
ইবাদতের বলে আলসে শটে প্লেইড হন হয়ে ফেরা মুশফিক করেন মাত্র ১ রান। তরুণ আফিফ হোসেন মাহমুদউল্লাহর বলে তুলে দেন সহজ ক্যাচ।
এরপরই শুরু ইরফান-হৃদয়ের গল্প। প্রথমে কিছুটা সময় নেন তারা। বাউন্ডারি নিয়ে না ভেবে মন দেন প্রান্ত বদলের দিকে। থিতু হতেই মেলে ধরতে থাকেন নিজেদের। বেরিয়ে আসে বাউন্ডারির শটও। স্পিনারদের ক্রিজের বাইরে বেরিয়ে বাউন্ডারি মেরেছেন ইরফান। ৬ বাউডারি আসে তার ব্যাটে। ২ ছয় আর ২ চার মারা হৃদয়কে দেখা গেছে পুরো নিয়ন্ত্রণ নিয়ে খেলতে। তাদের ব্যাটে অল্প পুঁজি থাকায় প্রতিপক্ষও পড়ে যায় চাপে। ষষ্ঠ উইকেটে দুজনের জুটিতে আসে ১০৫ রান। আমিনুল ইসলাম বিপ্লবকে স্লগ সুইপ করে হৃদয় যখন আউট হয়ে ফেরত যান, তখন দলের জিততে বাকি কেবল ১৩ রান। নাঈম হাসানকে নিয়ে তা নিয়ে কোনো সমস্যাই হয়নি ইরফানের। ব্যাট করতে পটু অফ স্পিনার নাঈমই ছক্কায় শেষ করে দেন খেলা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
মাহমুদউল্লাহ একাদশ: ৪৭.৩ ওভারে ১৯৬ (লিটন ১১, নাঈম ৯, মুমিনুল ০, ইমরুল ৪০, মাহমুদউল্লাহ ৫১, সোহান ১৪, সাব্বির ২২, আমিনুল ৬, আবু হায়দার ১৪*, রকিবুল ১৫, রুবেল ১; তাসকিন ১০-০-৩৭-২, আল আমিন ১০-১-৪০-২, মুকিদুল ৯-০-৪৪-২, নাঈম ১০-১-৩৯-১, রিশাদ ৮-০-৩৩-০, সৌম্য ০.৩-০-১-১)।
শান্ত একাদশ: ৪১.১ ওভারে ১৯৭/৬ (সাইফ ১৭, সৌম্য ২১, শান্ত ২৮, মুশফিক ১, আফিফ ৪, হৃদয় ৫২, শুক্কুর ৫৬*, নাঈম ৭*; রুবেল ৭-১-৩১-০, আবু হায়দার ৫-০-২৯-০, ইবাদত ৯-০-৪৬-৩, মাহমুদউল্লাহ ৭-১-২৭-১, রকিবুল ৮-১-৩৩-১, আমিনুল ৫.১-০-৩১-১)
ফল: শান্ত একাদশ ৪ উইকেটে জয়ী
ম্যান অব দা ম্যাচ: তৌহিদ হৃদয়
ব্যাটসম্যান অব দা ম্যাচ: ইরফান শুক্কুর
বোলার অব দা ম্যাচ: তাসকিন আহমেদ
ফিল্ডার অব দা ম্যাচ: রিশাদ হোসেন।
Comments