মার্কিন নির্বাচন: ডেমোক্রেটরা এগিয়ে প্রতিনিধি পরিষদে, সিনেটে রিপাবলিকানদের সম্ভাবনা
যুক্তরাষ্ট্রজুড়ে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের পাশাপাশি চলছে ফেডারেল রাজ্য ও স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আইনসভাকে বলা হয় কংগ্রেস। এটি দুই কক্ষবিশিষ্ট। এর নিম্নকক্ষকে ‘হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভ’ বা প্রতিনিধি পরিষদ ও উচ্চকক্ষকে ‘সিনেট’ বলা হয়।
প্রেসিডেন্ট পদে ডেমোক্রেটিক প্রার্থী জো বাইডেন এগিয়ে থাকলেও অন্যান্য নির্বাচনগুলোতে দুই দলের মধ্যে চলছে তুমুল প্রতিযোগিতা।
ডেমোক্র্যাটদের দখলে প্রতিনিধি পরিষদ
ধারণা করা হচ্ছে, কংগ্রেসের হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভ বা প্রতিনিধি পরিষদ ডেমোক্রেটদের দখলেই থাকবে।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি পরিষদে ৪৩৫ টি আসন রয়েছে এবং প্রতিটি আসনে প্রতি দুই বছরে একবার নির্বাচন হয়। সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে হলে ২১৮ আসনে জয়ী হতে হয়।
এখন পর্যন্ত, প্রতিনিধি পরিষদে ২১০টি আসনে জয় নিয়ে এগিয়ে আছেন ডেমোক্রেটরা। অন্যদিকে, রিপাবলিকানরা পেয়েছেন ১৯৭টি আসন।
এ বছর ৫০টি রাজ্যে ভোটাররা হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভের সদস্যদের ভোট দিয়েছেন।
সিনেটে রিপাবলিকানদের সম্ভাবনা
এবছর যুক্তরাষ্ট্রে ৩৫টি আসনে সিনেট নির্বাচন হচ্ছে। এই ৩৫টির মধ্যে প্রায় এক ডজন আসনে দুই দলের মধ্যে তুমুল প্রতিযোগিতা চলছে। সিনেটে আগে থেকেই রিপাবলিকানরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। তারা ৫৩-৪৭ আসনে এগিয়ে ছিলেন। এ নির্বাচনে সিনেটের সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে হলে ডেমোক্র্যাটদের চারটি আসনে জয়ী হওয়া প্রয়োজন।
নির্বাচনের শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত, সিনেটে কোলোরাডোতে একটি আসন হারিয়েছে রিপাবলিকানরা, আবার অ্যালাবামায় একটি পেয়েছেও। এখন পর্যন্ত, সিনেটে দুই দলই সমান-সমান অবস্থানে আছে। তবে, ধারণা করা হচ্ছে, সিনেটে রিপাবলিকানরাই সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধরে রাখবেন।
এ বছর ডেলাওয়ার থেকে প্রথম ট্রান্সজেন্ডার সদস্য হিসেবে সিনেটে জয় পেয়েছে ডেমোক্র্যাট স্যারা ম্যাকব্রাইড। ৩০ বছর বয়সী এই প্রার্থী হিউমান রাইটস ক্যাম্পেইন নামে এলজিবিটিকিউ বা সমকামী, উভকামী ও হিজড়া সম্প্রদায়ের অধিকার নিয়ে আন্দোলনকারী একটি সংগঠনের প্রচার সচিব, ও প্রেসিডেন্ট ওবামা ক্ষমতায় থাকাকালীন তিনি হোয়াইট হাউসে শিক্ষানবীশ হিসাবে কাজ করেছেন। জয় পাওয়ার পরপরই সংবাদমাধ্যমের আলোচনায় আসেন তিনি।
গভর্নর নির্বাচনে এগিয়ে রিপাবলিকানরা
যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিটি স্বতন্ত্র রাজ্যে সরকারের নির্বাহী হিসেবে গভর্নর কাজ করে থাকেন। এ বছর যুক্তরাষ্ট্রের ১১টি রাজ্য ও দুটি অঞ্চল- পুয়ের্তো রিকো ও আমেরিকান সামোয়াতে ভোটাররা গভর্নর নির্বাচন করেছেন। রাজ্যগুলোতে এবারের ভোটে রিপাবলিকরা এগিয়ে।
হোয়াইট হাউজের পথে বাইডেন
যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট ও ভাইস প্রেসিডেন্ট সরাসরি ভোটারদের মাধ্যমে নির্বাচিত হন না। এখানে একজন ভোটার যখন তার পছন্দের প্রেসিডেন্ট প্রার্থীকে ভোট দিচ্ছেন, তখন তাকে মূলত তার অঙ্গরাজ্য-ভিত্তিক নির্বাচনে ভোট দিতে হয়।
মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে বিজয়ী হতে হলে প্রার্থীকে দু’ধরনের ভোট জিততে হয়। একটি হচ্ছে ‘পপুলার’ ভোট বা সাধারণ ভোটারদের ভোট। আরেকটি হচ্ছে ‘ইলেকটোরাল কলেজ’ বা নির্বাচকমন্ডলীর ভোট। প্রেসিডেন্ট প্রার্থীরা মূলত এই ইলেকটোরাল ভোট জেতার জন্যই লড়াই করেন।
নির্বাচনে ৫৩৮টি ইলেকটোরাল ভোটের মধ্যে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে প্রয়োজন ২৭০টি। নিউইয়র্ক টাইমসের সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, এ পর্যন্ত ডেমোক্রেট প্রার্থী জো বাইডেন ২৫৩টি ইলেকটোরাল ভোট পেয়েছেন। অন্যদিকে, রিপাবলিকান প্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প পেয়েছেন ২১৪টি। তবে, কোনো কোনো গণমাধ্যম অ্যারিজোনায় বিজয় দেখিয়ে বাইডেনের ইলেকটোরাল কলেজ ভোটের সংখ্যা ২৬৪ দেখিয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গরাজ্যগুলোতে এখনো ভোট গণনা চলছে। সেগুলো হলো— পেনসিলভানিয়া, জর্জিয়া, অ্যারিজোনা, নেভাদা, নর্থ ক্যারোলাইনা ও আলাস্কা। রাজ্যগুলোতে মোট ৭১টি ইলেকটোরাল ভোট রয়েছে।
পেনসিলভানিয়ায় ইতোমধ্যেই ট্রাম্পকে ছাড়িয়ে কয়েক হাজার ভোটের ব্যবধানে এগিয়ে গেছেন বাইডেন। আরও তিনটি গুরুত্বপূর্ণ রাজ্য- জর্জিয়া, অ্যারিজোনা এবং নেভাডাতেও এগিয়ে আছেন তিনি।
Comments