সিলেটে এসআই আকবরকে গ্রেপ্তারে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম
সিলেটের বন্দরবাজার পুলিশ ফাঁড়িতে পুলিশের হেফাজতে রায়হান আহমদ নিহত হওয়ার ঘটনায় অভিযুক্ত উপ পরিদর্শক আকবার হোসেন ভূঁইয়াকে গ্রেপ্তারে নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে ৭২ ঘণ্টার আল্টিমেটাম দেওয়া হয়েছে।
আজ দুপুরে নগরীর আখালিয়া নেহারিপাড়া এলাকায় সংবাদ সম্মেলন করে রায়হানে মা সালমা বেগম হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের গ্রেপ্তার, প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে উপযুক্ত ক্ষতিপূরণ, সিলেট মহানগর পুলিশের (সিএমপি) পূর্ণাঙ্গ বক্তব্য ও বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবি করে এই আল্টিমেটাম দেন।
তিনি বলেন, এসআই আকবরসহ হত্যাকাণ্ডে জড়িত সকল পুলিশ সদস্যকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে গ্রেপ্তার করা না হলে বৃহত্তর আখালিয়াবাসীসহ নগরবাসী হরতাল, সড়ক অবরোধসহ কঠোর কর্মসূচি শুরু করবে।
গত ১১ অক্টোবর ভোররাতে সিলেটের বন্দরবাজার ফাঁড়িতে ধরে আনার পর রায়হান আহমেদ (৩৩) মারা যান। তার মুক্তির জন্য পুলিশ টাকা দাবি করেছিল বলে অভিযোগ উঠেছে। রায়হান নগরীর নেহারিপাড়া এলাকার বাসিন্দা।
প্রাথমিকভাবে স্থানীয় কয়েকটি গণমাধ্যমে নগরীর কাস্টঘর এলাকায় ছিনতাই করতে গিয়ে গণপিটুনিতে ওই যুবকের মৃত্যু হয়েছে বলে জানানো হলেও পরে পুলিশ বক্তব্য পরিবর্তন করে। এ ঘটনায় রোববার রাতে সিলেট কোতোয়ালি থানায় অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা করেন নিহতের স্ত্রী তাহমিনা আক্তার তান্বী।
মামলায় উল্লেখ করা হয়, সেদিন বিকেলে ডাক্তারের চেম্বারের কম্পাউন্ডার হিসেবে কর্মরত তার স্বামী কাজে বের হয়ে যাওয়ার পর রাত ১০টা থেকে তার মোবাইল নম্বর বন্ধ পাওয়া যায়। ভোররাত ৪টা ৩৩ মিনিটে একটি অপরিচিত নম্বর থেকে রায়হান তার মায়ের সঙ্গে কথা বলেন।
রায়হান কাঁদতে কাঁদতে জানান, তাকে বন্দরবাজার ফাঁড়িতে আটকে রেখেছে এবং টাকা না দিলে ছাড়বে না। এরপরই ভোর সাড়ে ৫টায় চার হাজার টাকা নিয়ে রায়হানের চাচা হাবিব উল্লাহ ফাঁড়িতে গেলে কর্তব্যরত কর্মকর্তারা তাকে সকাল ১০টায় ১০ হাজার টাকা নিয়ে যেতে বলেন।
সকাল ১০টায় টাকা নিয়ে গেলে তাকে ওসমানী মেডিকেল কলেজে যেতে বলা হয়। হাসপাতালে গিয়ে তিনি জানতে পারেন যে সকাল ৭টা ৪০ মিনিটে রায়হানের মৃত্যু হয়েছে। তাকে বলা হয়, ছিনতাই করতে গিয়ে গণপিটুনিতে রায়হানের মৃত্যু হয়েছে।
মামলায় রায়হানের স্ত্রী উল্লেখ করেন, বন্দরবাজার ফাঁড়িতে পুলিশের নির্যাতনেই রায়হান মারা গেছে।
পরে এ ঘটনায় জড়িত থাকার প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে ফাঁড়ির ইনচার্জসহ পাঁচ পুলিশ সদস্যকে সাময়িক বরখাস্ত এবং আরও তিন জনকে প্রত্যাহার করা হয়।
মঙ্গলবার পুলিশ সদরদপ্তরের নির্দেশে মামলাটির তদন্তভার গ্রহণ করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন।
Comments