তাসকিনদের ঝলকে রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ের পর তামিমদের বিদায়

ছবি: ফিরোজ আহমেদ

লক্ষ্যটা ছিল বেশ সহজই। রানখরা কাটিয়ে ছন্দে ফিরেছিলেন অধিনায়ক তামিম ইকবালও। কিন্তু তাসকিন আহমেদ, আল-আমিন হোসেনদের ঝলকের পর শেষ দিকের নাটকীয়তায় ম্যাচ হেরেছে তামিম একাদশ। বিদায় নিয়েছে টুর্নামেন্ট থেকেও। 

বিসিবি প্রেসিডেন্ট’স কাপে তামিম একাদশকে ডি/এল মেথডে ৭ রানে হারিয়েছে শান্ত একাদশ। বৃষ্টির কারণে ৪১ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে ১৬৫ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল শান্তরা। ডি/এল মেথডে তাই জিততে  হলে ১৬৪ করলেই চলত তামিমদের। কিন্তু সহজ এই সমীকরণও মেলাতে পারেনি তারা। টুর্নামেন্টে চার ম্যাচে মাত্র এক জয়ে বিদায় নেয় তামিমদের দল। ২৩ অক্টোবর ফাইনালে শান্ত একাদশ পাচ্ছে মাহমুদউল্লাহ একাদশকে।

শেষ তিন ওভারে দরকার ছিল ২৭ রান। হাতে ৪ উইকেট। মোহাম্মদ মিঠুন তাসকিন আহমেদের বলে ছক্কা মেরে বাড়িয়েছিলেন আশা। কিন্তু ওই ওভারেই তাসকিন তুলে নেন আকবর আলিকে। এর আগে দারুণ বল করে তিনি তুলে নিয়েছিলেন আরও তিন উইকেট। অপর দিকে আল-আমিন হোসেন দারুণ ইকোনমিতে রান আটকে রাখার কাজটা করেছেন ঠিকঠাক। পরে মোহাম্মদ মিঠুনকেও আউট করেছেন তিনি।

শেষ ওভারে জিততে হলে ১৬ রান করতে হতো তামিমদের দলকে। সৌম্য সরকারের হাতে বল তুলে দেন অধিনায়ক শান্ত। তামিমদের একমাত্র ভরসা তখন সাইফুদ্দিন। বোলিংয়ে ৫ উইকেট নেওয়া এই অলরাউন্ডার ব্যাটিংয়ে হিরো হতে পারেননি। সৌম্যের প্রথম বল ডট হওয়ার পর পরের বলে দুই রান নিতে গিয়ে রান আউট হন শরিফুল ইসলাম। পরের বলে লঙ অনের উপর দিয়ে ছক্কা মেরেছিলেন সাইফুদ্দিন। কিন্তু চতুর্থ বলে আর পারেননি। লঙ অনেই তার সহজ ক্যাচটি নিয়েছেন রিশাদ হোসেন।

৪১ ওভারে ১৬৪ রানের লক্ষ্য তাড়ায় তাড়ায় বেশ মন্থর শুরু করেন তামিম ইকবাল। ঝুঁকিহীনভাবে এগুনোর প্রচেষ্টায় দেখা যায় তাকে। যদিও তার সঙ্গী এনামুল হক বিজয় হাঁটেননি সে পথে। আরও একবার ব্যর্থ এই ওপেনার মাত্র ৭ রান করে সহজ ক্যাচ দেন শর্ট লেগে।

১০ রানে প্রথম উইকেট হারানোর পর বেশ লম্বা এক জুটি পায় তামিমের দল। অধিনায়ক নিজে ক্রিজ আঁকড়ে থেকে মাইদুল ইসলাম অঙ্কনকে নিয়ে এগুতে থাকেন। ৯৪ বলে ৬৮ রানের এক জুটি পান তারা। টুর্নামেন্টে বেশ জড়সড়ো থাকা তামিমকে এদিন দেখা গেছে বেশ সাবলীল। স্ট্রাইট ড্রাইভে একাধিক বাউন্ডারি বের করেছেন, তবে ঝুঁকি নিয়ে উড়ন্ত শটে যাননি। প্রান্ত বদল করতে গিয়ে ভুল বোঝাবুঝিতে অঙ্কনের আউটে ভাঙ্গে এই জুটি।

