‘উপাচার্যের কাজ কি বিশ্ববিদ্যালয়কে ১০০ বছর পেছনে নিয়ে যাওয়া’

DU.jpg
ঢাবি উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান, সাবেক উপাচার্য ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক সাদেকা হালিম এবং পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন। ছবি: সংগৃহীত

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) আগামী শিক্ষাবর্ষ (২০২১-২২) থেকে সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ‘ঘ’ ইউনিট ও চারুকলা অনুষদভুক্ত ‘চ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা না নেওয়ার প্রাথমিক সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডিন’স কমিটি। এ ছাড়া, কোনো বিশ্ববিদ্যালয় চাইলে ঢাবির অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে পারবে বলেও জানিয়েছে তারা।

গতকাল ডিন’স কমিটির সভায় উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান ‘ঘ’ ও ‘চ’ ইউনিট বন্ধের প্রস্তাব তোলেন। উচ্চমাধ্যমিকে শিক্ষার্থীরা যে তিন ধারায় (বিজ্ঞান, মানবিক ও ব্যবসায় শিক্ষা) পড়াশোনা করেন, তার আলোকেই ভর্তি পরীক্ষার তিনটি ইউনিট (ক, খ ও গ) রাখতে চান উপাচার্য। সভায় বেশিরভাগ ডিন প্রস্তাবের পক্ষে মত দেন। পরবর্তী একাডেমিক কাউন্সিল সভায় বিষয়টি চূড়ান্ত হবে। তবে চলতি শিক্ষাবর্ষে (২০২০-২১) আগের নিয়মেই পাঁচটি ইউনিটের আওতায় পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।

চূড়ান্ত না হলেও ঢাবির ডিন’স কমিটির প্রাথমিক এসব সিদ্ধান্ত ফলাও করে সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমসহ সর্বত্র চলছে আলোচনা-সমালোচনা।

এসব বিষয় নিয়ে আজ সোমবার দুপুরে ঢাবি উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান, সাবেক উপাচার্য ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক সাদেকা হালিম এবং পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুনের সঙ্গে দ্য ডেইলি স্টারের কথা হয়।

ঢাবি উপাচার্য মো. আখতারুজ্জামান বলেন, ‘গতকাল ডিনস কমিটির সভায় কোন ইউনিট রাখা হবে, কোন ইউনিট রাখা হবে না, এরকম কোনো শব্দ উচ্চারিত হয়নি। আমাদের শিক্ষার্থীরা উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ে যে তিনটি ধারায় অধ্যয়ন করে, সেই তিনটি বিভাগকে বিবেচনায় নিয়ে ভবিষ্যতে তিনটি ইউনিটের মাধ্যমে ভর্তি কার্যকর হবে। এতে শিক্ষার্থীদের মধ্যে ধারাভিত্তিক ও পাঠ্যপুস্তকভিত্তিক একটি মনস্কতা তৈরি হবে, অতিরিক্ত পরীক্ষার চাপ, পরীক্ষার সংখ্যা ও কোচিং নির্ভরতা কমবে।’

তিনি বলেন, ‘দুটি পরীক্ষা একই ধরনের, সে কারণে হয়তো ডিনরা এ কথাটি ভাবছেন। এটি এখনই না, ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের কথা মাথায় রেখে এ ধরনের প্রস্তুতি লাগবে। ডিনরা বিষয়টি এ কারণে বিবেচনায় এনেছেন, যাতে শিক্ষার্থীরা পাঠ্যপুস্তকমুখী হতে পারে। এবার আগের নিয়মেই ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া হবে। আমরা সামনের বিষয়টিকে চিন্তায় রাখি, যাতে হঠাৎ করে শিক্ষার্থীদের নতুন কোনো বিষয়ের সঙ্গে পরিচিত হতে না হয়।’

‘বিজ্ঞানের শিক্ষার্থী কেন “ঘ” ইউনিটের জন্য আলাদা করে সাধারণ জ্ঞানের প্রস্তুতি নেবে। তার তো বাংলা, ইংরেজি পড়াই আছে। তাদের বাড়তি চাপ প্রশমনের জন্য এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হচ্ছে। ডিনরা বিষয়টি নিয়ে ভবিষ্যতে আরও ভাববেন। সংগীত ও নাট্যকলায় আমরা যেভাবে শিক্ষার্থী ভর্তি করি, চারুকলার জন্য সে ধরনের পদ্ধতিই গ্রহণ করা হবে। এগুলো সৃজনশীল বিশেষায়িত ক্ষেত্র, সুতরাং সেভাবেই তাদের জন্য ব্যবস্থা রাখতে হবে। পরে ডিনরা বসে এর কৌশল বের করবেন। এ কারণেই আমরা এ ডিসকোর্সটি আগেই শুরু করেছি, যাতে বিষয়গুলো আরও স্পষ্ট ও পরিশীলিতভাবে আসতে পারে’, যোগ করেন তিনি।

