গুজব রটনাকারী আবুল হোসেনকে খুঁজছে পুলিশ

লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলায় নিহত শহিদুন্নবী জুয়েলের বিরুদ্ধে পবিত্র কোরআন অবমাননার গুজব রটনাকারী আবুল হোসেন ওরফে হোসেন আলীকে (৪৪) খুঁজছে পুলিশ। স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন, হত্যাকাণ্ডের পরে তাকে আর এলাকায় দেখা যায়নি। তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটিও বন্ধ।
বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা, জেলা প্রশাসন ও জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের তদন্তে উঠে আসে, আবুল হোসেন ওরফে হোসেন আলী প্রথম কোরআন অবমাননার অভিযোগ তুলেছিলেন। তার বক্তব্যই গ্রামে ছড়িয়ে পড়ে।
উপজেলার বুড়িমারী ইউনিয়নে বুড়িমারী বাজারে আবুল হোসেনের ডেকোরেটর ও কসমেটিক্স সামগ্রীর দোকান রয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, মাত্র কয়েক কিলোমিটার দূরে ভারতে তার আত্মীয়ের বাড়ি। গ্রেপ্তার এড়াতে তিনি সেখানে আত্মগোপন করে থাকতে পারেন।
আবুল হোসেন শুরুতে আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। পরবর্তীতে দল বদলে জামায়াতের রাজনীতিতে সম্পৃক্ত হন— বলেন তারা।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে আবুল হোসেনের স্ত্রী ঝরনা বেগম দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘১০ বছর আগে আমার স্বামী আওয়ামী লীগের রাজনীতি ছেড়ে দিয়েছেন। এখন তিনি কোনো দলে সম্পৃক্ত আছেন কি না তা আমি জানি না। আমার স্বামী কোথায় আছেন, কেমন আছেন তাও আমি জানি না। এই ঘটনার পরদিন থেকে তার সঙ্গে আমার কোনো যোগাযোগ নেই। তিনি অপরাধী কি না সেটাও আমি জানি না। তিনি একজন নামাজি ব্যক্তি।’
পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুমন কুমার মোহন্ত দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘জুয়েল হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় গ্রেপ্তার ২১ জনের মধ্যে ১১ আসামিই কিশোর। তারা কীভাবে হত্যাকাণ্ডে জড়িয়ে পড়েছে, কে তাদের ডেকেছিল সেসব প্রশ্নের উত্তর খোঁজা হচ্ছে। গুজব রটনাকারী আবুল হোসেনকে পুলিশ হন্যে হয়ে খুঁজছে।’
কোরআন অবমাননার অভিযোগ তুলে গত ২৯ অক্টোবর সন্ধ্যায় লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী স্থলবন্দরের পাশে বুড়িমারী বাজারে শহিদুন্নবী জুয়েল নামে এক ব্যক্তিকে পিটিয়ে ও পুড়িয়ে হত্যা করা হয়। জুয়েল রংপুর শহরের মৃত আব্দুল ওয়াজেদ মিয়ার ছেলে। তিনি রংপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের সাবেক গ্রন্থাগারিক। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিলেন।
Comments