দেশে বহু নারী বিয়ে পরবর্তী ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছে: ধর্ষণ আইন সংস্কার জোট
দেশে বহু নারী ও কন্যা বিয়ে পরবর্তী ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছে বলে জানিয়েছে ১৭টি মানবাধিকার সংস্থা সমন্বয়ে গঠিত ‘ধর্ষণ আইন সংস্কার জোট’ বা ‘রেপ ল রিফর্ম কোয়ালিশন’।
তারা বলছেন, দেশে বহু নারী ও কন্যা বিয়ে পরবর্তী ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির শিকার হচ্ছে। অথচ একটি জেন্ডার বৈষম্যমূলক আইনের কারণে অধিকাংশ নারীই কোনো প্রতিকার পায় না। বাংলাদেশ দণ্ডবিধি-১৮৬০ এর ধারা ৩৭৫ এ ধর্ষণের ব্যতিক্রম সংজ্ঞা যোগ করেছে। যেখানে বলা হয়েছে নারীর বয়স ১৪ বছরের কম হলে তার সঙ্গে যৌন সম্পর্ক ধর্ষণ বলে গণ্য হবে।
একইসঙ্গে, যৌনাঙ্গে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ফলে বাল্যবিয়ের শিকার ১৪ বছরের একটি শিশু নিহত হওয়ার ঘটনায় গভীর উদ্বেগ ও নিন্দা প্রকাশ করেছে তারা। জোট এই ঘটনার দ্রুত ও জোরালো তদন্ত এবং দোষী ব্যক্তিদের উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানিয়েছে।
জোট মনে করছে, বিবাহিত কিশোরীর এই মৃত্যু কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়।
এ ছাড়া, ধর্ষণ আইন সংস্কার জোটের পক্ষ থেকে দ্রুত ৩৭৫ ধারার সংশোধন চাওয়া হয়েছে। কারণ, এই ধারা সংবিধানে বর্ণিত ২৮, ৩১ ও ৩২ এবং ৩৫(৫) অনুচ্ছেদের সঙ্গে সাংঘর্ষিক বলে নারীরা বিচারের অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। এ ধারাটি বিবাহিত নারীদের জন্য বৈষম্যমূলক। কারণ ১৪ বছরের ওপরে কোনো নারী বৈবাহিক সম্পর্কর মধ্যে যৌন সহিংসতার শিকার হলে, তা এই আইন অনুসারে ধর্ষণের আওতাভুক্ত নয়। যা নারীকে সংবিধানে বর্ণিত সুরক্ষা দেয় না।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য অনুযায়ী, শতকরা ২৭.৩ শতাংশ নারীই বলেছেন তারা তাদের ইচ্ছার বিরুদ্ধে স্বামীর জোরজবরদস্তির কারণেই শারীরিক সম্পর্কে বাধ্য হন।
ধর্ষণ আইন সংস্কার জোটের সদস্য সংস্থাগুলো হলো- এসিড সারভাইরাস ফাউন্ডেশন, একশন এইড, আইন সালিশ কেন্দ্র, বাংলাদেশ লিগ্যাল এইড এন্ড সার্ভিসেস ট্রাষ্ট, বাংলাদেশ মহিলা আইনজীবী সমিতি, বন্ধু ওয়েলফেয়ার সোসাইটি, ব্র্যাক, কেয়ার বাংলাদেশ, মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন, জাস্টিস ফর অল নাউ, আইসিডিডিআরবি, নারীপক্ষ, উই ক্যান, উম্যান উইথ ডিসএবিলিটিস ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশন, উম্যান ফর উম্যান এবং ইয়ং উম্যান ক্রিশ্চিয়ান এসোসিয়েশন।
Comments