ভারতীয় সংস্থার কারণে রূপপুর বিদ্যুৎ সঞ্চালন প্রকল্প বাস্তবায়ন নিয়ে শঙ্কা

rooppur nuclear power plant
১ মার্চ ২০১৮, পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার রূপপুরে পরমাণু বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাস্তবায়নে বাংলাদেশ, ভারত এবং রাশিয়ার মধ্যে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সই করা হয়েছে। ছবি: স্টার ফাইল ফটো

ভারতীয় আর্থিক সংস্থা দরপত্র প্রক্রিয়া এগিয়ে নিতে ‘অস্বাভাবিক’ সময় নেওয়ায় রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র (আরএনপিপি) থেকে ২,৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সঞ্চালনের অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পগুলো সময়মতো বাস্তবায়ন হওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে।

পাওয়ার গ্রিড কোম্পানি অব বাংলাদেশ (পিজিসিবি) সূত্রে জানা যায়, সরকারি মালিকানাধীন এ বিদ্যুৎ সংস্থাটি ভারতের লাইন অব ক্রেডিট (এলওসি) চুক্তির সহায়তায় দেশের প্রথম নির্মাণাধীন পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্প আরএনপিপি থেকে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের প্রকল্পগুলো হাতে নেয়।

২০২৩ সালের প্রথমার্ধে আরএনপিপির প্রথম ইউনিটের ১,২০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু করতে ২০২২ সালের মধ্যে সঞ্চালন প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে এতে অর্থায়নের জন্য ২০১৭ সালে নয়াদিল্লির সঙ্গে ১.০৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের চুক্তি স্বাক্ষর করে ঢাকা।

পাঁচটি সঞ্চালন প্রকল্প হলো- ১৩ কিলোমিটার নদী পারাপারসহ ৪৬৪ কিলোমিটারের ৪০০ কেভি সঞ্চালন লাইন, সাত কিলোমিটার নদী পারাপারসহ ২০৫ কিলোমিটারের ২৩০ কেভি সঞ্চালন লাইন, ৪০০ কেভির পাঁচটি বে এক্সটেনশন, ২৩০ কেভির চারটি বে এক্সটেনশন এবং ফ্রিকোয়েন্সি নিয়ন্ত্রণে বিদ্যুৎ ব্যবস্থার গুণগত উন্নয়ন, জরুরি নিয়ন্ত্রণ ও এ সম্পর্কিত বিভিন্ন কাজ।

সরকারি সূত্র জানায়, ৪৬৪ কিলোমিটারের ৪০০ কেভি সঞ্চালন লাইন প্রকল্পটি সহজে ও দ্রুত বাস্তবায়নের জন্য চারটি প্যাকেজে বিভক্ত করা হয়েছে।

এগুলো হলো- ১০২ কিলোমিটার রূপপুর-বগুড়া লাইন, ১৪৪ কিলোমিটার রূপপুর-গোপালগঞ্জ লাইন, ১৪৭ কিলোমিটার রূপপুর-ঢাকা লাইন এবং ৫১ কিলোমিটার আমিনবাজার-কালিয়াকৈর লাইন।

নদী পারাপারের ১৩ কিলোমিটার কাজটিও কয়েকটি প্যাকেজ নিয়ে গঠিত- ছয় কিলোমিটার পদ্মা নদী পারাপার লাইন এবং সাত কিলোমিটার যমুনা নদী পারাপার লাইন।

একইভাবে ২৩০ কেভি সঞ্চালন লাইন প্রকল্পটি তিনটি প্যাকেজে বিভক্ত- ৬০ কিলোমিটার রূপপুর-বাঘাবাড়ী লাইন, ১৪৫ কিলোমিটার রূপপুর-ধামরাই লাইন এবং সাত কিলোমিটার যমুনা নদী পারাপার লাইন।

পিজিসিবির অফিসিয়াল সূত্র জানিয়েছে, তারা প্রকল্পের কিছু প্যাকেজের জন্য দরপত্র প্রক্রিয়া সম্পন্ন করলেও, ভারতীয় আর্থিক সংস্থার ছাড়পত্র পেতে বিলম্বের কারণে বাকিগুলো আটকে রয়েছে।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পিজিসিবির এক শীর্ষ কর্মকর্তা বলেন, ‘প্রকল্পের সবচেয়ে জটিল কাজ নদী পারাপার এবং বে এক্সটেনশনের জন্য দরপত্রের প্রক্রিয়া ভারতীয় এক্সিম ব্যাংক থেকে প্রয়োজনীয় অনুমোদন পাওয়ার ক্ষেত্রে ভারতের দীর্ঘ আমলাতান্ত্রিক জটে পড়েছে।’

বিদ্যুৎ সঞ্চালন প্রকল্পের কাজ বাস্তবায়নের ওপরই সময়মতো আরএনপিপি প্রকল্পের কার্যক্রম শুরুর বিষয়টি নির্ভর করবে উল্লেখ করে পিজিসিবির এই কর্মকর্তা বলেন, ‘বিদ্যুৎ সঞ্চালনের অবকাঠামো প্রস্তুত না হলে, রূপপুর কেন্দ্র সময়মতো সম্পন্ন হওয়ার পরেও এর কার্যক্রম শুরু করা সম্ভব হবে না।’

এ বিষয়ে পিজিসিবির ব্যবস্থাপনা পরিচালক গোলাম কিবরিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, প্রকল্পের দরপত্র প্রক্রিয়া বিলম্বের বিষয়টি স্বীকার করে ভারতীয় আর্থিক সংস্থার তরফ থেকে দ্রুত ছাড়পত্র পাওয়া নিয়ে আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি। 

Comments

The Daily Star  | English

Finance adviser sees no impact on tax collection from NBR dissolution

His remarks came a day after the interim government issued an ordinance abolishing the NBR and creating two separate divisions under the finance ministry

1h ago