শরিফুল, মোস্তাফিজের ঝলকে ম্লান মুশফিকের দারুণ সেঞ্চুরি

Mushfiqur Rahim
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

দুই দিনের দুটি প্রস্তুতি ম্যাচে রান পাননি। রান পাননি প্রেসিডেন্ট’স কাপের প্রথম ম্যাচেও,  মাত্র ১ রানে স্টাম্পে টেনে বোল্ড হয়ে গিয়েছিলেন সেদিন। করোনাভাইরাসের কারণে লম্বা বিরতির পর ক্রিকেটে ফিরে অবশেষে জড়তা কাটিয়েছেন মুশফিকুর রহিম। পেয়েছেন রানের দেখা। রান তাড়ায় দলের বিপর্যয়ে দারুণ সেঞ্চুরি এসেছে তার ব্যাটে। তবে তরুণ শরিফুল ইসলাম আর মোস্তাফিজুর রহমানের ঝলকে শেষ পর্যন্ত ম্যাচ জিতেছে তামিম একাদশ।

বৃহস্পতিবার মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে ২২২ রান তাড়ায়  ১৭৯ রানে  থেমেছে শান্ত একাদশ। দ্বিতীয় ম্যাচে এসে তাই ৪২ রানের জয়ে প্রথম পয়েন্ট নিল তামিমের দল। এতে বিসিবি প্রেসিডেন্ট'স কাপে তিন দলই দুই ম্যাচ খেলে সমান দুই পয়েন্ট করে নিয়েছে। 

নবম ব্যাটসম্যান হিসেবে মুশফিক আউট হওয়ার আগ পর্যন্ত অবশ্য জয়ের ভালো সম্ভাবনা ছিল শান্তদের। ১০৯ বলে ৯ চার, ১ ছক্কায় ১০৩ রান করে মোস্তফিজের শিকার হয়ে ফেরেন মুশফিক।

দলের জয়ে ১০ ওভার বল করে ৩৭ রানে ৪ উইকেট নেন যুব বিশ্বকাপজয়ী দলের বাঁহাতি পেসার শরিফুল, অভিজ্ঞ  মোস্তাফিজ ৮ ওভার বল করে মাত্র ১৫ রান দিয়ে তুলেছেন ৩ উইকেট। 

shariful islam
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

২২২ রান তাড়ায় শুরুটা খুব বাজে হয় শান্তদের। দুই ওপেনার সাইফ হাসান আর সৌম্য সরকার ছিলেন আড়ষ্ট। অস্বস্তিতে ভোগে সাইফ ২১ বলে ৭ রান করে সহজ ক্যাচ তুলে দেন। অধিনায়ক নাজমুল হোসেন শান্ত মোস্তাফিজের বলে বারবার পরাস্ত হয়ে তার হাতেই সহজ ক্যাচ দিয়ে ফেরেন মাত্র ১ রান করে।

সৌম্য ছিলেন সবচেয়ে আড়ষ্ট। পুরোটা সময় হাঁসফাঁস করেছেন তিনি। সিঙ্গেল বের করতে পারেননি, বাউন্ডারি আসছিল না। অস্থিরতা ক্রমশ বাড়ছিল। তা থেকে বেরুতে পারেননি। মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের দারুণ ইয়র্কারে ৪৭ বল খেলে মাত্র ৯ রান করে এলবিডব্লিউ হয়ে ফিরে যান।

Mustafizur Rahman
ছবি: ফিরোজ আহমেদ

এরপর ক্রিজে আসা আফিফ হোসেন মুশফিকের সঙ্গে জুটি বেধে দলকে এগিয়ে নিচ্ছিলেন। কিন্তু শরিফুল এসেই মোড় ঘুরিয়ে দেন। তার ভেতরে ঢোকা দারুণ এক ডেলিভারিতে কাবু হয়ে এলবিডব্লিউ হন ১৫ রান করা আফিফ। ১০ রান পরই তৌহিদ হৃদয় স্টাম্প খোয়ান শরিফুলের আরেকটি ভেতরে ঢোকা বলে।

জোড়া আঘাতে বিপর্যস্ত শান্ত একাদশ ঘুরে দাড়ায় মুশফিক-ইরফান শুক্কুরের জুটিতে।  ডান-বাম সমন্বয়ে জয়ের আশা বাড়াচ্ছিলেন তারা। জুটিতে ৬০ রান যোগ করার পর ইরফান ভুল বোঝাবুঝিতে রান আউট হয়ে যান। এরপর বাকিটা একাই টেনে নিয়েছেন মুশফিক। কাভার ড্রাইভ, পুলের মতো চেনা শটগুলো তো মেরেছেনই। জড়তা কাটিয়ে স্কুপও করতে দেখা গেছে তাকে।

লেট অর্ডারে টুকটাক ব্যাট করতে জানা রিশাদ হোসেন , নাঈম হাসানরা মুশফিককে সঙ্গ দিতে পারেননি। দুজনকেই ছেঁটেছেন শরিফুল। পরে তাসকিনকে এক পাশে রেখেই চালিয়ে যাচ্ছিলেন মুশফিক। সেঞ্চুরি তুলে নিয়ে অসম্ভবকে সম্ভব করার আভাস দিচ্ছিলেন। কিন্তু মোস্তাফিজের বলে ইম্প্রোভাইজ করতে গিয়ে থেমে যেতে হয় তাকে। কার্যত ম্যাচও তখনই শেষ।

এর আগে ৯ নম্বরে নামা শেখ মেহেদী হাসানের ঝড়ো ব্যাটিংয়ে চ্যালেঞ্জিং স্কোর করেছিল তামিম একাদশ। প্রথম ইনিংসের প্রতিবেদন- ৯ নম্বরে নেমে শেখ মেহেদীর ঝড়

 

সংক্ষিপ্ত স্কোর:

তামিম একাদশ: ৫০ ওভারে ২২১/৯ (তামিম ৩৩, তানজিদ ৮, বিজয় ১২, মিঠুন ৪, শাহাদাত ৩১, মোসাদ্দেক ১২, আকবর ২, সাইফুদ্দিন ৩, মেহেদী ৮২, তাইজুল ২১*, শরিফুল ১*; তাসকিন ১/৪১, আল-আমিন ৩/৪৩, মুগ্ধ ০/৪৪, নাঈম ২/২৮, সৌম্য ০/৪২, রিশাদ ২/২১ )।

শান্ত একাদশ:  ৪৫.৩ ওভারে ১৭৯  (সাইফ ৭, সৌম্য ৯, শান্ত ১, মুশফিক ১০৩ , আফিফ ১৫, হৃদয় ৪, ইরফান ২৪, নাঈম ০, রিশাদ ০ , তাসকিন ৬, মুগ্ধ ১*; সাইফ ২/৪১, মোস্তাফিজ ৩/১৫, মেহেদী ০/৩৭, শরিফুল ৪/৩৭, তাইজুল ০/৪৬)

ফল: তামিম একাদশ ৪২ রানে জয়ী।

ম্যান অব দ্য ম্যাচ: শেখ মেহেদী হাসান

সেরা ব্যাটসম্যান: মুশফিকুর রহিম ।

সেরা বোলার: মোস্তাফিজুর রহমান।

সেরা ফিল্ডার: মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত।

 

 

 

Comments

The Daily Star  | English

Israel will take all of Gaza: PM

Strikes kill 52 more; WHO chief says 2 million 'starving'

4h ago