ধীরলয়ে খেলে তামিম তুলে নেন ফিফটি। মনে হচ্ছিল কোন তাড়াহুড়ো না করে দলকে তীরে ভেড়ানোর কাজটা করবেন তিনি। কিন্তু আবু জায়েদ রাহির অনেক অনেক বাইরের বল তাড়া করে ক্যাচ দেন উইকেটের পেছনে। তামিমের ৮৫ বলে ৫৭ রানের ইনিংস শেষ হওয়ার পর কিছুটা চিন্তায় পড়ে যায় তার দল। এলোমেলো হতে থাকে ম্যাচ বের করার পরিকল্পনা। 

কারণ খানিক পরই ইয়াসির আলি রাব্বিও স্লগ সুইপ করতে গিয়ে নাসুম আহমেদের বলে হয়েছেন বোল্ড। তাসকিন নতুন স্পেলে ফিরে মোসাদ্দেক হোসেনকে উইকেটের পেছনে ক্যাচ বানালে সম্ভাবনা বেড়ে যায় শান্তদের। দারুণ গতিতে বল করে চাপ তৈরি তাসকিন তার পরের ওভারে শেখ মেহেদী হাসানকে থার্ড ম্যানে ক্যাচ দিতে বাধ্য করান ।

তাসকিন আর আল-আমিনই মূলত গড়ে দিয়েছেন ম্যাচের সুর। তাসকিন ছিলেন বেশ আগ্রাসী। উইকেট নিতে ছিলেন মরিয়া। বারবার সে সুযোগ তৈরি করে ফলও পেয়েছেন তিনি। আল-আমিনকে দেখা গেছে নিখুঁত লাইন লেন্থে। তার বল থেকে রান বের করা ছিল দুরূহ ।

প্রথম ইনিংসের খবর- মুশফিক-আফিফের ব্যাটে রান, সাইফুদ্দিনের ৫ উইকেট

সংক্ষিপ্ত স্কোর

শান্ত একাদশ:   ৪১ ওভারে  ১৬৫   (ইমন ১০ , সৌম্য ৭,  শান্ত ৫, মুশফিক ৫১, আফিফ ৪০, হৃদয় ১৩, ইরফান ১১, নাসুম ১২* , রিশাদ ১, তাসকিন ২, আল-আমিন ১ ; সাইফুদ্দিন ৫/২৬ , শেখ মেহেদী ২/৩৪, খালেদ ০/৩৩, মোস্তাফিজ ৩/৩৬, শরিফুল ০/৩৬ )

তামিম একাদশ:   ৪০.৪ ওভারে ১৫৬  (তামিম ৫৭, বিজয় ৭, অঙ্কন ২২, ইয়াসির ৬, মিঠুন ২৯ , মোসাদ্দেক ৬, শেখ মেহেদী ৪  , আকবর ১ , সাইফুদ্দিন ;তাসকিন ৪/৩৬, আল-আমিন ১/১৮, রাহি ১/৩৮, নাসুম ১/২৭ , আফিফ ০/১০ , রিশাদ ০/১৭, সৌম্য ১/৭)

ফল: শান্ত একাদশ ডি/এল মেথডে ৭ রানে জয়ী।

 

সেরা বোলার: মোহাম্মদ সাইফুদ্দিন। 

সেরা ফিল্ডার: তামিম ইকবাল। 

সেরা ব্যাটসম্যান: মুশফিকুর রহিম। 

ম্যাচ সেরা: তাসকিন আহমেদ।

Comments

The Daily Star  | English
Hitu Sheikh sentenced to death in Magura child rape case

Magura child rape case: Hitu Sheikh sentenced to death

Hitu's wife Jaheda Begum and his sons -- Ratul Sheikh and Sajib Sheikh -- were acquitted from the charges

17m ago