উপাচার্য বলেন, ‘অনেকে ধারণা করতে পারেন, ঢাবিতে হয়তো আন্তঃবিভাগ বা গ্রুপ পরিবর্তন বন্ধ হয়ে গেল, এটি কিন্তু নয়। এখানে শুধু একই প্রকৃতির দুটি পরীক্ষার পরিবর্তে একটি পরীক্ষা নেওয়া হবে। আমিও নিজেও কিন্তু বিজ্ঞান বিভাগ থেকে এসে কলা অনুষদে পড়েছি।’

ঢাবির অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলো চাইলে শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে পারবে, এ সিদ্ধান্তের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘এই অংশটি আমি বলতে পারব না। আমি আমাদের অংশটি বলতে পারছি। এই অংশটি জানি না।’

ঢাবির সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ‘আমি গণমাধ্যম থেকে জেনেছি, এটি ডিনস কমিটি একটি সুপারিশ, যা একাডেমিক কাউন্সিলে যাবে। তখন একাডেমিক কাউন্সিল চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে। তবে তারা কোন যুক্তিতে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিচ্ছে, আমি ঠিক জানি না।’

তিনি বলেন, ‘প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ভর্তি করার ক্ষেত্রে স্বতন্ত্র সিদ্ধান্ত নেওয়ার এখতিয়ার আছে। কোনো বিশ্ববিদ্যালয়কেই বলা উচিত না যে, আপনারা আমাদের অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে শিক্ষার্থী নেন। প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় স্বাধীন এবং স্বায়ত্তশাসিত। তারা নিজেদের মতো করেই শিক্ষার্থী ভর্তি করবে। তবে বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যদি চায়, যৌথভাবে বা ‘গুচ্ছ’ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা নেবে, তাহলে তারা তা করতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) সমন্বয় করে একটি প্রক্রিয়া করতে পারে।’

‘সেখানে একটি বিশ্ববিদ্যালয় কোনোভাবেই অন্য বিশ্ববিদ্যালয়কে অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে শিক্ষার্থী নেওয়ার কথা বলতে পারে না। তারা ইউজিসির কাছে এ প্রস্তাবটি দিতে পারে। পরে ইউজিসি হয়তো সেখানে সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করতে পারে’, বলেন তিনি।

অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ‘শিক্ষার্থীরা উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় পাশ করে এসে প্রত্যাশিত বিষয়ে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের জন্য নির্দিষ্ট ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা দেয়। কোন ইউনিটে কোন যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষার্থী আবেদন করতে পারবে ও পরীক্ষা দেবে, এটি তো নিশ্চয়ই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত দেবে। আমি মনে করি, একাডেমিক কাউন্সিলের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীদের বিভাগ পরিবর্তনের একটি সুযোগ থাকতে হবে। তবে সেটি কীভাবে হবে, তা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই বিবেচনায় নিতে হবে। তবে ‘ঘ’ এবং ‘চ’ ইউনিটের অপশনটি রাখা বাঞ্ছনীয়।’

তিনি বলেন, ‘চারুকলার শিক্ষা পদ্ধতি যেহেতু বিশেষায়িত, সেক্ষেত্রে তাদের জন্য আলাদা একটি পরীক্ষা নেওয়া অত্যন্ত প্রয়োজন। ব্যবহারিক পরীক্ষা না নিয়ে কেবল নম্বরের ভিত্তিতে চারুকলায় ভর্তি নেওয়া হলে, শিক্ষার্থীরা সত্যিকার অর্থে চারুকলার লেখাপড়ার সঙ্গে যুক্ত হতে পারবে না। এখানে নম্বরের চেয়েও শিক্ষার্থীদের সৃজনশীলতা ও অঙ্কনের বিষয়টি অধিক গুরুত্বপূর্ণ।’

