৪ মিনিটের মাথায় আজারবাইজান-আর্মেনিয়ার যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ

বিতর্কিত নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চলে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার মাত্র কয়েক মিনিটের মাথায় আজারবাইজান তা লঙ্ঘন করেছে বলে অভিযোগ করেছে আর্মেনিয়া।
স্টেপেনকার্টের ধ্বংসস্তুপ পরিষ্কার করছেন স্থানীয় এক ব্যক্তি। ছবি: রয়টার্স

বিতর্কিত নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চলে যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার মাত্র কয়েক মিনিটের মাথায় আজারবাইজান তা লঙ্ঘন করেছে বলে অভিযোগ করেছে আর্মেনিয়া।

বিবিসি জানায়, স্থানীয় সময় শনিবার মধ্যরাতে যুদ্ধবিরতি কার্যকর করার বিষয়ে দুই পক্ষের সমঝোতা হয়েছিল।

আর্মেনিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানান, যুদ্ধবিরতি কার্যকর হওয়ার মাত্র চার মিনিটের মাথায় আর্টিলারি শেল ও রকেট ছুড়ে তা লঙ্ঘন করেছে আজারবাইজান।

তবে, আজারবাইজান এখনো এই প্রসঙ্গে কোনো মন্তব্য করেনি।

গত সপ্তাহের শেষে কয়েকটি চুক্তিতে সম্মতি আসার পরে যুদ্ধবিরতি চুক্তিটিও স্বাক্ষরিত হয়েছিল। তবে, এর পরেও সংঘর্ষ হয়েছে।

নাগোরনো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের পুরনো সংঘাত গত ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে নতুন করে আবার শুরু হয়। গত কয়েক দিনের সংঘাতে কমপক্ষে তিন শ মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

এই সংঘাতে নিজ দেশের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির কথা স্বীকার করেছে আর্মেনিয়া। টেলিভিশনে সম্প্রচারিত এক ভাষণে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নিকোল পাশিনিয়ান বলেন, ‘আর্মেনিয়ার অনেকেই হতাহত হয়েছেন। তবে, এখনো সেনাবাহিনী কারাবাখের নিয়ন্ত্রণ ধরে রাখতে সমর্থ।’

এদিকে আর্মেনিয়া তাদের গ্যাস ও তেলের পাইপ লাইনে আক্রমণ করেছে বলে অভিযোগ করেছেন আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ। তুরস্কের প্রচারমাধ্যম হেবারতুর্ককে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আর্মেনিয়া আমাদের পাইপলাইন আক্রমণ করে সেগুলোর নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার চেষ্টা করছে। তারা যদি এ প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখে, তাহলে এর পরিণতি হবে ভয়াবহ।’

শনিবার আর্মেনিয়ার ছোড়া গোলার আঘাতে আজারবাইজানের অন্তত ১২ জন বেসামরিক নাগরিক নিহত হয়েছেন বলে জানা যায়।

এরপর দুই দেশই মানবিক যুদ্ধবিরতিতে রাজি হলেও, এ বিষয়ে তেমন বিস্তারিত কিছু জানানো হয়নি।

আর্মেনিয়ার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র আন্না নাঘদালিয়ান এক টুইটে জানান, দেশটি যুদ্ধাঞ্চলে ‘যুদ্ধবিরতি ও উত্তেজনা’ প্রশমনের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে।

এদিকে, রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ যিনি এর আগের সপ্তাহে হওয়া চুক্তির মধ্যস্থতা করেছিলেন, তিনি দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলেন। দুই দেশেরই আগের চুক্তিটির শর্ত ‘কঠোরভাবে মেনে চলা’ উচিত বলে জানান তিনি।

উল্লেখ্য, কয়েক দশকের বিরোধে ১৯৮০’র দশকের শেষদিকে কারাবাখ অঞ্চলে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে সংঘাত শুরু হয়। ১৯৯১ সালে সাবেক সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের মুহূর্তে ওই সংঘর্ষ চূড়ান্ত আকার ধারণ করে। ১৯৯৪ সালে দুই পক্ষের মধ্যে যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার আগ পর্যন্ত প্রায় ৩০ হাজার মানুষ সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন।

এখনো পর্যন্ত কোনো দেশ কারাবাখের স্বাধীনতাকে স্বীকৃতি দেয়নি, এমনকি আর্মেনিয়াও নয়। আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এটিকে এখনো আজারবাইজানের অংশ হিসেবে বিবেচনা করে।

Comments

The Daily Star  | English
Default by top three borrowers to to hit banks

Forex reserve shrinks by $120m in a week

Bangladesh's foreign exchange reserve has fallen by nearly $120 million in the span of a week, central bank data showed.

29m ago