বিশ্ব নেতাদের অভিনন্দনে ভাসছেন বাইডেন

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জো বাইডেনের জয়ে স্বাগত জানিয়েছেন বিশ্ব নেতারা। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনসহ অনেকেই আশা করছেন ডেমোক্র্যাটিক প্রেসিডেন্টের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের সম্পর্কের আরও উন্নয়ন হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বৈশ্বিক ইস্যুতে নতুন করে দৃষ্টি দেওয়ার পাশাপাশি, করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রকে শক্তিশালী সহযোগী হিসেবে পাওয়া যাবে।
Joe Biden
জো বাইডেন। ছবি: রয়টার্স

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জো বাইডেনের জয়ে স্বাগত জানিয়েছেন বিশ্ব নেতারা। কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো, ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনসহ অনেকেই আশা করছেন ডেমোক্র্যাটিক প্রেসিডেন্টের মাধ্যমে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে তাদের সম্পর্কের আরও উন্নয়ন হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বৈশ্বিক ইস্যুতে নতুন করে দৃষ্টি দেওয়ার পাশাপাশি, করোনাভাইরাস মহামারি মোকাবিলায় যুক্তরাষ্ট্রকে শক্তিশালী সহযোগী হিসেবে পাওয়া যাবে।

প্রেসিডেন্ট হিসেবে গত চার বছরে ডোনাল্ড ট্রাম্প বহু দশকের আমেরিকান পররাষ্ট্র নীতিকে পাল্টে ইউরোপীয় মিত্রদের সমালোচনা করেন। যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চুক্তি ও সংগঠন থেকে সরে আসে, মানবাধিকারের বিষয়ে দূরত্ব বজায় রাখে। বরং সৌদি আরব, হাঙ্গেরি ও তুরস্কের মতো কর্তৃত্ববাদী নেতৃত্বের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলে যুক্তরাষ্ট্র।

এ দিকে, সাবেক ভাইস প্রেসিডেন্ট বাইডেন ইউরোপ ও এশিয়ার মিত্রদের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নের লক্ষে আরও বহুপক্ষীয় সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।

কানাডা, যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, চীন, ভারত, ন্যাটো ও ইউরোপীয় কমিশনের নেতারা অভিনন্দন বার্তা প্রকাশ করেছে।

কানাডা

প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো আগামীর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ও ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে অভিনন্দন জানিয়ে এক বিবৃতিতে দেশ দুটির মধ্যে ‘অসাধারণ’ সম্পর্কের কথা উল্লেখ করেছেন।

তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বব্যাপী কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাব থেকে জনগণকে নিরাপদ ও সুস্থ রাখতে এবং বিশ্বজুড়ে শান্তি ও অন্তর্ভুক্তি, অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এবং জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ক কার্যক্রমের অগ্রগতিতে কাজ করতে ভিত্তিটি আরও মজবুত করবো।’

যুক্তরাজ্য

ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বাইডেনকে অভিনন্দন জানিয়ে জলবায়ু পরিবর্তন, বাণিজ্য ও নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন অগ্রাধিকারের কথা বলেছেন। তিনি প্রথম নারী, প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ ও প্রথম ভারতীয়-আমেরিকান ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে হ্যারিসকে নির্বাচনের বিষয়টিও তুলে ধরেন।

ফ্রান্স

প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাঁখো ভবিষ্যৎ মার্কিন প্রশাসনকে ফ্রান্সের সঙ্গে ‘একসঙ্গে’ কাজ করার আহ্বান জানান। এক টুইট বার্তায় তিনি বলেন, ‘আজকের চ্যালেঞ্জগুলো কাটিয়ে উঠতে আমাদের অনেক কিছু করার আছে।’

জার্মানি

চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মর্কেল বলেছেন, তিনি বাইডেনের সঙ্গে কাজ করার অপেক্ষায় আছেন।

মার্কিন নির্বাচনের ফলাফলকে স্বাগত জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাইকো মাশ। টুইটারে তিনি বলেন, ‘ট্রান্স-আটলান্টিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি নতুন সূচনার সম্ভাবনা আছে। একে তিনি ‘নিউ ডিল’ বলে উল্লেখ করেন।’

জার্মান টেলিভিশনে তিনি বলেন, ‘একটি বিষয় খুব নিশ্চিত যে, পরবর্তী আমেরিকার প্রেসিডেন্টের বেশ গুরুত্বপূর্ণ ও বিশেষ কিছু দায়িত্ব আছে। তা হচ্ছে মেরুকরণ শেষ করে সমাজকে আবার একত্রিত করা।’

‘পরবর্তী প্রেসিডেন্টের জন্য এটিই প্রয়োজন,’ যোগ করেন তিনি।

চীন

চীনের রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে বাইডেনের জয়ের বিষয়ে বিশেষভাবে কিছু প্রচার করা হয়নি। তবে, চীনের কমিউনিস্ট পার্টির সংবাদমাধ্যম পিপলস ডেইলি সম্প্রতি ট্রাম্পের করা একটি টুইট নিয়ে ব্যঙ্গ করে যেখানে ট্রাম্প প্রমাণ ছাড়াই বড় ব্যবধানে নির্বাচনে জয়ী হওয়ার দাবি করেন।

