সুমনের ৫ উইকেট, আবার বিপর্যয়ে উজ্জ্বল ইরফানের ব্যাট
দারুণ লেন্থে বুদ্ধিদীপ্ত বল করে সুমন খান হানছিলেন একের পর এক আঘাত। বিপর্যয়ে পড়া শান্তর দলকে আরও একবার রক্ষা করতে এগিয়ে আসেন সাত নম্বরে নামা ইরফান শুক্কুর। সুমনের ৫ উইকেট নেওয়ার দিনে দলকে কিছুটা লড়াইয়ের পূঁজি এনে দিয়েছেন ইরফান।
রোববার মিরপুর শেরে বাংলা ক্রিকেট স্টেডিয়ামে বিসিবি প্রেসিডেন্ট’স কাপের ফাইনালেও দেখা যায়নি বড় সংগ্রহ। ফের ব্যর্থ হতে দেখা গেছে টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের। টস হেরে আগে ব্যাট করে শান্ত একাদশ ১৭৩ রান করেছে মূলত ইরফানের ঝলকে। নিজেকে এই আসর নিয়ে নতুন করে চেনানো এই বাঁহাতি করেছেন ৭৭ বলে করেছেন ৭৫ রান। মাত্র ৩৮ রান দিয়ে ৫ উইকেট নিয়েছেন সুমন। মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের পর টুর্নামেন্টের দ্বিতীয়বার কোন বোলার নিলেন ৫ উইকেট।
ঝলমলে রোদের মাঝেও ব্যাটসম্যানদের বেহাল দশা কাটেনি। উইকেট ছিল বরাবরের মতই। কিছুটা বাড়তি বাউন্স দেখা গেছে। তবে চাইলে টিকে থেকে রান বের করা যে দূরূহ ছিল না দেখিয়েছেন ইরফান।
রুবেল হোসেনের প্রথম ওভারই সামলাতে পারেননি সাইফ হাসান। বার দুয়েক পরাস্ত হওয়ার পর স্টাম্পে টেনে বোল্ড হয়ে যান তিনি।
দ্বিতীয় ওভারে চোখে কিছু একটা পড়ে যাওয়ায় মাঠ থেকে বেরিয়ে যান সৌম্য সরকার।
মুশফিকুর রহিম নেমে ব্যাকফুট পাঞ্চ, কাভার ড্রাইভে দুই বাউন্ডারিতে থিতু হয়েছিলেন। পরে বলের মান দেখে খেলতে গিয়ে ছিলেন বাড়তি সতর্ক। কিন্তু সুমন খানের বলে রক্ষা হয়নি তার। প্রান্ত বদল করে আসা এই পেসারের ভেতরে ঢোকা বলে পরিষ্কার এলবিডব্লিউ হয়ে ফেরা মুশফিক করেন ৩৫ বলে ১২ রান।
মুশফিকের আউটের পর মাঠে ফেরেন সৌম্য। কিন্তু বদলাতে পারেননি টুর্নামেন্টের তার বেহাল দশা। সুমনের বেরিয়ে যাওয়া বলে খোঁচা মেরে বিদায় নেন তিনি। খানিক পর তার আউটেরই রিপ্লে দেখিয়েছেন আফিফ হোসেন। ২ বলেই কোন রান না করে বিদায় নেন তিনি।
৪৫ রানেই ৪ উইকেট হারিয়ে বসে শান্তর দল। অধিনায়ক শান্তর ঘাড়েই ছিল দলকে বাঁচানোর বড় ভার। ধীরলয়ে খেলে থিতুও হয়েছিলেন তিনি। তবে আমিনুল ইসলাম বিপ্লব এসে তৈরি করেন চাপ। আরেক প্রান্তে বল করা মেহেদী হাসান মিরাজকে মেরে সেই চাপ সরাতে চেয়েছিলেন তিনি। ডাউন দ্য উইকেটে এসে উড়িয়ে এক চার মারার পরের বলে লঙ অনে তোলে দেন সহজ ক্যাচ। ৬৫ রানে নেই তখন উপরের পাঁচ ব্যাটসম্যান।
অমন চাপের মাঝে আরও একবার সাতে নেমে নিজেকে প্রমাণ করেছেন ইরফান । পুরো টুর্নামেন্টেই দারুণ সফল এই ব্যাটসম্যান আগ্রাসী ব্যাট করে দলকে ফিরিয়ে আনেন খেলায়।
এগিয়ে এসে সোজা লফটেড ড্রাইভে ছক্কায় শুরু করেছিলেন। পুল করেছেন দাপটে ভঙ্গিমায়, মাঝ ব্যাটে লাগিয়ে রান বের করেছেন নিয়মিত। ৪৫ বলেই ৫ চার ২ ছক্কায় তুলে নেন ফিফটি। ৬ষ্ঠ উইকেটে তৌহিদ হৃদয়কে নিয়ে যোগ করেন ৭০ রান। ৫২ বলে ২৫ করা হৃদয় মাহমুদউল্লাহর বলে পুল করতে গিয়ে তুলে দেন ক্যাচ।
শেষ দিকে উইকেট পড়তে থাকায় এক প্রান্তে ধরে এগুতে থাকায় খুব বেশি আগ্রাসী হওয়ার সুযোগ ছিল না ইরফানের। ৪৭তম ওভারে রুবেলের বলে স্কুপ করতে গিয়ে বোল্ড হয়ে ফেরত যান তিনি। ৭৭ বলের ইনিংসে ৭৫ রান করতে ৮ চার আর ২ ছক্কা মেরেছেন ইরফান। তার আউটের পর ইনিংসও বেশি লম্বা হয়নি। তিন ওভার আগেই অলআউট হয়ে যায় শান্তরা।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
শান্ত একাদশ: ৪৭ ওভারে ১৭৩ (সাইফ ৪, সৌম্য ৫ , শান্ত ৩২ , মুশফিক ১২, আফিফ ০, হৃদয় ২৫, ইরফান ৭৫ , নাঈম ৭, নাসুম ৩, তাসকিন ১ , আল-আমিন ২*; রুবেল ২/২৭, সুমন ৫/৩৮ , ইবাদত ১/১৮ , মিরাজ ১/৩৯, বিপ্লব ০/২১ , রিয়াদ ১/২৮ )
Comments