স্ত্রীকে সাহায্য করতে চাকরি ছাড়ছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম ‘সেকেন্ড জেন্টেলম্যান’
প্রথমবারের মতো ‘সেকেন্ড জেন্টেলম্যান’ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসে জায়গা করে নিতে চলেছেন প্রাথমিকভাবে নির্বাচিত প্রথম নারী ভাইস প্রেসিডেন্ট কমলা হ্যারিসের স্বামী ডগলাস এমহফ।
যুক্তরাষ্ট্রের নিয়ম অনুযায়ী, ভাইস প্রেসিডেন্টের স্ত্রী ‘সেকেন্ড লেডি’ হিসেবে পরিচিতি পেলেও এই প্রথম কোনো পুরুষ ‘সেকেন্ড জেন্টেলম্যান’ হতে যাচ্ছেন।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, হোয়াইট হাউসের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ পদের দায়িত্ব পালনে স্ত্রীকে সাহায্য করতে চাকরি ছাড়ছেন তিনি।
সংবাদমাধ্যম নিউইয়র্ক টাইমস জানিয়েছে, এক দশকেরও বেশি সময় ধরে আইন পেশায় জড়িত ডগলাস ক্রেগ এমহফ। তিনি ফার্মাসিউটিক্যাল জায়ান্ট মার্ক ও অস্ত্র ব্যবসায়ী ডোলারিয়ান ক্যাপিটালের মতো বড় বড় প্রতিষ্ঠানের মামলাগুলো দেখাশোনা করতেন।
২০১৭ সালে ডিএলএ পাইপার নামে একটি আইনবিষয়ক প্রতিষ্ঠানে যোগ দেন এমহফ।
বিশ্লেষকরা বলছেন, ডিএলএ পাইপার ওয়াশিংটনে লবিংয়ের ক্ষেত্রে বেশ সক্রিয় থাকায় নতুন প্রশাসনে নৈতিক আদর্শ ধরে রাখার ক্ষেত্রে বাইডেন-কমলার জন্য এটি একটি সমস্যা হতে পারে। তাই, এমহফের পদত্যাগের পেছনে এই ভাবনাটিও কাজ করতে পারে। আবার, শীঘ্রই তাকে হোয়াইট হাউসের গুরুত্বপূর্ণ কোনো পদেও দেখা যেতে পারে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।
স্ত্রীর পক্ষে নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে গত আগস্ট থেকেই ছুটিতে আছেন এমহফ।
২০১৪ সালে বিয়ে করেন কমলা হ্যারিস ও ডগলাস এমহফ। এটি ছিল কমলা হ্যারিসের প্রথম ও ডগলাস এমহফের দ্বিতীয় বিয়ে। তাদের দুজনেরই বয়স ৫৬ বছর।
২০১৯ সালের মে মাসে এলে ম্যাগাজিনকে কমলা হ্যারিস জানান, ডগলাসের আগের সংসারের ছেলেরা তাকে ‘মোমালা’ নামে ডাকেন।
ভারতীয় বংশোদ্ভূত কমলা সান ফ্রান্সিসকোর প্রথম ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নির পাশাপাশি প্রথম এশীয় বংশোদ্ভূত সিনেটরও নির্বাচিত হন।
বাইডেন তাকে রানিং মেট হিসেবে বেছে নেওয়ার পর প্রথম ভাষণে কমলা বলেছিলেন, ‘আমার পরিবার আমার কাছে সবকিছু। পেশাগত জীবনে আমি অনেক উপাধি পেয়েছি এবং অবশ্যই ‘ভাইস প্রেসিডেন্ট’ উপাধিও আমার কাছে মূল্যবান হয়ে উঠবে। কিন্তু, “মোমালা” ডাকটি আমার জীবনে সবচেয়ে বেশি অর্থপূর্ণ।’
ওয়াশিংটন পোস্টের কলামিস্ট পেতুলা বোরাক বলেন, ‘ডগ এমহফ “সেকেন্ড জেন্টেলম্যান’ হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গিতেও পরিবর্তন আনতে পারেন। তিনি এমন কিছু পরিবর্তন আনতে পারেন যা আমেরিকার প্রায় প্রতিটি পরিবারকে সহায়তা করতে পারে। আর সেটি হলো— স্বাভাবিকতা।’
স্ত্রীর ঐতিহাসিক জয় নিশ্চিত হওয়ার পরই তাকে জড়িয়ে ধরে অভিনন্দন জানিয়েছেন ডগলাস এমহফ। তিনি স্ত্রীকে জড়িয়ে ধরে একটি ছবি পোস্ট করেন টুইটারে। সেখানে লেখেন, ‘তোমাকে নিয়ে আমি গর্বিত।’
পেতুলা বোরাক আরও বলেন, ‘একজন শক্তিশালী নারীর স্বামী হিসেবে পরিচিতি পাওয়া, স্ত্রীকে সাহায্য করা এবং তাকে নিয়ে গর্ব করা যে স্বাভাবিক বিষয় সেটা তিনি সমাজকে জানাতে পারেন।’
আরও পড়ুন:
Comments