আলাভেসের মাঠে বার্সেলোনার হোঁচট
চ্যাম্পিয়ন্স লিগে অসাধারণ গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে বার্সেলোনা। জুভেন্টাসের মতো বড় দলের বিপক্ষে হেসেখেলে জয় পেয়েছে দলটি। কিন্তু তার ঠিক উল্টোটাই যেন লা লিগায়। জয় যেন সোনার হরিণ হয়ে গেছে দলটির জন্য। এবার আলাভেসের মাঠে হোঁচট খেয়েছে। শেষ চার ম্যাচে জয় পায়নি রোনাল্ড কোমানের শিষ্যরা।
স্তাদিও দি মেন্দিজোরোজায় শনিবার আলাভেসের সঙ্গে ১-১ গোলে ড্র করে বার্সেলোনা।
বার্সার হয়ে এদিন মৌসুমের প্রথম গোল পেয়েছেন আতোঁয়ান গ্রিজমান। ছন্দে ফেরার আভাস দিয়েছেন। খেলেছেনও দারুণ। মাঝ মাঠের নিয়ন্ত্রণও ছিল তাদেরই। কিন্তু গোলরক্ষক নেতোর একটি অমার্জনীয় ভুলে পিছিয়ে পড়ে দলটি। পরে গ্রিজমানের গোলে সমতায় ফিরতে পারলেও ফরোয়ার্ডের ব্যর্থতায় জয়ের দেখা পায়নি তারা।
এদিন ম্যাচের ১৩তম মিনিটে অবিশ্বাস্য এক মিস করেন ফাতি। লংলের থ্রু বলে গোলরক্ষককে একা পেয়ে যান তিনি। সময়ও পেয়েছিলেন। কিন্তু যে শট নেন তিনি ছিল বারপোষ্টের বাইরে। চার মিনিট পর ভালো সুযোগ ছিল আলাভেসও। পাল্টা আক্রমণ থেকে লুইস রিওজার ক্রস থেকে ফাঁকায় বল পেয়ে গিয়েছিলেন এদগার মেন্দিস। কিন্তু গোলরক্ষক বরাবর শট নেন তিনি। যদিও প্রথম দফায় ঠিকভাবে ধরতে পারেননি নেতো। তবে দ্বিতীয় দফায় লুফে নেন এ গোলরক্ষক।
১৯তম মিনিটে মেসির বাড়ানো বলে ফাঁকায় বল পেয়েছিলেন ফাতি। তবে শট না নিয়ে গ্রিজমানকে পাস দেন তিনি। গ্রিজমান ঠিকভাবে শট নিতে না পারায় নষ্ট হয় সে সুযোগ। চার মিনিট পর বিপজ্জনক জায়গা থেকে ভালো ফ্রিকিক নিয়েছিলেন মেসি। তবে একেবারে গোললাইন থেকে তা ফিরিয়ে দেন আলাভেসের এক খেলোয়াড়।
৩১তম মিনিটে স্বাগতিকদের একটি গোল উপহার দেন বার্সেলোনা গোলরক্ষক নেতো। পিকের ব্যাকপাস ঠিকভাবে নিয়ন্ত্রণে নিতে পারেননি তিনি। তার কাছ থেকে বল কেড়ে জালে প্রবেশ করান রিওজা। চার মিনিট পর সমতায় ফিরতে পারতো বার্সা। সের্জিও রোবার্তোর ক্রসে ফাঁকায় হেড দেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন ফ্র্যাঙ্কি ডি ইয়ং। কিন্তু পেছন থেকে এক ডিফেন্ডার ধাক্কা দেওয়ায় ঠিকভাবে মাথা ছোঁয়াতে ব্যর্থ হন তিনি। পেনাল্টির আবেদন করেছিলেন তারা। কিন্তু তা আমলে নেননি রেফারি। এমনকি ভিএআরেও যাচাই করা হয়নি।
দ্বিতীয়ার্ধের তৃতীয় মিনিটে ফাতির বাড়ানো বলে ভালো শট নিয়েছিলেন মেসি। তবে তাকে হতাশ করেন আলাভেস গোলরক্ষক ফেররান্দো পাচেকো। ৫৪তম মিনিটে রোবার্তোর আরও একটি ক্রস থেকে ভালো সুযোগ পেয়েছিলেন ফাতি। তবে অল্পের জন্য লক্ষ্যে রাখতে পারেননি। ৬৩তম মিনিটে বড় ধাক্কা খায় আলাভেজ। দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখে বহিষ্কার হন জোতা।
পরের মিনিটেই সমতায় ফেরে বার্সেলোনা। ডিফেন্ডারের ভুল ডি-বক্সে ফাঁকায় বল পেয়ে যান গ্রিজমান। দারুণ দক্ষতায় গোলরক্ষকের মাথার উপর দিয়ে আলতো চিপে লক্ষ্যভেদ করেন এ ফরাসি। ৬৫তম মিনিটে অবিশ্বাস্য এক সেভ করেন আলাভেস গোলরক্ষক। রোবার্তোর কাছ থেকে বল পেয়ে অসাধারণ এক শট নিয়েছিলেন মেসি। কিন্তু তারচেয়েও দারুণ দক্ষতায় ঝাঁপিয়ে পরে তা ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক।
৭১তম মিনিটে ফের বল জালে জড়িয়েছিলেন গ্রিজমান। তবে ভিএআরে বাতিল হয় সে গোল। ছয় মিনিট পর ফাতির দূরপাল্লার শট ঠেকিয়ে দেন গোলরক্ষক। ৮৯তম মিনিটে কর্নার থেকে ভালো হেড নিয়েছিলেন পিকে। তবে ফিরিয়ে দেন আলাভেস গোলরক্ষক। পরের মিনিটে রোবার্তোর পাস থেকে একেবারে ফাঁকায় বল পেয়ে গিয়েছিলেন পিকে। বলের নিয়ন্ত্রণ নিতে না পারলে এগিয়ে যাওয়ার সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট করে দলটি।
শেষ দিকে মুহুর্মুহু আক্রমণ করে বার্সা। মেসি ও বদলি খেলোয়াড় দেস্তের একের পর এক শট ঠেকিয়ে দেন আলাভেস গোলরক্ষক। ফলে ড্র মেনেই মাঠ ছাড়তে হয় কাতালানদের।
ছয় ম্যাচে ২টি জয় ২টি ড্রয়ে ৮ পয়েন্ট নিয়ে তালিকার ১২ নম্বর অবস্থানে আছে বার্সেলোনা। এক ম্যাচ বেশি খেলে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে আছে রিয়াল মাদ্রিদ।
Comments