বৈষম্য আমাদের সমাজের বৃহত্তম একটি সমস্যা: মেসি

Messi
ছবি: সংগৃহীত

সমাজে বিদ্যমান বৈষম্য নিয়ে আলোচনা-সমালোচনার অন্ত নেই। বিশেষজ্ঞরা বর্তমান সময়ের অনেক সমস্যার জন্য বৈষম্যকেই দায়ী করছেন; বিশ্বজুড়ে চলমান করোনাভাইরাস পরিস্থিতির কারণে যা আরও প্রকট রূপ ধারণা করেছে। তাদের সঙ্গে সুর মিলিয়েছেন সময়ের অন্যতম সেরা ফুটবল তারকা লিওনেল মেসি। সামাজিক বৈষম্য দূরীকরণে সবাইকে একত্রিত হয়ে কাজ করার আহ্বানও জানিয়েছেন রেকর্ড ছয়বারের ব্যালন ডি’অর জয়ী এ তারকা।

সম্প্রতি আর্জেন্টাইন ম্যাগাজিন লা গাজেত্তা পদেরোজাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে মেসি বলেছেন, ‘এই মহামারিতে আমাদের অবশ্যই পানি, খাদ্য ও বিদ্যুতের মতো মৌলিক প্রয়োজনীয় বিষয়গুলোর চাহিদা পূরণ করতে হবে... বৈষম্য আমাদের সমাজের বৃহত্তম একটি সমস্যা এবং এটি সমাধানের জন্য আমাদের সকলের একত্রিত হয়ে কাজ করা উচিত।’

গত সপ্তাহেই দাতব্য সংস্থা অক্সফামের একটি প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, বিশ্বের অর্ধেক গরীব মানুষের সম্পদের সমপরিমাণ সম্পদ কুক্ষিগত রয়েছে মাত্র ২৬ জন ধনী ব্যক্তির হাতে। তাদের সম্পদের পরিমাণ ১ লাখ ৪০ হাজার কোটি ডলার, যা ৩৮০ কোটি মানুষের সম্পদের সমান। আর ধনীদের সম্পদ যে স্থির অবস্থায় আছে এমনটা নয়। গত বছর প্রতিদিন ২৫০ কোটি ডলার করে বেড়েছে।

সেখানে উদাহরণ হিসেবে দেখানো হয়েছে অর্থ-বাণিজ্য বিষয়ক সাময়িকী ফোর্বসের তালিকায় থাকা বিশ্বের শীর্ষ ধনী অ্যামাজনের সিইও জেফ বেজোসের সম্পদের পরিমাণকে। তার সম্পদ গত বছর ১১ হাজার ২০০ কোটি ডলার বেড়েছে, যার ১ শতাংশ ইথিওপিয়ার মতো একটি দেশের পুরো স্বাস্থ্য বাজেটের সমান।

Messi
ছবি: সংগৃহীত

প্রায় একই চিত্র বাংলাদেশের। গত অগাস্টে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনৈতিক বিভাগ (জিইডি) একটি প্রতিবেদন জানিয়েছিল, করোনাকালে দেশের দরিদ্রতার হার বেড়েছে ২৯.৪ শতাংশ। তাতে দেড় কোটি পরিবার আরও গরীব হয়েছে।

সবমিলিয়ে সামাজিক বৈষম্য গোটা বিশ্বে ধারণ করছে বড় আকার। ধনীরা দিন দিন আরও ধনী হচ্ছে। অন্যদিকে, গরীবরা হচ্ছে আর বেশি গরীব। কিন্তু সমাজের উঁচু স্তরে উঠে নিজেদের দায়িত্বটা সে অর্থে ঠিকভাবে পালন করছে না ধনীরা। করোনাভাইরাসের মহামারির সময়েও বদলায়নি চিত্র, যা কষ্ট দিয়েছে মেসিকে।

তবে সব ধনীরই যে নিজেদের অর্থ-সম্পদ বাড়ানোর দিকে মনোযোগ রয়েছে, তা-ও নয়। অনেকেই করোনাভাইরাস সংকটের এ সময়ে সাধারণ মানুষের সাহায্যার্থে এগিয়ে এসেছেন। তাদের সম্মান জানিয়েছেন মেসি। তাদের জন্য গর্বও অনুভব করছেন তিনি। নিজ দেশের উদাহরণ টেনে বার্সেলোনা অধিনায়ক বলেছেন, ‘আর্জেন্টিনায় এখন ডাইনিং রুম এবং পিকনিক অঞ্চলে লোকেরা যেভাবে জড়িত হচ্ছে এবং সহযোগিতা করছে, তা দেখে আমাদের প্রচুর গর্ব হয়। বিশেষত আমরা যখন কঠিন সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি।’

উল্লেখ্য, লিও মেসি ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে নানাভাবে সাধারণ মানুষকে অর্থ সাহায্য করে থাকেন মেসি। করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসায় গত মার্চেও আর্থিক সহায়তা করেছেন তিনি। বার্সেলোনায় একটি হাসাপাতালে ১০ লাখ ইউরো (বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় ৯ কোটি ২১ লাখ টাকা) দান করেছেন তিনি। এরপর করোনা পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য ৫০টি ভেন্টিলেটরও দিয়েছেন মেসি, যার মধ্যে ৩২টি দেওয়া হয়েছে রোজারিও হাসপাতালে।

Comments

The Daily Star  | English

CA approves draft Anti-Terrorism Ordinance

Draft includes provision to ban an entity's activities, restrict terrorism-related content online

23m ago