পটুয়াখালীতে হত্যা মামলার বাদীকে ‘হত্যার হুমকি’
পটুয়াখালীতে গৃহবধূকে পিটিয়ে হত্যার অভিযোগে করা মামলার বাদীকে হত্যার হুমকির অভিযোগ উঠেছে। আজ বুধবার সাংবাদিকদের কাছে এ অভিযোগ করেন মামলার বাদী নিহত গৃহবধূর বাবা সোহরাব গাজী।
সোহরাব গাজী অভিযোগ করে বলেন, ‘গতকাল পুলিশের আবেদনে মামলার প্রধান আসামি ও নিহতের স্বামীকে কলাপাড়া উপজেলা জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। পরে দুপুরে আদালতের সামনের রাস্তায় আসামির আত্মীয়-স্বজনরা তাকে হত্যার হুমকি দেন।’
বিষয়টি মামলার তদন্ত কর্মকর্তাকেও মৌখিকভাবে জানিয়েছেন বলে জানান তিনি।
তবে, এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন আসামির মামা মাসুম হাওলাদার।
মাসুম হাওলাদার দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘তাকে এ ধরনের কোনো হুমকি দেওয়া হয়নি। আমরা শুধু মামলা তুলে নিতে তাকে অনুরোধ করেছিলাম।’
এ প্রসঙ্গে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই আলমগীর হোসেন বলেন, ‘আদালত ভবনের সামনের রাস্তায় নিহত সালমার বাবা সোহরাব গাজীর সঙ্গে এমাদুলের আত্মীয়দের কথা কাটাকাটি হয়েছে বলে খবর পেয়েছি। এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সঠিকভাবে তদন্ত করে শিগগির আদালতে চার্জশিট দাখিল করা হবে।’
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০১৫ সালে বরগুনার ছাতনপাড়ার সালমা আক্তারের সঙ্গে পার্শ্ববর্তী পটুয়াখালীর কলাপাড়ার এমাদুলের বিয়ে হয়। বিয়ের সালমার বাবা নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকারসহ ৩ লাখ টাকার মালামাল দেন। কিন্তু, বিয়ের পর থেকে জামাতা এমাদুল মাহেন্দ্র গাড়ী কেনার কথা বলে শ্বশুরের কাছে যৌতুক হিসেবে আরও ৩ লাখ টাকা দাবি করেন। একসময় টাকার জন্য সালমা বেগমের ওপর চাপ দিলে টাকা আনতে অপারগতা প্রকাশ করে। এরপর থেকেই সালমার ওপর নির্যাতন শুরু হয়। গত ১৮ অক্টোবর সালমাকে নির্মমভাবে নির্যাতন করা হয়। এক পর্যায়ে সালমা অজ্ঞান হয়ে পড়ে সেদিন রাতেই তার মৃত্যু হয়। পরে তার গলায় রশি বেধেঁ ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে সালমার বাবাকে খবর দেওয়া হয়। পুলিশ রক্তাক্ত অবস্থায় সালমার মরদেহ উদ্ধার করে পরদিন পটুয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
এ ঘটনায় সালমার বাবা বাদী হয়ে ১৯ অক্টোবর কলাপাড়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। পরে এমাদুলকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করে। আদালতে পুলিশ এমাদুলের ৫ দিনের রিমান্ডের আবেদন করলে মঙ্গলবার দুপুরে আদালত তার দুই দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে আদালত ভবনের সামনের রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকা সালমার বাবা সোহরাব গাজীকে এমাদুলের স্বজনরা মামলা তুলে নিতে চাপ দেন। শিগগির মামলা তুলে না নিলে হত্যার হুমকিও দেয় বলে অভিযোগ করেন সোহরাব গাজী।
Comments