‘তেমনি সামাজিক বিজ্ঞান ও কলা অনুষদে এমন কিছু সৃজনশীল বিভাগ আছে, যেমন: নৃত্যকলা, সংগীত, নাট্যকলা, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা এবং টেলিভিশন ও চলচ্চিত্র অধ্যয়ন বিভাগের সঙ্গে উচ্চমাধ্যমিক পর্যায়ের শিক্ষার কোনো সরাসরি সম্পৃক্ততা নেই। সেক্ষেত্রে এসব বিষয়ে ভর্তি নেওয়ার ক্ষেত্রে আলাদা ও বিশেষ পরীক্ষা নেওয়া প্রয়োজন বলে মনে করি’, যোগ করেন তিনি।

তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের বুঝতে হবে যে, মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষা ও উচ্চ শিক্ষার ক্ষেত্র এক নয়। সেক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষা এমনভাবে নেওয়া উচিত, যাতে করে শিক্ষার্থীরা তাদের আগ্রহের বিষয়ে নিয়ে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ পায়। ইউনিট কমিয়ে দিয়ে নম্বরের ভিত্তিতে যেকোনো বিষয়ে ভর্তি করিয়ে নেওয়া কতোটা যুক্তিসঙ্গত, তা নিয়ে প্রশ্ন থেকেই যায়।’

ঢাবির সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক সাদেকা হালিম বলেন, ‘গতকাল ডিনস কমিটির নির্ধারিত তিনটি এজেন্ডা ছিল। তার মধ্যে এ বিষয়টি এজেন্ডায় ছিল না। তবে বিষয়টি নিয়ে কাল ডিনস কমিটিতে আলোচনা হওয়ায় আমি অবাক হয়েছি। কাল আলোচনায় প্রাধান্যই পেয়েছে যে, আমরা গুচ্ছ পদ্ধতিতে পরীক্ষায় অংশ নেব, কি নেব না। ইতোমধ্যে যেহেতু চারটি বিশ্ববিদ্যালয় তাদের নিজস্ব স্বকীয়তা নিয়ে কাজ করতে চায় বলে জানিয়ে দিয়েছে। সভার একেবারে শেষ পর্যায়ে উপাচার্য বিষয়টি তুললেন। তখন আমার মনে হলো- তিনি হয়তো ভেবেচিন্তে এ কথাটি বলছেন, কেননা কয়েকজন ডিনকেও উপাচার্যের সঙ্গে সুর মেলাতে দেখেছি।’

তিনি বলেন, ‘আমি শুধু একজন ডিন নই, আমি সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের প্রতিনিধিও। একজন উপাচার্য মিটিংয়ে বসে বলে দিলেন, আর আমি শুনলাম- আমার অনুষদে ভর্তি পরীক্ষা বন্ধ হয়ে গেল। এখানে ২৫ বছর ধরে ‘ঘ’ ইউনিটের পরীক্ষা হয়ে আসছে এবং কেন হয় তা মাল্টি ডিসিপ্লিনারি কমিটির সিদ্ধান্তেই বলা আছে। ঢাবিতে কোনো একটি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা হঠাৎ বন্ধ করার মালিক আমিও না, উপাচার্যও না। গায়ের জোরে একটি ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা বন্ধ করা যায় না। কেননা সেখানে তিনশ’র মতো শিক্ষক আছেন, তাদেরও মতামত আছে।’

‘বিষয়টি অবশ্যই একাডেমিক কাউন্সিলে উঠবে। সেখানে আমাদের শিক্ষকরা মতামত দেবেন। সে কারণে আজ সন্ধ্যা ৭টায় আমাদের অনুষদে ভার্চুয়াল সভা ডাকা হয়েছে’, বলেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘আমাদের আইটি সেলের প্রতিনিধি, বিজ্ঞান বিভাগের ডিনরা বলেছেন যে, যদি কোনো বিশ্ববিদ্যালয় চায় তাহলে তারা আমাদের অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে শিক্ষার্থী ভর্তি করাতে পারবে। কোনো ধরনের আলোচনা ছাড়াই তারা এ ধরনের পরামর্শ দিয়েছেন। এটি এক ধরনের ইগো এবং আমি মনে করি- সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের প্রতি ঈর্ষাকাতরতার কারণে এ ধরনের সিদ্ধান্তের পথে হাঁটা হচ্ছে।’

অধ্যাপক সাদেকা হালিম বলেন, ‘এই করোনাকালে অনলাইন শিক্ষার কার্যক্রমকে কীভাবে উন্নত করা যায়, জুম বা গুগল প্লাটফর্ম ব্যবহার করে কীভাবে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া যায়, সে বিষয়ে কোনো আলোচনা নেই। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় পর্যন্ত ক্লাস-পরীক্ষা নিচ্ছে, আমরা কেন পারছি না? আমরা তাহলে কি করতে পারি, তা না ভেবে আমরা বলে দিলাম ‘ঘ’ ও ‘চ’ ইউনিটের পরীক্ষা নেব না, বিষয়টি আশ্চর্যজনক।’

