পটুয়াখালীতে ট্রিপল মার্ডার: ৩ বছর পর মূল আসামি গ্রেপ্তার

পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার আমখোলা গ্রামের টিপল মার্ডারের ঘটনায় দায়ের করা মামলার মূল আসামি শহিদকে তিন বছর পর গ্রেপ্তার করতে পেরেছে পুলিশ। গত ১০ অক্টোবর ঢাকার সাভার এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পটুয়াখালীর আদালতে হাজির করা হয়। আদালতে পুলিশ আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছে।
পটুয়াখালী
স্টার ডিজিটাল গ্রাফিক্স

পটুয়াখালীর গলাচিপা উপজেলার আমখোলা গ্রামের টিপল মার্ডারের ঘটনায় দায়ের করা মামলার মূল আসামি শহিদকে তিন বছর পর গ্রেপ্তার করতে পেরেছে পুলিশ। গত ১০ অক্টোবর ঢাকার সাভার এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করে পটুয়াখালীর আদালতে হাজির করা হয়। আদালতে পুলিশ আসামিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ১০ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছে।

আজ সোমবার বেলা ১১টায় পটুয়াখালীর পুলিশ সুপার (এসপি) মইনুল হাসান তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে এ বিষয়ে মতবিনিময়কালে এসব তথ্য জানান।

এসপি জানান, ২০১৭ সালের ১ আগস্ট রাতে নিজ বাড়িতে অজ্ঞাতনামা সন্ত্রাসীদের হাতে খুন হন দেলোয়ার মোল্লা (৬৫), তার স্ত্রী পারভীন বেগম (৬৫) ও তাদের পালিত কন্যা কাজলী আক্তার (১৫)। পরদিন সকালে পুলিশ তাদের মরদেহ উদ্ধার করে পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। দীর্ঘদিন এই হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন হচ্ছিল না।

আসামি শহিদ নিহত দেলোয়ার মোল্লার আপন ভাই ইদ্রিস মোল্লার ছেলে। শহিদের দুই স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও তিনি কাজলীকে বিয়ে করতে চেয়েছিলেন। কিন্তু কাজলীর মা রাজি না থাকায় তার চাচা দোলেয়ার মোল্লা, চাচী পারভীন বেগম ও চাচাতো বোন কাজলীকে নৃশংসভাবে কুপিয়ে ও জবাই করে হত্যা করে শহিদ। কাজলীর মাথা দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলা হয়। সে সময় হত্যাকারীরা কাজলীর ব্যবহৃত মোবাইলটিও নিয়ে যায়।

প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের পুলিশের কাছে শহিদ এ হত্যাকাণ্ডে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে জানিয়ে এসপি বলেন, ‘দীর্ঘ অনুসন্ধানের পর মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা গলাচিপা থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. হুমায়ুন কবির নিশ্চিত হন যে, কাজলীর ব্যবহৃত মোবাইলটি সক্রিয় আছে এবং প্রযুক্তির সহায়তায় ৯ অক্টোবর ঢাকার পল্লবী এলাকা থেকে আবু রায়হান নামের একজনকে ওই মোবাইলসহ গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হন। তার বাড়ি বরিশালের হিজলা এলাকায়। জিজ্ঞাসাবাদে রায়হান পুলিশের কাছে স্বীকার করে যে, ২০১৭ সালের আগস্টে তার ফুফুর ননদের স্বামী শহিদের কাছ থেকে সে মোবাইলটি কিনেছিল। এর সূত্র ধরে পুলিশ মূল অভিযুক্ত শহিদকে গ্রেপ্তার করে পটুয়াখালীতে নিয়ে আসে।

‘এ হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে আর কারা সংম্পৃক্ত ছিল, তা অনুসন্ধানে বেরিয়ে আসবে এবং গোটা তদন্ত শেষ করে যথাসম্ভব দ্রুত চার্জশিট দেওয়া হবে’, জানান পুলিশের এই কর্মকর্তা।

গ্রেপ্তারকৃত শহিদ একজন গাড়িচালক এবং হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত করার পর ঢাকার সাভারে নাম পরিবর্তন করে ভাড়া বাসায় অবস্থান করছিল। সেখানে তিনি শহিদ নাম বাদ দিয়ে জাহাঙ্গীর নাম ধারণ করে ছিলেন বলে জানান এসপি।

উল্লেখ্য, ওই হত্য্যাকাণ্ডের পর প্রথমে নিহত দেলোয়ারের ভাই অর্থাৎ শহিদের বাবা ইদ্রিস মোল্লা বাদী হয়ে প্রথম গলাচিপা থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি উল্লেখ করে ঘটনার দুই দিন পর ২০১৭ সালের ৩ আগস্ট একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। পরে নিহত দেলোয়ারের বোন পিয়ারা বেগম বাদী হয়ে গলাচিপা চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ২২ জনের নাম উল্লেখ করে একই ঘটনায় আরও একটি মামলা দায়ে করে।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

8h ago