মৌ চাষিদের গ্রাম পিরুজালী

Gazipur_Honey_31Oct20.jpg
তিন বছরে সফল উদ্যোক্তা গাজীপুরের ময়তাপাড়ার সজীব আলম খান। ছবি: স্টার

গাজীপুরের সদর উপজেলার পিরুজালী গ্রাম যেন মৌ চাষিদের গ্রামে পরিণত হয়েছে। চাকরি ছেড়ে বিভিন্ন বয়সী মানুষ উদ্যোক্তা হিসেবে মৌ চাষে ঝুঁকছেন। সবুজ ঘেরা এই গ্রামে সারা বছরই কোনো না কোনো ফল-ফুলের সমারোহ লেগে থাকে।

পিরুজালী গ্রামের কেফাত উল্লাহ খনের ছেলে সজীব আলম খান তিন বছর আগেও একটি পোশাক কারখানায় কাজ করতেন। প্রতিদিন ভোরে কারখানায় যাওয়া, সন্ধ্যায় ফিরে আসা ছিল তার রুটিন। লিচু মৌসুমে তিনি দেখেন, বিভিন্ন এলাকা থেকে মৌয়ালরা বাক্স নিয়ে আসেন এবং ১২ থেকে ১৫ দিনের মধ্যে মধু সংগ্রহ করে নিয়ে যান। এরপর সজীব এই পেশায় আগ্রহী হন।

পাঁচটি বাক্স নিয়ে শুরু করেন সূচনা অ্যান্ড সূচী মৌ খামার। বর্তমানে ৫৫টি বাক্স নিয়ে মধু সংগ্রহ করছেন সজীব। তিনি দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘আম, কাঁঠাল ও লিচুর মৌসুমে সবচেয়ে বেশি মধু পাওয়া যায়। মৌ মাছিসহ একটি বাক্সের খরচ পড়ে সাড়ে তিন হাজার টাকা। বছরে একটি বাক্স থেকে ৪০ কেজি মধু সংগ্রহ করা যায়। প্রতিদিন তিন জন শ্রমিককে কাজ করতে হয়। প্রতিটি বাক্সে চার থেকে পাঁচটি ফ্রেম থাকে। এসব ফ্রেমে মৌমাছি চাক বাঁধে।’

সজীব আরও বলেন, ‘গাজীপুরের ক্ষুদ্র ও কুটির শিল্প করপোরেশন থেকে প্রশিক্ষণ নিয়ে এই কাজ শুরু করি। আমাকে দেখে বেশ কয়েকজন যুবক উৎসাহিত হয়েছে।’

তাদের একজন লোকমান খান। তিনি বলেন, ‘সজীবের কাছ থেকে ১০টি বাক্স নিয়ে মৌ চাষ শুরু করেছি। এখন বাক্স বাড়ানোর সময় এসেছে। মৌ চাষ একটি স্বাধীন কাজ। পোশাক কারখানার চাকরি ছেড়ে দিয়ে পুরো সময় এই কাজে ব্যয় করার কথা ভাবছি।’

Gazipur_Honey1_31Oct20.jpg
গাজীপুরের সদর উপজেলার পিরুজালী বর্তাপাড়ায় হচ্ছে মৌ চাষ। ছবি: স্টার

বর্তাপাড়া এলাকার পারফেক্ট মৌ খামারের মালিক গিয়াস উদ্দিন আকন্দ বলেন, ‘তিন বছর আগে শখ করে মৌ চাষ শুরু করেছিলাম। এখন আমার ১১০টি বাক্স। লাভজনক হওয়ায় স্থায়ীভাবে এই পেশা বেছে নিয়েছি। আমার খামারে সব সময় চার জন লোক কাজ করেন। বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানি মধু কিনে নিয়ে যায়।’

পিরুজালী এলাকার ওষুধ বিক্রেতা সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘এলাকার প্রায় প্রতিটি দোকানেই মধু পাওয়া যায়। সব ব্যবসায়ী চাষের মধু বিক্রি করেন।’

সাবেক ইউপি সদস্য আব্দুল খালেক বলেন, ‘যারা মৌ চাষে যুক্ত হয়েছিলেন, তারা সবাই লাভবান হয়েছেন। যে কারণে অনেকে উৎসাহিত হচ্ছেন মৌ চাষে।’

গাজীপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মাহবুব আলম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘মৌ চাষে ফসল বৃদ্ধি পায়। কারণ মৌ মাছি পরাগায়ণে সাহায্য করে। এ পেশায় অনেকে যুক্ত হওয়ায় মধু এখন বিদেশে রপ্তানি হচ্ছে।’

Comments

The Daily Star  | English

Advisory council set to hold emergency meeting this evening

The meeting will be held tonight at 8:00pm at the State Guest House, Jamuna

1h ago