মার্কিন নির্বাচনের ফল ঘোষণায় দেরি কি এবারই প্রথম?
এবারের মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পঞ্চম দিনেও ভোট গণনা চলছে। যুক্তরাষ্ট্রসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশেই প্রত্যক্ষ করছে যে, এবারের নির্বাচনের ফল ঘোষণা করতে অতিরিক্ত সময় লাগছে। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মোট ৫৩৮টি ইলেকটোরাল ভোটের মধ্যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে প্রয়োজন ২৭০টি।
নিউইয়র্ক টাইমসের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত ডেমোক্রেট প্রার্থী জো বাইডেন ২৫৩টি ইলেকটোরাল ভোট পেয়েছেন। আর রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প পেয়েছেন ২১৪টি। কোনো কোনো গণমাধ্যম অ্যারিজোনায় বিজয় দেখিয়ে বাইডেনের ইলেকটোরাল কলেজ ভোটের সংখ্যা ২৬৪ দেখিয়েছে।
প্রশ্ন উঠেছে, এবারই ফল ঘোষণায় দেরি হচ্ছে নাকি আগেও এমনটা হয়েছিল? তা জানতে ২০০০ সাল থেকে শুরু করে পাঁচটি নির্বাচনের ফল ঘোষণার সময়কালের তথ্য আল-জাজিরার প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে। একইসঙ্গে দেখানো হয়েছে, সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্টরা কতটি ইলেকটোরাল ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছিলেন এবং দুই প্রতিদ্বন্দ্বীর মধ্যকার ভোটের ব্যবধান কত ছিল।
বার্তাসংস্থা এপির বরাত দিয়ে আল-জাজিরার প্রকাশিত প্রতিবেদন থেকে জানা গেছে, ২০০০ সাল থেকে পরবর্তী পাঁচটি নির্বাচনের তিনটির ফলই নির্বাচনের দিন রাত ১১টা থেকে ২টার মধ্যেই ঘোষণা করা হয়েছিল। একটি করা হয়েছিল পরদিন। আর একটিতে সময় লেগেছিল ৩৬ দিন।
২০০০ সালের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ৭ নভেম্বর। তবে, ফল ঘোষণা করা হয় ১৩ ডিসেম্বর। অর্থাৎ নির্বাচনের ৩৫ দিন পর। সেই নির্বাচনে প্রার্থী ছিলেন রিপাবলিকানের জর্জ ডব্লিউ বুশ ও ডেমোক্রেটিকের আল গোর। নির্বাচনের ফ্লোরিডার ভোট নিয়ে আদালতে যাওয়ার কারণেই এতটা সময় লেগেছিল। নির্বাচনে ২৭১টি ইলেকটোরাল ভোট পেয়ে বুশ জয়ী হয়েছিলেন। আল গোর পেয়েছিলেন ২৬৬টি। অর্থাৎ পাঁচ ভোট বেশি পেয়েছিলেন বুশ।
২০০৪ সালের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ২ নভেম্বর। যার ফল ঘোষণা করা হয় পরের দিন ৩ নভেম্বর বেলা ২টার দিকে। নির্বাচনে ২৮৬টি ইলেকটোরাল ভোট পেয়ে বুশ পুনরায় প্রেসিডেন্ট হিসেবে জয়ী হয়েছিলেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্রেটের জন কেরি পেয়েছিলেন ২৫১টি। অর্থাৎ ৩৫ ভোট বেশি পেয়েছিলেন বুশ।
২০০৮ সালের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ৪ নভেম্বর। যার ফল ঘোষণা করা হয় ওই দিন রাত ১১টার দিকে। নির্বাচনে ৩৬৫টি ইলেকটোরাল ভোট পেয়ে ডেমোক্রেটের বারাক ওবামা জয়ী হয়েছিলেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী রিপাবলিকানের জন ম্যাককেইন পেয়েছিলেন ১৭৩টি। অর্থাৎ ১৯২ ভোট বেশি পেয়েছিলেন ওবামা।
২০১২ সালের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ৬ নভেম্বর। যার ফলও ঘোষণা করা হয় ওই দিন রাত ১১টা ১৭ মিনিটের দিকে। নির্বাচনে ৩৩২টি ইলেকটোরাল ভোট পেয়ে বারাক ওবামাই প্রেসিডেন্ট হিসেবে পুনরায় জয়ী হয়েছিলেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী রিপাবলিকানের মিট রমনি পেয়েছিলেন ২০৬টি। অর্থাৎ ১২৬ ভোট বেশি পেয়েছিলেন ওবামা।
২০১৬ সালের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল ৮ নভেম্বর। যার ফল ওই দিন রাত আড়াইটার দিকে ঘোষণা করা হয়। নির্বাচনে ৩০৪টি ইলেকটোরাল ভোট পেয়ে রিপাবলিকানের ডোনাল্ড ট্রাম্প জয়ী হয়েছিলেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী ডেমোক্রেটের হিলারি ক্লিনটন পেয়েছিলেন ২২৭টি। অর্থাৎ ৭৭ ভোট বেশি পেয়েছিলেন ট্রাম্প।
নিউইয়র্ক টাইমসের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে ‘কি-ফেক্টর’ রাজ্যগুলোর একটি ছাড়া বাকিগুলোতে বাইডেনই এগিয়ে আছেন। রাজ্যগুলো হলো— জর্জিয়া, পেনসিলভেনিয়া, অ্যারিজোনা, নেভাদা ও উত্তর ক্যারোলিনা। এবার বাইডেন ও ট্রাম্পের মধ্যকার ইলেকটোরাল ভোটের ব্যবধান অনেক বেশি হবে বলেই ধারণা করছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা বলছেন, এবারও শেষমেশ সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হতে পারেন ট্রাম্প।
আরও পড়ুন:
ট্রাম্পকে শান্ত থাকার আহ্বান জার্মানির, নীরব যুক্তরাজ্য
জর্জিয়ায় ভোট পুনরায় গণনা হবে
পেনসেলভেনিয়ায় ট্রাম্পকে পেছনে ফেললেন বাইডেন
‘ব্যর্থতার দায় রিপাবলিকানদের “দুর্বল” সমর্থন’
ফিলাডেলফিয়ায় ভোট গণনা কেন্দ্রে হামলার পরিকল্পনা, তদন্তে নেমেছে পুলিশ
জর্জিয়া ও পেনসেলভেনিয়াতে হারলে ট্রাম্পের সম্ভাবনা শেষ
২৪ ঘণ্টায় ট্রাম্পের ১৬ টুইট, ৭টিই ‘বিভ্রান্তিকর’
ফিলাডেলফিয়ার ভোট গণনা বন্ধে ট্রাম্পের আবেদন খারিজ
জর্জিয়ায় ৯১৭ ভোটে এগিয়ে বাইডেন: এপি
‘মিথ্যা’ দাবি, ট্রাম্পের সংবাদ সম্প্রচার বন্ধ করে দিলো ৩ টিভি চ্যানেল
‘সহিংস’ বক্তব্যের কারণে ট্রাম্প সমর্থকদের গ্রুপ সরিয়ে ফেলেছে ফেসবুক
Comments