জীবিত শিশুকে মৃত ঘোষণা সম্পূর্ণভাবে আমাদের ব্যর্থতা: ঢামেক পরিচালক
জীবিত এক নবজাতককে হাসপাতাল মৃত ঘোষণার ঘটনার ব্যাপারে ঢাকা মেডিকেল কলেজ কর্তৃপক্ষ বলেছে যে এটি সম্পূর্ণভাবে তাদের ব্যর্থতার কারণে হয়েছে। মৃত ঘোষণার পর গত শুক্রবার দাফনের আগ মুহূর্তে শিশুটি জীবিত থাকার কথা জানা যায়।
আজ মঙ্গলবার ঢামেক পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এ কে এম নাসির উদ্দিন বলেন, ‘এ ব্যর্থতা পুরোপুরি আমাদের প্রতিষ্ঠানের। আমাদের চিকিত্সক ও নার্সদের বাচ্চাটাকে রক্ষা করা উচিত ছিল। আমরা এটা মিস করে গেছি।’
এ ঘটনায় ব্যর্থতার কথা স্বীকার করলেও, চিকিৎসক ও নার্সদের কর্তব্যে কোনও অবহেলা ছিল না বলে দাবি করেন তিনি।
এ ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটি প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পর, তার কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এসব বলেন।
তিনি অবশ্য বলেন, ‘গুরুতর অবস্থায় হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর বাচ্চা ও তার মাকে বাঁচানোর জন্য কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সরা চেষ্টা করে। পরে যা ঘটেছিল তা অনিচ্ছাকৃত।’
‘দীর্ঘক্ষণ শিশুটির বেঁচে থাকার কোনো লক্ষণই ছিল না। শিশুটির বেঁচে থাকা অস্বাভাবিক এবং বিরল ঘটনা,’ যোগ করেন তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে নাসির উদ্দিন বলেন, ‘শিশুটি বেঁচে ছিল। সে ফিরে এসেছে আমাদের মাঝে। এখনও সে বেঁচে আছে। এখানেই ব্যর্থতা, কোনো সন্দেহ নেই। তবে, অবহেলার কারণে এটি ঘটেনি বলে তদন্ত কমিটি মনে করে। তারা শিশুটিকে ক্লিনিক্যালি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করতে ব্যর্থ হয়েছে।’
পরিচালক বলেন, এর জন্য দায়ী ব্যক্তিদের দায়বদ্ধতা অনুযায়ী শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। তবে, এ সম্পর্কে তিনি বিস্তারিত কিছু উল্লেখ করেননি।
ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাসির বলেন, তদন্ত কমিটি ঘটনার পুনরাবৃত্তি এড়াতে কিছু সুপারিশ করেছে এবং সেসব সুপারিশ মেনে চলা হবে।
ঢামেক নিওনেটোলজি বিভাগের প্রধান ও তদন্ত কমিটির প্রধান ডা. মনীষা ব্যানার্জি জানান, শিশুর অবস্থা এখনও সংকটাপন্ন।
তিনি বলেন, ‘শিশুটি বেঁচে আছে, এটা অলৌকিক। বেঁচে গেলে, আরও অলৌকিক ব্যাপার হবে। আমরা আমাদের সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি।’
গত শুক্রবার ইয়াছিনের সাড়ে ছয় মাসের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী শাহিনুর আক্তার ভোর পৌনে ৫টার দিকে সন্তান প্রসবের পর, ঢামেক হাসপাতালের এক চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত ঘোষণা করেন।
হাসপাতালের কর্মীরা শিশুটিকে একটি পরিত্যক্ত বাক্সে রেখে দেয় এবং ইয়াছিনকে আজিমপুর কবরস্থানে নিয়ে যেতে বলেন।
সেখানে কবর দিতে না পেরে শিশুটিকে রায়েরবাজার কবরস্থানে নিয়ে যাওয়া হয়। তবে, কবর দেওয়ার কয়েক মিনিট আগে ইয়াছিন বুঝতে পারেন যে শিশুটি বেঁচে রয়েছে। তিনি পরে শিশুটিকে হাসপাতালে ফিরিয়ে নিয়ে যান এবং শিশুটির নাম রাখেন মরিয়ম।
Comments