ভারতে বাংলাদেশের দূত হিসেবে আমাকে খেলতে হবে: জামাল
জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে সাইফ স্পোর্টিং ছেড়ে কলকাতা মোহামেডানের হয়ে খেলতে যাচ্ছেন জামাল ভূঁইয়া। আই লিগের দলটিতে ভালো পারফর্ম করতে আশাবাদী বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের অধিনায়ক। বাংলাদেশের দূত হয়ে অন্যদের জন্যও ভারতে খেলার পথ তৈরি করে দেওয়ার প্রত্যাশা করছেন তিনি।
কলকাতা মোহামেডান, জামাল ও সাইফের মধ্যে একটি ত্রিপাক্ষিক সমঝোতা হয়েছে। পাঁচ মাসের জন্য ভারতের ঐতিহ্যবাহী ক্লাবটিতে খেলবেন জামাল। আগামী বছরের ২১ এপ্রিল পুনরায় তিনি যোগ দিবেন সাইফে।
বৃহস্পতিবার বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অনুশীলন শেষে গণমাধ্যমের কাছে জামাল বলেন, ‘সাইফের সঙ্গে আমার চুক্তি শেষ হয়েছে। কিন্তু সাইফ আমাকে ছাড়তে চায়নি। তো আমাদের মধ্যে যে বোঝাপড়া হয়েছে তা হলো, আমি কলকাতা মোহামেডানে পাঁচ মাস খেলব। তারপর এপ্রিলে আমি আবার সাইফে যোগ দিব। এটা পারস্পরিক সমঝোতার ফল। কিন্তু দুই-তিন দিন সময় লেগেছে। কারণ, সবাইকেই সম্মত হতে হয়েছে।’
গত সেপ্টেম্বর মাসের শেষ দিকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জামালের কলকাতা মোহামেডানের হয়ে খেলতে যাওয়ার গুঞ্জন ছড়িয়েছিল। গত মাসে তিনি অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছিলেন এই দাবি। কিন্তু কেন? তার ব্যাখ্যা, ‘আগে তো গুজবই ছিল। আমার সঙ্গে তখন কোনো যোগাযোগ হয়নি।’
সাত বছর পর ভারতের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ঘরোয়া আসর আই লিগে উঠেছে কলকাতা মোহামেডান। তাদের চোখ শিরোপায়। এ প্রসঙ্গে দলটির সাধারণ সম্পাদক ওয়াসিম আকরামের সঙ্গে কথোপকথনের চুম্বক অংশ তুলে ধরেন জামাল, ‘ওয়াসিম ভাই আমাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন, “মোহামেডানে খেলবে কিনা?” তখন আমার প্রথম প্রশ্ন ছিল, “দল কেমন হবে? চ্যাম্পিয়ন হওয়ার মতো? মাঝারি মানের নাকি নিচু সারির?” তিনি জবাবে জানান, “আমরা চ্যাম্পিয়ন হওয়ার জন্য খেলব।” আমি তখন বলি, “ঠিক আছে। আমারও প্রত্যাশা একই।” এরপর তিনি বললেন, “আমরা সেরা খেলোয়াড়দের দলে চাই। তোমাকে অনেক দিন থেকে আমরা লক্ষ করছি।” তো আমাকে তারা চাচ্ছে।’
নতুন ক্লাবের কাছে সর্বোচ্চটাই চাওয়া জামালের, ‘কলকাতা মোহামেডান একটি সুপরিচিত ও ঐতিহ্যবাহী দল। তাদের অনেক ভক্ত-সমর্থক আছে। আমি ক্লাবটির কাছে অনেক কিছু প্রত্যাশা করি। সর্বোচ্চ প্রচেষ্টা, সুযোগ সুবিধা ও ভালো মাঠ। অনেক দর্শক খেলা দেখতে আসবে, এমন প্রত্যাশাও করি আমি। তারা আমাকে বলেছে, পাঁচ তারকা হোটেলে রাখবে ও সর্বোচ্চ সমর্থন দিবে।’
লম্বা সময় পর ভারতে খেলতে যাচ্ছেন বাংলাদেশের কোনো খেলোয়াড়। এশিয়ান কোটায় জামালকে দলে টেনেছে কলকাতা। একে কেবল নিজের জন্য নয়, বাংলাদেশের ফুটবলের জন্যও বড় সুযোগ হিসেবে দেখছেন তিনি, ‘যদি আমি ভারতে ভালো খেলতে পারি, তাহলে ওরা অন্য খেলোয়াড়দেরও ডাকবে। সুতরাং, আমাকে বাংলাদেশের দূত হিসেবে সেখানে খেলতে হবে। আমাকে সেখানে ভালো করতে হবে। আশা করছি, আগামীতে আরও কিছু খেলোয়াড় ভারতে সুযোগ পাবে।’
নিজেকে বাকিদের জন্য উদাহরণ মনে করেন কিনা, এমন প্রশ্নে সম্মতি দিয়ে জামালের ভাষ্য, ‘তরুণ খেলোয়াড়দের অনেকেই আমাকে জিজ্ঞেস করেছে। আমি বলেছি, যদি কঠোর পরিশ্রম করো, তাহলে অবশ্যই সুযোগ ভারতে খেলার সুযোগ পাবে। তবে আন্তর্জাতিক ম্যাচে ভালো করতে হবে। তাহলে সবাই লক্ষ করবে। আমি সেভাবেই সুযোগ পেয়েছি। শুধু মোহামেডান নয়, ভারতের অন্য ক্লাবও আমার বিষয়ে খোঁজ-খবর নিয়েছে।’
আগামী ১৩ ও ১৭ নভেম্বর ঢাকার বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে নেপালের সঙ্গে দুটি আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ খেলবে বাংলাদেশ। তার পরপরই কলকাতায় উড়ে যাবেন বলেও জানান জামাল।
Comments