ভারতীয় দলে ডাক পাওয়া পরাবাস্তব লাগছে রহস্য স্পিনারের
ক্রিকেট ক্যারিয়ার খুব বেশিদূর এগুচ্ছিল না। আর্কিটেক্ট পেশাতেই ক্যারিয়ার গড়ে ফেলেছিলেন বরুণ চক্রবর্তী।
ক্রিকেট ক্যারিয়ার খুব বেশিদূর এগুচ্ছিল না। স্থপতি হিসেবে ক্যারিয়ার গড়ে ফেলেছিলেন বরুণ চক্রবর্তী। কিন্তু সেখানেও পসার সেভাবে আসছিল না। আবার ক্রিকেটে ফেরা যেন রূপকথার মতো। তামিল নাড়ু প্রিমিয়ার লিগে আলোড়ন তুলে আইপিএল, আইপিএল দুই মৌসুম খেলার পরই ভারতের জাতীয় দলে ডাক পড়েছে ২৯ বছর বরুণের। এই লেগ স্পিনার এতটা আশা একদমই করেননি, তাই সব কিছু তার কাছে মনে হচ্ছে পরাবাস্তব।
সোমবার রাতে বরুণের কলকাতা নাইট রাইডার্স খেলছিল কিং ইলেভেন পাঞ্জাবের সঙ্গে। ওই ম্যাচ চলাকালীনই অস্ট্রেলিয়া সফরের তিন সংস্করণের দল জানিয়ে দেয় বিসিসিআই। তাতে টি-টোয়েন্টিতে প্রথমবারেত মতো ডাক পান বরুণ। মূলত তিনি লেগ স্পিনার, কিন্তু মাঝে মাঝেই ব্যাটসম্যানদের বোকা বানিয়ে করে ফেলেন ফিঙ্গার স্পিন। এমন দক্ষতায় জুটেছে রহস্য স্পিনারের তকমাও।
বিসিসিআই টিভিকে এরপর জানান, তার কাছে পুরো ব্যাপারটা মনে হচ্ছে বাস্তবের বাইরে, ‘খেলা শেষ হওয়ার পর জেনেছি(জাতীয় দলে ডাক পাওয়ার খবর)। আমি একই কথা বারবার বলব, এটা পরাবাস্তব লাগছে।’
ক্রিকেটে খুব একটা ভাল করতে না পেরে স্থাপত্যবিদ্যার শিক্ষা নিয়ে স্থপতি হিসেবে পেশা জীবণ শুরু করেন বরুণ। কিন্তু ওখানে মন টিকল না। স্পিন বোলিংয়ে নজর দিয়ে আচমকাই উত্থান তার। বছর দুয়েক আগে তামিল নাড়ু প্রিমিয়ার তাকে নিয়ে আসে আলোয়। ২০১৯ সালের আইপিএলে কিংস ইলেভেন পাঞ্জাবের প্রায় সাড়ে ৮ কোটি টাকায় বিক্রি হয়ে নিলামে ঝড় তুলেন তিনি। সেই গল্প শুনালেন আরেকবার, ‘২০১৫ সালের দিকে, যখন আমি খুব বেশি আয় রোজগার করতে পারছিলাম না। ফ্রি ল্যান্সিং করেও প্রয়োজন মেটাতে হিমশিম খাচ্ছিলাম। আমি চিন্তা করলাম ভিন্নভাবে। আবার ক্রিকেট আসার চিন্তা করলাম।’
‘আমি ২০১৮ সালে স্পিন বোলিং শুরু করি। তখনই তামিল নাড়ু প্রিমিয়ার লিগে সুযোগ আসে। গত বছর উঠানামায় গেছে। আমি বেশি সুযোগ পাইনি। চোটেও পড়েছিলাম। আমি কৃতজ্ঞ যে এ বছর ভালোভাবে ফিরতে পেরেছি। আমি কঠোর পরিশ্রম করেছি। কিন্তু আমার চারপাশের মানুষ থেকেই বেশি অনুপ্রেরণা নিয়েছি।’
‘আমি বাবার মার সঙ্গে কথা বলেছি, আমার হবু স্ত্রীর সঙ্গেও বলেছি। তাদের সঙ্গে আনন্দ ভাগাভাগি করলাম। আমাদের পরিবারের জন্য এটা দারুণ খবর। আমার বলার ভাষা কম এখন। ভারতীয় দলে ডাক পাওয়া অনেক বড় ব্যাপার। আমি সত্যিই এতটা আশা করিনি।’
এবার এক ম্যাচে ২০ রানেই তিনি নিয়েছিলেন ৫ উইকেট। আইপিএলের এবারের আসরের যা সেরা বোলিং ফিগার। বরুণ ফ্র্যাঞ্চাইজি লিগের এই মুন্সিয়ানা নিজ দেশের হয়েও দেখাতে মুখিয়ে, ‘এখানে আমার মূল লক্ষ্য ছিল নিয়মিত খেলা, পারফর্ম করে দলে জয়ের অবদান রাখা। আশা করি একই ভূমিকা ভারতের হয়েও রাখতে পারব। আমি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সচল নই, আমি নির্বাচকদের ধন্যবাদ দিতে যাই, তারা আমার উপর আস্থা ও বিশ্বাস রেখেছেন। আমার আর কোন শব্দ নাই।’
Comments