ফাহিম সালেহ হত্যা: নির্দোষ দাবি অভিযুক্ত হাসপিলের

রাইড শেয়ারিং অ্যাপ পাঠাওয়ের সহপ্রতিষ্ঠাতা ফাহিম সালেহকে হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার তার সাবেক ব্যক্তিগত সহকারী টাইরেস ডেভন হাসপিল আদালতে নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেছেন।
pathao-co-founder-fahim-saleh-1.jpg
ফাহিম সালেহ। ছবি: সংগৃহীত

রাইড শেয়ারিং অ্যাপ পাঠাওয়ের সহপ্রতিষ্ঠাতা ফাহিম সালেহকে হত্যার অভিযোগে গ্রেপ্তার তার সাবেক ব্যক্তিগত সহকারী টাইরেস ডেভন হাসপিল আদালতে নিজেকে নির্দোষ বলে দাবি করেছেন।

যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কে নিজের বিলাসবহুল অ্যাপার্টমেন্টে ফাহিমের মরদেহ পাওয়া যায়। তাকে হত্যার অভিযোগে তার সাবেক ব্যক্তিগত সহকারী টাইরেস ডেভন হাসপিলকে (২১) গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

ম্যানহাটন জেলা অ্যাটর্নি অফিসের বরাত দিয়ে সিএনএন জানিয়েছে, হাসপিলের বিরুদ্ধে হত্যা, চুরি, মরদেহ গুমসহ কয়েকটি অভিযোগ আনা হয়েছে। ম্যানহাটন রাজ্য আদালতের বিচারকের সামনে স্কাইপে যুক্ত হয়ে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন হাসপিল।

এ সময় তদন্ত সম্পর্কে অবগত আইন প্রয়োগকারী সংস্থার একজন কর্মকর্তা জানান, সালেহের আর্থিক ও ব্যক্তিগত বিষয় পরিচালনা করতেন হাসপিল। তিনি সালেহের কাছ থেকে কয়েক হাজার ডলার ঋণ নিয়েছিলেন।

ফাহিম সালেহ বাংলাদেশ, নাইজেরিয়া এবং উত্তর আমেরিকাতে সফল প্রযুক্তি ব্যবসা শুরু করেছিলেন।

অভিযোগ করা হয়েছে, পেপাল এবং ইনটুইট স্থানান্তর মাধ্যমে সালেহের কাছ থেকে কয়েক হাজার ডলার চুরি করেন হাসপিল।

আদালতের নথিতে বলা হয়েছে, সালেহের অ্যাপার্টমেন্ট থেকে একটি ইলেকট্রিক করাত, কাঁচি, ছুরি, গ্লাভস এবং একটি মুখোশ পাওয়া গেছে। এর সঙ্গে একটি ব্যাগ পাওয়া গেছে যার ভেতরে সালেহের মাথা এবং শরীরের অন্যান্য অঙ্গ ছিল।

হসপিলের আইনজীবী লিগ্যাল এইড সোসাইটির অ্যাটর্নি নেভিল মিচেল বলেন, ‘আমরা মৃত্যুর পরিস্থিতি এবং তার আর কিছু করার ছিল কি না সেসব বিষয়ে প্রমাণসহ সব কিছু নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছি।’

মিচেল জানিয়েছেন, হাসপিলকে রিকার্স দ্বীপে রাখা হয়েছে।

মামলার শুনানি আগামী ১১ জানুয়ারি পর্যন্ত স্থগিত রাখা হয়েছে।

পুলিশ জানিয়েছে, হত্যার পরের দিন সালেহকে তার অ্যাপার্টমেন্টে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। তার বোন তাকে দেখতে গেলে এ ঘটনা জানতে পারেন এবং পুলিশকে খবর দেন। সালেহের শরীর কেটে টুকরো করা হয়েছিল।

আইন প্রয়োগকারী কর্মকর্তার মতে, সিসিটিভি ক্যামেরায় সালেহকে সর্বশেষ দেখা গেছে কালো পোশাক এবং মাস্ক পরা একজনের সঙ্গে লিফটে উঠতে।

ময়নাতদন্তে দেখা যায়, সালেহের মৃত্যু হয়েছে ঘাড় থেকে এবং ধড়ের মধ্যে পাঁচটি ছুরিকাঘাতের কারণে।

তরুণ প্রযুক্তিবিদদের নিয়ে কাজ করার জন্য সুপরিচিত ছিলেন সালেহ। বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত ফাহিম সালেহের জন্ম সৌদি আরবে। ২০০৯ সালে বেন্টলে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে কম্পিউটার সায়েন্সে স্নাতক ডিগ্রি লাভের পর তিনি ‘প্র্যাংকডায়েল’ নামে একটি অ্যাপ তৈরি করেন। জনপ্রিয় প্র্যাংকডায়েল অ্যাপ পরবর্তীতে প্রায় ১০ মিলিয়ন ডলারের একটি ব্যবসায় পরিণত হয়।

বাংলাদেশে মোটরসাইকেলের রাইড শেয়ারিং সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান পাঠাওয়ের সহপ্রতিষ্ঠাতা ছিলেন তিনি। ২০১৮ সালে পাঠাও ছাড়ার পর নাইজেরিয়ায় ‘গোকাদা’ নামে একই রকম আরেকটি স্টার্টআপের উদ্যোগ নেন তিনি।

অভিযোগে বলা হয়েছে, সালেহ মারা যাওয়ার পর ম্যানহাটনের একটি হার্ডওয়্যারের দোকানের সিসিটিভি ক্যামেরা থেকে বৈদ্যুতিক করাত এবং পরিষ্কার করার বিভিন্ন সামগ্রী কেনার ভিডিও উদ্ধার করা হয়। যা কিনছিলেন হাসপিল। এই সামগ্রীগুলো সালেহের বিচ্ছিন্ন দেহের কাছেই পাওয়া গিয়েছিল।

সালেহকে হত্যার কয়েকদিন পরই ম্যানহাটন থেকে হাসপিলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

Comments

The Daily Star  | English

Floods cause Tk 14,421 crore damage in eastern Bangladesh: CPD study

The study highlighted that the damage represents 1.81 percent of the national budget for fiscal year (FY) 2024-25

1h ago