জুয়েলকে পিটিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় গ্রেপ্তার আরও ৫, মোট গ্রেপ্তার ২১

পবিত্র কোরআন অবমাননার গুজব ছড়িয়ে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারীতে শহিদুন্নবী জুয়েলকে (৫০) পিটিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় আরও পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে মোট গ্রেপ্তারের সংখ্যা দাঁড়ালো ২১ জনে।
ছবিটি ফেসবুক থেকে নেওয়া

পবিত্র কোরআন অবমাননার গুজব ছড়িয়ে লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারীতে শহিদুন্নবী জুয়েলকে (৫০) পিটিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যার ঘটনায় আরও পাঁচ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে মোট গ্রেপ্তারের সংখ্যা দাঁড়ালো ২১ জনে।

আজ বুধবার ভোরে অভিযান চালিয়ে বুড়িমারী এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয় বলে নিশ্চিত করেছেন পাটগ্রাম থানার অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) সুমন কুমার মহন্ত।

এর আগে এ ঘটনায় মসজিদের খাদেম জোবেদ আলীসহ ১৬ জনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।

নতুন গ্রেপ্তার পাঁচ জনের মধ্যে দুজন এজাহারভুক্ত আসামি এবং অপর তিনজনকে ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে চিহ্নিত করে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানান ওসি।

এ ঘটনায় নিহত জুয়েলের বন্ধু সুলতান রুবাইয়াত সুমন (৫০) মঙ্গলবার বিকেলে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে বাড়িতে ফিরে গেছেন। বাড়িতে যাওয়ার আগে তিনি লালমনিরহাট পুলিশ সুপার (এসপি) আবিদা সুলতানার কাছে ২৯ অক্টোবর বৃহস্পতিবারের ঘটনার বর্ণনা লিখিতভাবে জানান।

লিখিত বক্তব্যে নিহত জুয়েলের বন্ধু সুলতান রুবাইয়াত সুমন জানান, ২৯ অক্টোবর বৃহস্পতিবার বিকেলে তার বন্ধু জুয়েল আসরের নামায আদায় করতে বুড়িমারী কেন্দ্রীয় মসজিদের ভেতরে যান। মোবাইলে চার্জ দিতে গিয়ে তার একটু দেরি হওয়ায় তিনি মসজিদের বারান্দায় নামায আদায় করেন। নামায শেষে সকলে বেরিয়ে এলেও জুয়েলের আসতে দেরি হওয়ায় তিনি মসজিদের ভেতর ঢুকে দেখতে পান মসজিদের খাদেমের সাথে তার বাকবিতণ্ডা চলছিল। তিনি জুয়েলের পক্ষে খাদেমের কাছে ক্ষমা চেয়ে নেন। কিন্তু, খাদেম কয়েকজনকে ডেকে তাকেসহ জুয়েলকে মসজিদ থেকে বের করে মারতে থাকেন। স্থানীয় একজন ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য তাদেরকে উদ্ধার করে মসজিদের পাশে ইউনিয়ন পরিষদের একটি কক্ষে নিয়ে রাখেন। ইউনিয়ন পরিষদের দরজা ও গ্রিল ভেঙে স্থানীয় বিক্ষুব্ধ জনতা জুয়েলকে গণপিটুনি দিতে শুরু করেন।

তিনি বলেন, ‘এ সময় পাটগ্রাম থানার ওসি আমাকে কোনো রকমে রক্ষা করেন। আমাকে প্রথমে পাটগ্রাম উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে এবং পরে লালমনিরহাট সদর হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা করান পুলিশ।’

‘জুয়েল তার ঔষধ নেওয়ার জন্য আমাকে সঙ্গে নিয়ে মোটরসাইকেলে রংপুর থেকে বুড়িমারী এসেছিল,’ বলেন তিনি।

লালমনিরহাট পুলিশ সুপার আবিদা সুলতানা সাংবাদিকদের জানান, চিকিৎসা শেষে সুস্থ হলে নিহত জুয়েলের বন্ধু সুলতান রুবাইয়াত সুমনের লিখিত বক্তব্য নিয়ে তাকে বাড়িতে পাঠানো হয়েছে। এজাহারভুক্ত আসামি ছাড়াও পুলিশ ভিডিও ফুটেজ দেখে অভিযান চালিয়ে জড়িতদের গ্রেপ্তার করছে। এ ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের আইনের আওতায় আনা হচ্ছে।’

গত ২৯ অক্টোবর বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় পবিত্র কোরআন অবমাননার গুজব ছড়িয়ে পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী এলাকায় শহিদুন্নবী জুয়েলকে পিটিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনায় নিহতের চাচাতো ভাই সাইফুল আলম, পুলিশের এসআই শাহাজাহান আলী ও ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু সাঈদ নেওয়াজ নিশাত পৃথক তিনটি মামলা করেন। তিনটি মামলা গোয়েন্দা পুলিশ কর্মকর্তা তদন্ত করছেন।

আরও পড়ুন:

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

10h ago