ভারত

প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী জো বাইডেনকে অভিনন্দন জানিয়ে এক টুইটে বলেন, ‘ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে ভারত-মার্কিন সম্পর্ক জোরদার করতে আপনার মূল্যবান অবদান ছিলো। ভারত-মার্কিন সম্পর্ককে আরও উঁচুতে নিয়ে যেতে আমি আবারও একসঙ্গে নিবিড়ভাবে কাজ করার প্রত্যাশায় আছি।’

তিনি আমেরিকার ভবিষ্যৎ ভাইস প্রেসিডেন্ট হিসেবে হ্যারিসের নির্বাচিত হওয়াকে ‘অভিনব’ উল্লেখ করে একে ভারতীয়-আমেরিকানদের জন্য গৌরবের বিষয় বলে জানান।

ন্যাটো

সেক্রেটারি জেনারেল জেনস স্টলটেনবার্গ বাইডেনকে নিরাপত্তা ব্যবস্থার একজন ‘জোর সমর্থক’ উল্লেখ করে এক বিবৃতিতে বলেন, ‘একটি শক্তিশালী ন্যাটো উত্তর আমেরিকার এবং ইউরোপের জন্য খুবই সহায়ক।’

ইউরোপীয় কমিশন

কমিশন প্রধান উরসুলা ভন ডার লিইন বলেন, কোভিড-১৯ মহামারিসহ বর্তমান বিশ্বের ইস্যুগুলো নিয়ে নতুন করে অংশীদারিত্বের বিশেষ প্রয়োজন ছিলো।

তিনি এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমাদের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নতুন প্রশাসন ও নতুন কংগ্রেসের সঙ্গে সহযোগিতা জোরদার করতে ইউরোপীয় কমিশন প্রস্তুত আছে।’

ইসরাইল

ইসরাইলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু টুইটারে বাইডেন ও হ্যারিসকে অভিনন্দন জানান। তিনি জানান, দু’দেশের মধ্যে ‘বিশেষ জোট’ জোরদার করতে তাদের সঙ্গে কাজ করার অপেক্ষায় আছেন তিনি।

পাকিস্তান

প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান বলেছেন, ‘আফগানিস্তানে শান্তি প্রতিষ্ঠায় বাইডেনের সঙ্গে কাজ করার অপেক্ষায় আছি।’

কাতার

কাতারের আমির শেখ তামিম বিন হামাদ আল থানি নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট বাইডেন ও ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসকে জানিয়ে বলেন, ‘আমাদের দু’দেশের সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ ও মজবুত করতে চাই।’

ইরান

ইরানের ভাইস প্রেসিডেন্ট ইশাঘ জাহাঙ্গিরি বলেছেন, বাইডেনের প্রত্যাশিত জয়ে ‘ধ্বংসাত্মক মার্কিন নীতিমালা’ পরিবর্তনের প্রত্যাশা করছে ইরান। আমি মনে করি আমরা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ধ্বংসাত্মক নীতির পরিবর্তন দেখতে পাবো, আইনের শাসন এবং আন্তর্জাতিক বাধ্যবাধকতা এবং জাতির প্রতি সম্মান ফিরে আসবে।’

জর্দান

জদার্নের রাষ্ট্রীয় সংবাদ মাধ্যমে দেশটির রাজা দ্বিতীয় আবদুল্লাহ বাইডেনকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছেন।

ফিলিস্তিন

প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশনের সদস্য ও নেতা হানান আশ্রাবি টুইট করেন, ‘আমেরিকার অভ্যন্তরে বা বাইরে মানবিক, নৈতিক ও আইনি ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে ট্রাম্পিজমকে অবশ্যই সাবধানতার সঙ্গে তদন্ত ও এর প্রতিকার করতে হবে।’

জাপান

প্রধানমন্ত্রী ইয়াশিদো সুগা নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট বাইডেন ও ভাইস প্রেসিডেন্ট হ্যারিসকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেছেন, তিনি দু’দেশের জোটকে আরও জোরদার করতে নতুন প্রশাসনের সঙ্গে কাজ করার অপেক্ষায় আছেন।

‘আমি জাপান-মার্কিন জোটকে আরও জোরদার করতে এবং ইন্দো-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে এবং এর বাইরে শান্তি, স্বাধীনতা ও সমৃদ্ধি নিশ্চিত করতে আপনার সঙ্গে কাজ করার প্রত্যাশা করছি,’ টুইট করেন সুগা।

অস্ট্রেলিয়া

প্রধানমন্ত্রী স্কট মরিসন বলেছেন,‘অস্ট্রেলিয়া-মার্কিন জোট গভীর এ স্থায়ী মূল্যবোধের ভিত্তিতে নির্মিত। আমরা একসঙ্গে বিশ্বের অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছি। তাই আমি আপনার সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার অপেক্ষায় রয়েছি।’

নিউজিল্যান্ড

প্রধানমন্ত্রী জাসিন্ডা অ্যাডর্ন এক টুইটে বাইডেন ও হ্যারিসকে অভিনন্দন জানিয়েছেন।

তিনি বলেন, ‘আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অনেক সমস্যার মুখে আছে। আমরা আপনার ঐক্যের সঙ্গী হতে চাই। নিউজিল্যান্ড প্রত্যাশা করে আমার একসঙ্গে কাজ করার।’

আরও পড়ুন:

 

Comments

The Daily Star  | English

One month of interim govt: Yunus navigating thru high hopes

A month ago, as Bangladesh teetered on the brink of chaos after the downfall of Sheikh Hasina, Nobel Laureate Muhammad Yunus returned home to steer the nation through political turbulences.

6h ago