আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে বিদায় নিচ্ছেন চিগাম্বুরা

elton chigumbura
ছবি: টুইটার

দীর্ঘ ১৬ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের ইতি টানতে যাচ্ছেন জিম্বাবুয়ের তারকা অলরাউন্ডার এলটন চিগাম্বুরা। পাকিস্তানের বিপক্ষে চলমান তিন ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ শেষে জাতীয় দলের জার্সিতে আর দেখা যাবে না তাকে।

শনিবার সিরিজের প্রথম ম্যাচের আগে অবসরের সিদ্ধান্ত জানিয়েছেন ৩৪ বছর বয়সী চিগাম্বুরা। বারবার চোটের হানায় ক্যারিয়ার বাধাগ্রস্ত হওয়ায় এবং নতুনদের জন্য জায়গা ছেড়ে দিতে সর্বোচ্চ পর্যায়ের ক্রিকেট থেকে সরে দাঁড়াচ্ছেন তিনি।

এক বিবৃতিতে জিম্বাবুয়ে ক্রিকেট (জেডসি) জানিয়েছে, ‘জিম্বাবুয়ের সাবেক অধিনায়ক এলটন চিগাম্বুরা চলমান পাকিস্তান সফর শেষে ক্রিকেট থেকে অবসর নিতে চলেছেন।’

জিম্বাবুয়ের ইতিহাসের অন্যতম সেরা এই ক্রিকেটার এখন পর্যন্ত মোট ১৪ টেস্ট, ২১৩ ওয়ানডে ও ৫৫ টি-টোয়েন্টি খেলেছেন। তিন সংস্করণ মিলিয়ে তার রান ৫ হাজার ৭৮২ ও উইকেট ১৩৮টি। ওয়ানডেতে জিম্বাবুয়ের হয়ে তার চেয়ে বেশি রান আছে কেবল ফ্লাওয়ার ভাইদের (অ্যান্ডি ও গ্রান্ট)।  এই সংস্করণে ৪ হাজার রান ও ১০০ উইকেটের ডাবল নেওয়া মাত্র দ্বিতীয় জিম্বাবুইয়ান ক্রিকেটার তিনি। প্রথম ব্যক্তি ছিলেন গ্রান্ট ফ্লাওয়ার।

চিগাম্বুরার ক্যারিয়ারের শুরুটা হয়েছিল ফাস্ট বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে। পরবর্তীতে পাওয়ার হিটার হিসেবে নজর কাড়েন তিনি। সমসাময়িকদের মধ্যে তিনিই ছিলেন জিম্বাবুয়ের সবচেয়ে আগ্রাসী ব্যাটসম্যান।

২০০৪ সালে যখন এক ঝাঁক তারকা খেলোয়াড়ের অবসরে টালমাটাল হয়ে পড়েছিল জিম্বাবুয়ের ক্রিকেট, তখন আন্তর্জাতিক মঞ্চে অভিষেক হয়েছিল চিগাম্বুরার। জাতীয় দলে জায়গা পাকা করতে এরপর খুব বেশি সময় নেননি তিনি। ওই বছরের মে মাসে অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ওয়ানডেতে ৯০ বলে ৭৭ রানের দারুণ এক ইনিংস তার পথচলাকে করেছিল আরও মসৃণ।

তবে আফসোসের জায়গাও কম নয়। ব্যাটিং প্রতিভার বিচ্ছুরণ কমই দেখাতে পেরেছেন চিগাম্বুরা। মিডল কিংবা লোয়ার মিডল অর্ডারে প্রতিপক্ষের বোলারদের জন্য হুমকি হলেও ধারাবাহিকতা ছিল না। তবে জিম্বাবুয়ের ক্রিকেটের স্মরণীয় অনেকগুলো মুহূর্তের সঙ্গে জুড়ে আছে তার নাম।

২০০৭ সালের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে অঘটনের জন্ম দিয়েছিল জিম্বাবুয়ে। ওই ম্যাচে ২০ রানে ৩ উইকেট নিয়েছিলেন চিগাম্বুরা। ২০১৫ সালে পাকিস্তান ও ভারতের বিপক্ষে টানা দুটি ওয়ানডেতে সেঞ্চুরি করেছিলেন তিনি। পরের বছর ভারতের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে ২ রানের নাটকীয় জয়ে ২৬ বলে ৫৪ রানের অপরাজিত টর্নেডো ইনিংস এসেছিল তার ব্যাট থেকে।

অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপে জিম্বাবুয়ের প্রতিনিধিত্ব করার পাশাপাশি দুবার ৫০ ওভারের বিশ্বকাপেও খেলেছেন চিগাম্বুরা। অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের মাটিতে ২০১৫ সালের আসরে দলকে দিয়েছিলেন নেতৃত্ব।

চিগাম্বুরার শেষের শুরুটা অবশ্য ভালো হয়নি। এদিন রাওয়ালপিন্ডিতে প্রথম টি-টোয়েন্টিতে ৬ উইকেটে হেরেছে তার দল। ৭ বল হাতে রেখে অনায়াস জয়ে সিরিজে এগিয়ে গেছে স্বাগতিক পাকিস্তান। বোলিংয়ের সুযোগ না পেলেও ব্যাট হাতে ২ চার ও ১ ছক্কায় ১৩ বলে ২১ রান করেন চিগাম্বুরা।

Comments