নোয়াখালীতে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ: দেলোয়ার কারাগারে, সুমনের ৪ দিনের রিমান্ড

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নে চাঞ্চল্যকর গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন ও সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি দেলোয়ার হোসেন দেলুকে পাঁচ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে প্রেরণ, সামছুদ্দিন সুমনের চার দিনের রিমান্ড ও সোহাগ মেম্বারের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।
আদালতের শুনানি শেষে আসামিদের কারাগারে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। ছবি: স্টার

নোয়াখালীর বেগমগঞ্জ উপজেলার একলাশপুর ইউনিয়নে চাঞ্চল্যকর গৃহবধূকে বিবস্ত্র করে নির্যাতন ও সংঘবদ্ধ ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি দেলোয়ার হোসেন দেলুকে পাঁচ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে প্রেরণ, সামছুদ্দিন সুমনের চার দিনের রিমান্ড ও সোহাগ মেম্বারের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত।

আজ মঙ্গলবার সকালে নোয়াখালী চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ৩নং আমলী আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম মাসফিকুল হকের আদালতে দেলোয়ারকে হাজির করা হয়। এসময় তাকে নারী ও শিশু নির্যাতন এবং পর্ণগ্রাফি আইনে দায়ের করা মামালায় অন্তর্ভুক্তি করার জন্য মামলার সাবেক তদন্তকারী কর্মকর্তা বেগমগঞ্জ থানার উপপুলিশ পরিদর্শক মোস্তাক আহাম্মেদ আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত দেলোয়ারকে ওই দুই মামলায় আসামির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার অনুমতি দেন।

এই দুই মামলাসহ দেলোয়ারকে মোট পাঁচটি মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে প্রেরণ করা হয়েছে।

নির্যাতন মামলার ছয় নম্বর আসামি সামছুদ্দিন সুমনকে (৩৯) অধিকতর জিজ্ঞাসাবাদেরে জন্য সাত দিনের রিমান্ড আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পিবিআই নোয়াখালী কার্যালয়ের পরিদর্শক মামুনুর রশিদ পাটোয়ারী। শুনানি শেষে আদালত নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে এবং পর্ণগ্রাফি আইনে দুই দিন করে মোট চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।

নারী নির্যাতনের ঘটনায় সালিশ বৈঠককারি একলাশপুর ইউনিয়নের নয় নম্বর ওয়ার্ড ইউপি সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন সোহাগের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণের নির্দেশ দেন আদালত।

এছাড়া আজ বিকেলে মামলার আসামি আবুল কালামের ছয় দিনের রিমান্ড শেষ হওয়ায় ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার জন্য আদালতে তোলা হবে।

পিবিআই নোয়াখালী কার্যালয়ের ইন্সপেক্টর মামুনুর রশিদ পাটোয়ারী বলেন, ‘আজ সকালে ধর্ষণ মামলার প্রধান আসামি দেলোয়ার এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইন ও পর্ণগ্রাফি আইনে সামছুদ্দিন সুমন এবং মোয়াজ্জেম হোসেন সোহাগকে চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের ৩নং আমলী আদালতে হাজির করা হয়। আদালতের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম দেলোয়ারকে পাঁচটি মামলায় শুনানি শেষে গ্রেপ্তার, নির্যাতন মামলায় সামছুদ্দিন সুমনের চার দিনের রিমান্ড মঞ্জুর ও সোহাগ মেম্বারের জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ প্রদান করেন।’

পুলিশ জানায়, পিবিআইয়ের হাতে কুমিল্লা থেকে গ্রেপ্তার সামছুদ্দিন সুমন নির্যাতনের দিন ভুক্তভোগী নারীর গোপনাঙ্গে একাধিকবার টর্চলাইট ঢুকিয়ে ছিলেন। কালাম সে নির্যাতনের দৃশ্য ভিডিও করেন।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মোয়াজ্জেম হোসেন সোহাগের কাছে নির্যাতনের ঘটনার বর্ণনা দিয়ে ঐ নারী বিচার চাইতে গেলে তিনি ঘটনাটি পুলিশকে না জানিয়ে স্থানীয় পর্যায়ে সালিশ বৈঠক করেন।

সোহাগ মেম্বারের দাবি, এ নির্যাতনের ঘটনা পুলিশকে জানালে দেলোয়ার ও তার লোকজন ভুক্তভোগী নারী ও তাকে গুলি করে হত্যার হুমকি দিয়েছিল। তাই তিনি ভয়ে পুলিশকে না জানিয়ে এলাকায় সালিশ করেন।

চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আলতাফ হোসেন জানান, গ্রেপ্তারকৃত সোহাগ মেম্বারের পক্ষে আদালতে কোনো আইনজীবী না থাকায় সে নিজেই নিজের জামিনের জন্য আবেদন করেন।

এসময় জামিন আবেদনের বিরোধিতা করেন আলতাফ হোসেন এবং জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোল্লা হাবিবুর রসুল মামুন।

ভুক্তভোগী নারীর দায়ের করা মোট তিনটি মামলায় এ পর্যন্ত পুলিশ, ডিবি, র‌্যাব ও পিবিআই ১১ জনকে গ্রেপ্তার করে। তাদের মধ্যে প্রধান আসামি বাদলসহ সাত জন নিজেদের দোষ স্বীকার করে আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেছেন।

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

7h ago