শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নারীর অংশগ্রহণ আরও বাড়ানোর আহ্বান বাংলাদেশের

বাংলাদেশ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নারীদের অংশগ্রহণ আরও বাড়ানোর আহবান জানিয়েছে। শান্তিরক্ষায় নারী নেতৃত্ব বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন শান্তিতে নারীর ভূমিকাকে সামগ্রিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করা।
রাবাব ফাতিমা। ছবি: পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ফেসবুক পেজ থেক নেওয়া

বাংলাদেশ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নারীদের অংশগ্রহণ আরও বাড়ানোর আহবান জানিয়েছে। শান্তিরক্ষায় নারী নেতৃত্ব বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন শান্তিতে নারীর ভূমিকাকে সামগ্রিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করা।

‘সামনে থেকে নেতৃত্বদান: জাতিসংঘ শান্তিরক্ষায় নারী নেতৃত্ব’ শীর্ষক এক ভার্চুয়াল ইভেন্টে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাবাব ফাতিমা একথা বলেন।

জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।

নিরাপত্তা পরিষদের ল্যান্ডমার্ক রেজুলেশন- ১৩২৫ এর ২০তম বার্ষিকী স্মরণে শুক্রবার যৌথভাবে অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশ, কানাডা ও যুক্তরাজ্য মিশন।

তিনি বলেন, ‘শান্তিরক্ষায় নারী নেতৃত্ব বৃদ্ধির জন্য শান্তিতে নারীর ভূমিকাকে সামগ্রিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিবেচনা করা প্রয়োজন।’

২০০০ সালের ৩১ অক্টোবর নিরাপত্তা পরিষদে প্রথমবারের মতো শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষায় নারীর ভূমিকা শীর্ষক এই রেজুলেশনটি সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়।

শান্তিরক্ষায় নারীর অংশগ্রহণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রণী ভূমিকার কথা তুলে ধরেন রাষ্ট্রদূত ফাতিমা। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশগুলোতে বিশেষ করে ‘যৌন ও লিঙ্গ-ভিত্তিক সহিংসতা দমন’, ‘পারস্পরিক আস্থার সম্পর্ক তৈরি’ এবং ওই সব সমাজের নারীদের দেশ গঠনের কাজে উৎসাহিত করার ক্ষেত্রে নারী শান্তি রক্ষীদের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ও অবদানের কথা উল্লেখ করেন তিনি। তবে শান্তিরক্ষা কার্যক্রমসহ সামগ্রিক শান্তি প্রক্রিয়ায় এখনও নারীর অংশগ্রহণ খুবই অপ্রতুল বলে উল্লেখ করেন বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি।

রাষ্ট্রদূত ফাতিমা শান্তিরক্ষায় নারীর অংশগ্রহণ বৃদ্ধি করতে জাতিসংঘ ও অন্যান্য সদস্য রাষ্ট্রসমূহের চলমান প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানান।

তিনি শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে নারী’ শীর্ষক নিরাপত্তা পরিষদের সাম্প্রতিক রেজ্যুলেশন-২৫৩৮ এর উদাহরণ টেনে নারীর ব্যাপক অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করার লক্ষ্যে পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ প্রদান, মিশনসমূহে নারীবান্ধব স্থান ও পরিবেশ তৈরি এবং ‘নারী, শান্তি ও নিরাপত্তা (ডব্লিউপিএস)’ এজেন্ডার বাস্তবায়নের আহবান জানান।

তিনি বাংলাদেশের জাতীয় পর্যায়ে ডব্লিউপিএস এজেন্ডা বাস্তবায়নার্থে গতিশীল প্রচেষ্টা গ্রহণ এবং কান্ট্রি অফিসগুলোসহ জাতিসংঘ ব্যবস্থাপনায় আভ্যন্তরীণভাবে এটি কার্যকর করার প্রতিও আহবান জানান তিনি।

ইভেন্টটিতে আরও বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘের আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল জ্যঁ পিয়েরে ল্যাক্রোস, কানাডার প্রতিরক্ষা প্রধান জেনারেল জোনাথন ভেঞ্চ, যুক্তরাজ্য মিশনের চার্জ দ্য অ্যাফেয়ার্স জোনাথন অ্যালেন। এছাড়া পশ্চিম সাহারা অঞ্চলে নিয়োজিত জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা

মিশন মিনুরসো এর ডেপুটি ফোর্স কমান্ডার, দক্ষিণ সুদানে নিয়োজিত মিশন ইউনিমিস এর পুলিশ কমিশনার ও সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিকে নিয়োজিত মিনুসকা মিশনের রিজিওনাল কমান্ডারসহ মাঠ পর্যায়ের বিভিন্ন নারী নেতৃত্ব বক্তব্য রাখেন।

আলোচনা অংশের সমন্বয় ও এর সমাপ্তি টানেন জাতিসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের ২০০০ সালে নির্বাচিত সভাপতি,জাতিসংঘের সাবেক আন্ডার সেক্রেটারি জেনারেল ও জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের সাবেক স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত আনওয়ারুল করিম চৌধুরী। আলোচনা পর্বে আরও অংশগ্রহণ করেন জাতিসংঘে নিযুক্ত অস্ট্রেলিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও আয়ারল্যান্ড মিশনের রাষ্ট্রদূত ও অন্যান্য প্রতিনিধিগণ।

কূটনীতিক মিশন, সামরিক প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, এনজিও এবং সুশীল সমাজের বিপুল সংখ্যক অংশীজন অনুষ্ঠানটিতে অংশগ্রহণ করেন।

নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য হিসেবে বাংলাদেশ ২০০০ সালে রেজ্যুলেশন-১৩২৫ গ্রহণের ক্ষেত্রে নেতৃস্থানীয় ভূমিকা রাখে। বাংলাদেশ সরকার ডব্লিউপিএস এজেন্ডা বাস্তবায়নে গত বছর একটি জাতীয় কর্ম পরিকল্পনা গ্রহণ করে।

নারী শান্তিরক্ষীসহ বাংলাদেশ সর্বাধিক শান্তিরক্ষী প্রেরণকারী দেশ হিসেবে বর্তমানে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা কার্যক্রমে অবদান রেখে চলেছে।

Comments

The Daily Star  | English
Is Awami League heading towards a Pyrrhic victory

Column by Mahfuz Anam: Is Awami League heading towards a Pyrrhic victory?

With values destroyed, laws abused, institutions politicised, and corruption having become the norm, will victory be worthwhile for the Awami League?

10h ago