কেবল একা খাব তা নয়, সবাইকে নিয়ে, সবাইকে দিয়ে খাব: প্রধানমন্ত্রী

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ শনিবার দেশ থেকে দারিদ্র্য নির্মূলে বহুমুখী গ্রাম সমবায় সমিতি গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন।
PM-1.jpg
জাতীয় সমবায় দিবস উদযাপন এবং জাতীয় সমবায় পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। ছবি: পিআইডি

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ শনিবার দেশ থেকে দারিদ্র্য নির্মূলে বহুমুখী গ্রাম সমবায় সমিতি গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েছেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এটা পরীক্ষিত যে, বহুমুখী গ্রাম সমবায় যদি আমরা গড়ে তুলতে পারি, তাহলে বাংলাদেশে কোনো দারিদ্র থাকবে না। দারিদ্রটা সম্পূর্ণ নির্মূল হবে। সেটা আমরা করতে পারব।’

একইসঙ্গে তিনি সমবায়ের ক্ষেত্রে নারীদেরকে আরও বেশি করে এগিয়ে আসার এবং সমবায়ীদের আরও আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান।

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সকালে ৪৯তম জাতীয় সমবায় দিবস ২০২০ উদযাপন এবং জাতীয় সমবায় পুরস্কার ২০১৯ প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে এ কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত মূল অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন।

সংবিধানে জাতির পিতা সমবায়ের কথা বলে গেছেন এবং তিনি বাধ্যতামূলক বহুমুখী সমবায়ের কথাও বলেছেন উল্লেখ করে সরকার প্রধান বলেন, ‘জাতির পিতা জানতেন কীভাবে বাংলাদেশের উন্নতি হবে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘তার সরকারের প্রচেষ্টায় সমবায় সমিতি এবং সমবায়ীদের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে এবং বর্তমানে সমিতির সংখ্যা ১ লাখ ৯০ হাজার ৫৩৪টি এবং এর সদস্য সংখ্যা ১ কোটি ১৪ লাখ ৮৩ হাজার ৭৪৭ জনে উন্নীত হয়েছে।’

বর্তমানে সমবায়ের মোট সদস্যের মধ্যে মাত্র ২৩ শতাংশ নারী হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী সমবায় কার্যক্রমে নারীদের সম্পৃক্ততা আরও বৃদ্ধি করার আহ্বান জানান।

তিনি বলেন, ‘আরও বেশি করে নারীদের সমবায় কার্যক্রমে এগিয়ে আসা উচিত বলে আমি মনে করি। কারণ সমাজের অর্ধেক অংশই তো নারী। নারীরা যদি বেশি করে এগিয়ে আসে, তাহলে দুর্নীতি একটু কমবে এবং কাজ বেশি হবে এবং প্রতিটি পরিবার উপকৃত হবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘কাজেই আমি মেয়েদেরকে আরও সামনে এগিয়ে আসার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।’

সমবায়ীদের আন্তরিকতার সঙ্গে কর্তব্য পালনের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সমবায়ের মাধ্যমেই দেশকে উন্নত করার জাতির পিতার নীতিতেই আমরা বিশ্বাসী।’

তিনি আরও বলেন, ‘কাজেই যারা সমবায়ের সঙ্গে জড়িত, আমি আপনাদের অনুরোধ করব- বড় লাভের আশা না করে আপনারা আন্তরিকতার সঙ্গে দায়িত্ববোধ নিয়ে কাজ করবেন, যাতে এটা একটা বড় স্থায়ী, উৎপাদনমুখী এবং লাভজনক প্রতিষ্ঠান হয়। যাতে প্রত্যেকেই লাভের অংশটা পায়।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘কেবল একা খাব তা নয়, সবাইকে নিয়ে, সবাইকে দিয়ে খাব, সবাইকে নিয়েই কাজ করব, সেই চিন্তা-ভাবনাটাই সমবায়ে সব থেকে বেশি প্রয়োজন। আপনারা সেটাই করবেন-সেটাই আমরা চাই।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা সমবায়ী তাদের প্রত্যেকেরই এখানে একটি বড় ভূমিকা রয়েছে। সেভাবেই আপনারা কাজ করে যাবেন, যাতে বাংলাদেশকে আমরা ক্ষুধামুক্ত এবং দারিদ্রমুক্ত হিসেবে গড়ে তুলতে পারি।’

প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে অনুষ্ঠানে এলজিআরডি ও সমবায় মন্ত্রী মো. তাজুল ইসলাম এবং প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য সমবায় পুরস্কার ২০১৯ বিজয়ীদের মাঝে বিতরণ করেন।

সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. রেজাউল আহসান স্বাগত বক্তৃতা করেন। সমবায় অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. আমিনুল ইসলাম এবং বাংলাদেশ ইউনিয়নের সভাপতি শেখ নাদির হোসেন লিপু মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন।

দেশের সমবায় খাতের উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে অনুষ্ঠানে একটি ভিডিও ডকুমেন্টারিও প্রচারিত হয়। সমবায় অধিদপ্তর প্রকাশিত ‘সমবায়ের সাফল্য গাঁথা’ শীর্ষক একটি বইয়ের মোড়কও অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী উন্মোচন করেন।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘অনেক ঘাত-প্রতিঘাত এবং রক্তের বিনিময়ে আমরা যেমন স্বাধীনতা অর্জন করেছি, তেমনি গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতেও অনেক ত্যাগ ও সংগ্রাম করতে হয়েছে। আর আজ আওয়ামী লীগ সরকারে রয়েছে বলেই বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘আমরা আমাদের প্রবৃদ্ধি প্রায় ৮ শতাংশের ওপরে অর্জন করছিলাম। দারিদ্রের হার ৪০ ভাগ থেকে ২০ দশমিক ৫ ভাগে নামিয়ে এনেছি। মাথাপিছু আয় ২০৬৪ ডলারে উন্নীত করেছি। করোনা না দেখা দিলে হয়তো আরও ভালো করতে পারতাম।’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘জনগণ ভোট দিয়ে আমাদের নির্বাচিত করায় এবং জাতির পিতার পদাঙ্ক অনুসরণ করে চলেছি বলেই আমরা আজ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা অর্জন করতে পেরেছি।’

তিনি এসময় শীতের আগমনের সঙ্গে করোনাভাইরাসের প্রকোপ বৃদ্ধি সম্পর্কে পুনরায় সবাইকে সতর্ক করেন এবং স্বাস্থ্যমত-বিধি অনুসরণের আহ্বান জানান। মাস্ক ছাড়া ঘরের বাইরে যেন কেউ বের না হন, সেদিকে দৃষ্টি রেখে নিজেকে এবং অপরকে নিরাপদ রাখার আহ্বানও পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

DMCH doctors threaten strike after assault on colleague

A doctor at Dhaka Medical College Hospital (DMCH) was allegedly assaulted yesterday after the death of a private university student there, with some of his peers accusing the physicians of neglecting their duty in his treatment

5h ago