তিনি বলেন, ‘আমি আশা করেছিলাম, উপাচার্য অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমকে আরও আধুনিকায়ন করা, জুম প্লাটফর্ম ব্যবহার করে কেন ভর্তি পরীক্ষা নিতে পারছি না, কেন শিক্ষার্থীদের ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস দিতে পারছি না, স্বল্পমূল্যে ইন্টারনেট প্যাকেজ দেব বলেছিলাম, সেটি কেন করতে পারছি না, কথা দিয়েও সেসব না রেখে তিনি কথা বললেন দুটি ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষা না নেওয়ার বিষয়ে, এটি কেন? উপাচার্যের কাজ কী আসলে, বিশ্ববিদ্যালয়কে ১০০ বছর পেছনে টেনে নিয়ে যাওয়া?’

‘আমার মনে হয়, এসব বিষয়ে উপাচার্যকে শিক্ষকদের মধ্য থেকেই কয়েকজন ইন্ধন দিয়েছেন। এটি আমরা সুস্পষ্টভাবেই বুঝতে পারছি। এ ধরনের সিদ্ধান্ত অযৌক্তিক, হাস্যকর এবং ঢাবির গত ১০০ বছরের প্রাপ্তির সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ’, বলেন তিনি।

ঢাবির পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক কামরুল হাসান মামুন বলেন, ‘আমাদের দেশে এক বিভাগ থেকে আরেক বিভাগে যাওয়ার সুযোগটি তো একেবারেই বন্ধ। এই যে সামান্য একটা দরজা খোলা ছিল ‘ঘ’ ইউনিটের মাধ্যমে বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীদের অর্থনীতি, ইতিহাস অথবা বাংলায় পড়তে যাওয়া কিংবা অন্য বিভাগ থেকে বিজ্ঞানে পড়তে আসা। মানুষ তো এক জায়গায় বন্দি হতে পারে না। তার স্বাধীনতা থাকতে হবে। ছোট বেলাতেই যদি এ দরজাটি বন্ধ করে দেওয়া হয়, তাহলে তো আর বড় হয়ে সেটি খুলে না। এই সিদ্ধান্ত খুবই খারাপ হয়েছে। আপাতদৃষ্টিতেই আমার মনে হয়, এর চেয়ে খারাপ আর কিছু হতে পারে না। এক বিভাগ থেকে আরেক বিভাগে যাওয়ার দরজা আরও উন্মুক্ত করা উচিত।’

তিনি বলেন, ‘যেকোনো ক্ষেত্রে সুযোগ কখনো কমিয়ে আনতে হয় না। শিক্ষা গ্রহণের ক্ষেত্রে মানুষের সুযোগ আরও বাড়ানো প্রয়োজন। এ ধরনের সিস্টেম কেন তারা চালু করতে যাচ্ছেন, কাদের মাথা থেকে এ ধরনের সিদ্ধান্ত আসে, তা আমার বোধগম্য নয়।’

‘ঢাবির অপেক্ষমাণ তালিকা থেকে কেন অন্য বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থী নেবে? এই সিদ্ধান্তটির মানে ধরে নেওয়া যে, ঢাবিই সেরা। প্রথমত হলো, আমরা আগে নেব, তারপর যারা অপেক্ষমাণ থাকবে অন্যরা চাইলে তাদের নিতে পারে। দ্বিতীয় কথা হলো- আমি কি হনুরে! যদিও একটি সম্ভাবনা ছিল গুচ্ছ পদ্ধতির মাধ্যমে ভর্তি পরীক্ষা নেওয়া জন্য অন্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে সম্পৃক্ত করা। এই ঘোষণার মাধ্যমে সেই সম্ভাবনাটিকেও মেরে ফেলা হলো। এখন আর কেউ এ পদ্ধতিতে আসবে না। বরং ঢাবি প্রশাসনের উচিত ছিল, অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে এ সংক্রান্ত বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা এবং একটি যৌক্তিক সমাধানে আসা’, যোগ করেন তিনি।

Comments

The Daily Star  | English

How frequent policy shifts deter firms from going public

If a company gets listed, it will enjoy tax benefits, and this is one of the major incentives for them to go public..However, the government’s frequent policy changes have disheartened listed firms many times, as they faced higher tax rates once they got listed..It gave a clear, nega

2h ago