৯ নম্বরে নেমে শেখ মেহেদীর ঝড়
উইকেটে আহামরি কোন বিষ নেই, বোলাররাও কেউ দুর্ধর্ষ বল করছেন না। তবু ব্যাটসম্যানদের ধুঁকতে থাকা চলছেই। প্রথম ম্যাচে মাত্র ১০৩ রানে গুটিয়ে যাওয়া তামিম একাদশ এদিনও ১২৫ রানে হারিয়ে ফেলেছিল ৮ উইকেট। পরে তাদের বলার মতো রান পাইয়ে দিয়েছেন ৯ নম্বরে নামা শেখ মেহেদী হাসান। তার ঝড়ো ব্যাটিংয়ে টুর্নামেন্টের তৃতীয় দিনে এসে দুশোর দেখা পেয়েছে কোন দল।
বৃহস্পতিবার মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বিসিবি প্রেসিডেন্ট’স কাপে ৫০ ওভার খেলে ৯ উইকেটে ২২১ রান করেছে তামিম একাদশ। যার পুরো কৃতিত্ব নিতে পারেন অলরাউন্ডার শেখ মেহেদী। ৯ নম্বরে ব্যাট করতে গিয়ে ৫৭ বলে ৮২ রান করেছেন তিনি।
কিছুটা মন্থর উইকেটে টস হেরে অনুমিতভাবেই ফিল্ডিং বেছে নেয় শান্ত একাদশ। ব্যাটিংয়ে গিয়ে তানজিদ হাসান তামিম দুই চার মেরেই ফিরে যান। আল-আমিন হোসেনের বলে পুল করতে গিয়ে বল তুলে দেন আকাশে। এনামুল হক বিজয় তামিম ইকবালের সঙ্গে জুটি বেঁধে বদলাতে পারেননি পরিস্থিতি। তাসকিন আহমেদের বলে অবশ্য স্লিপে তার দুর্দান্ত ক্যাচ হাতে জমান সৌম্য সরকার।
এরপর ধুঁকতে থাকা মোহাম্মদ মিঠুন নাঈম হাসানের ভেতরে ঢোকা বলে হয়েছেন বোল্ড। তামিম টিকে গিয়েছিলেন, বড় ইনিংসের ক্ষেত্র তৈরি ছিল। কিন্তু তার ৪৫ বলে ৩৩ রানের ইনিংস শেষ হয়েছে খোঁচা মেরে। নাঈমের বলে স্লিপে ক্যাচ দিয়ে ফিরে যান বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক।
মোসাদ্দেক হোসেনের দশা ছিল আরও কাহিল। ৪৫ বলে খুঁড়িয়ে খুঁড়িয়ে ১২ রান করার পর ফেরেন বাজে শটে। লেগ স্পিনার রিশাদ হোসেনের অনেক বাইরের বলে ক্যাচ দিয়েছেন উইকেটের পেছনে।
যুব বিশ্বকাপ জয়ী দলের শাহাদাত হোসেন দিপু যোগাচ্ছিলেন আশা। তার ব্যাটে ছিল দায়িত্বের ছাপ। কিন্তু ইনিংসের শেষটা তার বড়ই রুগ্নভাবে। আউট হয়েছেন বাজে বলে, যা ছিল ভীষণ দৃষ্টিকটু। রিশাদের লেগ স্টাম্পের অনেক বাইরের একটা শর্ট বলে পুল করতে গিয়ে শর্ট স্কয়ার লেগ পার করতে পারেননি।
তার আগেই ফিরে যান যুব দলে তার অধিনায়ক থাকা আকবর আলি। ৫ বল খেলেছেন তিনি। তাতে ৩ বার আউটের সম্ভাবনা জাগিয়ে মিড উইকেটে ইস্তফা দিয়েছেন ইনিংস।
মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন উইকেট থেকে বেরিয়ে হন বোল্ড। যাদের কাছে ছিল বেশি আশা, তারা সবাই ব্যর্থ হওয়ায় দেড়শোর আগেই গুটিয়ে যাওয়ার অবস্থায় ছিল তামিমের দল।
কিন্তু ৯ নম্বরে নেমে পরিস্থিতি বদলে দেন মেহেদী। তাইজুল ইসলামকে নিয়ে নবম উইকেট জুটিতে আনেন ৯৫ রান। তার ইনিংসে অবশ্য মাঝে ছেদ টেনেছিল বৃষ্টি। ৬৭ মিনিট খেলা বন্ধ থাকার পর এই ডানহাতি ৩১ রান নিয়ে যেন আরও চনমনে হয়ে নামেন। ফিফটি পূরণ করেন ৪৪ বলে। এরপর চার-ছক্কার তাণ্ডবে মুখোমুখি হওয়া শেষ ১৩ বলে তিনি তুলেছেন ৩০ রান। যার মধ্যে সৌম্যর করা ৪৯তম ওভারেই নেন ২৩ রান। পুরো ইনিংসে ৯ চারের সঙ্গে ৩ ছক্কা মেরেছেন তিনি।
তার অমন ব্যাটিংয়ে উইকেটে যে কোন জুজু নেই, তা প্রমাণ হয়ে গেছে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
তামিম একাদশ: ৫০ ওভারে ২২১/৯ (তামিম ৩৩, তানজিদ ৮, বিজয় ১২, মিঠুন ৪, শাহাদাত ৩১, মোসাদ্দেক ১২, আকবর ২, সাইফুদ্দিন ৩, মেহেদী ৮২, তাইজুল ২১*, শরিফুল ১*; তাসকিন ১/৪১, আল-আমিন ৩/৪৩, মুগ্ধ ০/৪৪, নাঈম ২/২৮, সৌম্য ০/৪২, রিশাদ ২/২১ )।
Comments