‘করোনাভাইরাস ক্রিকেটারদের ফিট থাকার সুযোগ করে দিয়েছে’

বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ে খেলা ক্রিকেটারদের প্রায় সবাই এই সময়ে ফিটনেসে এনেছেন দারুণ উন্নতি

করোনাভাইরাসের স্থবির সময়ে খেলা, অনুশীলন সবই ছিল বন্ধ। এরকম অবস্থায় পেশাদার খেলোয়াড়দের মেদবহুল হয়ে যাওয়ার শঙ্কা থাকে। তবে বাংলাদেশের সর্বোচ্চ পর্যায়ে খেলা ক্রিকেটারদের প্রায় সবাই এই সময়ে ফিটনেসে এনেছেন দারুণ উন্নতি। যা খারাপ সময়ের মধ্যেও সবচেয়ে আশার জায়গা মানছেন প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটাররা। ফিজিক্যাল ট্রেনিং কোচ নিক লিও জানালেন ফিটনেস নিয়ে আশার খবর।

পাঁচ দলের বঙ্গবন্ধু টি-টোয়েন্টি কাপ সামনে রেখে জাতীয় দল ও এইচপি দলের বাইরের ক্রিকেটারদের ফিটনেস পরীক্ষার জন্য ডেকেছিল বিসিবি। সোমবার প্রথম দফার পরীক্ষায় অংশ নেন ৮০ জন ক্রিকেটার। মঙ্গলবার আরও ৩১ জন দেবেন এই পরীক্ষা।।

এদিন কথা থাকলেও নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেরা সাকিব আল হাসান ফিটনেস পরীক্ষা দেবেন বুধবার। আর নাম থাকলেও চোটের কারণে ফিটনেস পরীক্ষায় অংশ নিতে পারেননি অলক কাপালি।

বাকিদের নিয়ে সকাল ১০টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত চলে ফিটনেসের ‘বিপ টেস্ট’। ১২ নভেম্বর টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের ড্রাফটে থাকতে বিপ টেস্টে নূন্যতম ১১ স্কোর করার বাধ্যবাধকতা দেওয়া হয়। যাতে প্রায় সবাই ভালো করেছেন বলে জানান ফিজিক্যাল ট্রেনিং কোচ নিক লি,  ‘প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটারদের অবস্থা দেখতে চেয়েছিলেন জাতীয় নির্বাচকরা। দেখা দরকার ছিল তারা টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্টের জন্য কতটা প্রস্তুত। আমার মনে হয় সবাই জানে এই বছরটা কত কঠিন ছিল। করোনাভাইরাসের কারণে খেলোয়াড়দের অনুশীলনে অনেক বাধা এসেছে। আজকের ব্যাপারটি ছিল তাই সবাইকে এনে শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ করা। এখন পর্যন্ত আমরা যা দেখেছি, বেশিরভাগই ভাল করেছেন। অল্প কয়েকজনের সমস্যা হয়েছে। প্রায় সবাই লক্ষ্য পূরণ করেছে। আমার মনে হয় যে ফল আসছে তাতে নির্বাচকরা খুশি হবেন।’

নিক লি মনে করেন, এই সময়ে সব কিছু বন্ধ থাকলেও ক্রিকেটাররা নিজ উদ্যোগে কাজ করেছেন। আগের যেকোনো সময়ের চেয়ে ক্রিকেটারদের এখন ফিট মনে করছেন তিনি,  ‘আমার যেটি ভালো লেগেছে সেটি হলো, করোনাভাইরাসের কারণে তারা ক্রিকেট খেলতে না পারলেও এটি ক্রিকেটারদের আরও ফিট হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে। আপনি যদি বেশিরভাগ খেলোয়াড়কে জিজ্ঞাসা করেন তাহলে তারা বলবে তারা আগের চেয়ে এখন বেশি ফিট। কারণ এই সময়ের মধ্যে তারা ক্রিকেট খেলতে পারেনি এবং ফিটনেসের দিকে মনোযোগ দিতে পেরেছিলো।’

জাতীয় ক্রিকেটার এনামুল হক জুনিয়র মনে করেন, এই লকডাউনের সবচেয়ে বড় পাওয়া খেলোয়াড়দের ফিটনেস,  ‘অবশ্যই ভাল হয়েছে। এই লকডাউনে বাংলাদেশের ক্রিকেটে সবচেয়ে ইতিবাচক দিক যদি বলি সেটা হচ্ছে খেলোয়াড়দের ফিটনেস। জাতীয় দল এবং জাতীয় দলের বাইরে যারা আছে সবারই ফিটনেস ভাল হয়েছে। যে ধাপ ধরে দেওয়া হয়েছিল বেশিরভাগই সেই ধাপ পেরিয়েছে। আমার মনে হয় বেশিরভাগ ১১ পার হয়েছে, অনেকে ১২ পৌঁছাতে পেরেছে।’ 

এনামুল নিজেও করেছেন ১২.২। শরীর থেকে বাড়তি মেদ ঝরিয়ে তাকে লাগছে বেশ ফুরফুরে। জুনায়েদ সিদ্দিকি, জহুরুল ইসলাম অমিরাও ছাড়িয়ে গেছেন ১২। 

শাহরিয়ার নাফীস জানান, জাতীয় দলের বাইরে থাকা ক্রিকেটাররাও এখন ফিটনেস নিয়ে অনেক সচেতন,  ‘গত দুই-তিন মৌসুম ধরে নির্বাচকরা বেধে দিয়েছিলেন জাতীয় লিগের জন্য সাড়ে ১০। এই টুর্নামেন্টের জন্য ১১। সব মিলিয়ে ক্রিকেটের জন্য এটা ইতিবাচক। খেলোয়াড়রা ফিটনেসের ব্যাপারে সচেতন হবে, বাসায় থাকলেও কাজ করবে। সবচেয়ে আশার ব্যাপার হলো আমি দ্বিতীয় রাউন্ডে ছিলাম। প্রথম রাউন্ডে সাতজন, দ্বিতীয় রাউন্ডে সাতজন। ১৪ জনের মধ্যে মাত্র ১ জন ১১ ছুঁতে পারেনি। বাকিরা পেরেছে। এর ধারা প্রমাণ হয় জাতীয় দলের বাইরে থাকা ক্রিকেটাররাও ফিটনেস নিয়ে অনেক সচেতন।’

 

Comments

The Daily Star  | English
Why university rankings should matter

Why university rankings should matter

While no ranking platform is entirely comprehensive or flawless, it is better to participate in reliable ones.

7h ago