ফেনীতে ধর্ষণবিরোধী লংমার্চে ‘পুলিশ-এমপি সমর্থকদের’ হামলার অভিযোগ

ধর্ষণের বিরুদ্ধে নয় দফা দাবিতে ঢাকা থেকে নোয়াখালীর উদ্দেশে লংমার্চকারীদের ওপর ফেনীতে পুলিশ ও স্থানীয় সংসদ সদস্যের সমর্থকরা যৌথভাবে হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ সংক্রান্ত ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ফেনী শহীদ মিনার এলাকায় সমাবেশে হামলার ঘটনা ঘটে।
Feni Attack.jpg
ধর্ষণবিরোধী লংমার্চে ছাত্রলীগ, যুবলীগ ও পুলিশ যৌথভাবে হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের। ছবি: সংগৃহীত

ধর্ষণের বিরুদ্ধে নয় দফা দাবিতে ঢাকা থেকে নোয়াখালীর উদ্দেশে লংমার্চকারীদের ওপর ফেনীতে পুলিশ ও স্থানীয় সংসদ সদস্যের সমর্থকরা যৌথভাবে হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ সংক্রান্ত ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। আজ শনিবার সকাল সাড়ে ১১টার দিকে ফেনী শহীদ মিনার এলাকায় সমাবেশে হামলার ঘটনা ঘটে।

হামলায় আহত ১০ জনকে বেগমগঞ্জের চৌমুহনীতে লাইফ কেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে। হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিৎসা কর্মকর্তা ডা. রাকিব উদ্দিন বলেন, ‘১০ জনের মাথায় আঘাত আছে, ফ্র্যাকচার আছে, কারো কারো শরীরে কাঁচের টুকরা ঢুকে গেছে।’

আহতরা হলেন— রিয়াজ, মো. ইব্রাহিম, রাবেয়া, রফিক, রিমি, তানভীর আলম, মাহীন হোসন, সীমা আক্তার, জান্নাতুল ফাতেমা অনন্যা ও মাশরাফি।

ছাত্র ইউনিয়ন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শাখার কালচারাল সেক্রেটারি ঋদ্ধ অনিন্দ্য দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আহত ১০ জনের মধ্যে তিন জনকে সদর হাসপাতালে নেওয়া হচ্ছে। একজনের এখনো জ্ঞান ফেরেনি। এ ছাড়া, প্রায় ৩০ জন প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।’

44.jpg
হামলায় আহত একজনকে ঘিরে আন্দোলনকারীদের কান্না। ছবি: সংগৃহীত

তিনি আরও বলেন, ‘সমাবেশ চলাকালে আমাদের সহযোদ্ধারা দেয়াল চিত্র আঁকছিলেন। সে সময় পুলিশ অতর্কিত হামলা চালায়। এতে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি তৈরি হয়। এরপর যখন আমরা বেগমগঞ্জে যাব বলে মিছিল নিয়ে বাসস্ট্যান্ডের দিকে রওনা হই তখন কয়েকজন আমাদের মিছিলে ভেতরে ঢুকে হামলা চালায়। তারা আমাদের বাস ভাঙচুর করে। আমাদের ১০ সহযোদ্ধা ছাড়াও একজন গাড়ি চালক আহত হয়েছেন। তারা বলে সরকার বিরোধী স্লোগান দেওয়া যাবে না।’

এ বিষয়ে ফেনীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাইনুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘ওই রকম হামলা না। সমাবেশের শেষ পর্যায়ে সামান্য হাতাহাতি হয়েছে। সমাবেশে স্থানীয় সংসদ সদস্যের তিনটি ছবি ছিল। যেখানে তাকে কটূক্তি করা হয়েছে। এর প্রতিবাদে সংসদ সদস্যের সমর্থকরা মিছিল করে। সে সময় লংমার্চে অংশগ্রহণকারীরা তাদের দিকে তেড়ে যায়। এতে সামান্য হাতাহাতির ঘটনা ঘটে।’

বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশনের কেন্দ্রীয় সভাপতি গোলাম মোস্তাফা অভিযোগ করে বলেন, ‘পুলিশ, গোয়েন্দা পুলিশ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগ লাঠি, ইট-পাটকেল নিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে।’

এ রকম একটি ছবি এবং ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে, যেখানে পুলিশকে মারমুখী দেখা যাচ্ছে। পুলিশ-ছাত্রলীগ সম্মিলিতভাবে হামলা করেছে বলে যে ছবি দেখিয়ে অভিযোগ করা হচ্ছে সে বিষয়ে ফেনীর অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মাইনুল ইসলাম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘লংমার্চে অংশগ্রহণকারী স্থানীয় সংসদ সদস্যকে নিয়ে কটূক্তি করলে তার সমর্থকরা লাঠি হাতে মারমুখী অবস্থান নেয়। আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশও অবস্থান নেয়।’

ছবির প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘পুলিশ সংসদ সদস্যের সমর্থকদের সঙ্গে করে নিয়ে গিয়ে লংমার্চে অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে কথা বলে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে।’

এ বিষয়ে ছাত্রলীগ বা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

বাম দলের নেতাকর্মী, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্য, সাধারণ শিক্ষার্থীসহ প্রায় সাড়ে চার শ জন নয় দফা দাবিতে শাহবাগ থেকে লংমার্চ শুরু করে।

Comments

The Daily Star  | English
Electricity price hike

40MW electricity import from Nepal gets govt nod

The government approved the purchase of 40 megawatts of electricity from Nepal using the power grid of India.

1h ago