বাড়ছে হামের প্রকোপ, ২৩ বছরে রেকর্ড সংখ্যক মৃত্যু
গত ২৩ বছরের মধ্যে ২০১৯ সালে সবচেয়ে বেশি মানুষ হামে আক্রান্ত ও মারা গেছেন বলে জানিয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (ডব্লিউএইচও) ও যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টারস ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশন (সিডিসি)।
আজ বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক যৌথ প্রতিবেদনে সংস্থা দুটি জানিয়েছে, গত বছর বিশ্বজুড়ে প্রায় ৮ লাখ ৭০ হাজার মানুষ হামে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে মারা গেছেন প্রায় ২ লাখ ৭ হাজার ৫০০ জন।
বিশেষজ্ঞদের বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, এ বছর করোনা মহামারির কারণে হাম শনাক্তকরণ ও টিকাদান কর্মসূচি বিঘ্নিত হওয়ায় কয়েক মিলিয়ন শিশু এই রোগের ঝুঁকিতে আছে।
বিশ্বের সবচেয়ে সংক্রামক রোগগুলোর মধ্যে হাম একটি। এটি কোভিড ১৯, ইবোলা, যক্ষ্মা বা ফ্লুর চেয়েও বেশি সংক্রামক।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গত বছর হামে প্রাণহানির সংখ্যা ২০১৬ সালের তুলনায় অন্তত ৫০ শতাংশ বেশি।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রধান তেদরোস আধানম গেব্রিয়েসুস বলেছেন, ‘এসব তথ্য পরিষ্কার বার্তা দিচ্ছে যে, আমরা বিশ্বের প্রতিটি অঞ্চলে শিশুদের হাম থেকে রক্ষা করতে ব্যর্থ হচ্ছি।’
ডব্লিউএইচও’র হিসাব অনুযায়ী, চলতি মাস পর্যন্ত প্রায় ৯ কোটি ৪০ লাখ মানুষ হামের টিকার বাইরে থাকার ঝুঁকিতে রয়েছেন।
জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অপর্যাপ্ত টিকা দানের কারণেই বিশ্বজুড়ে এখন হামে মৃত্যু বাড়ছে।
গ্লোবাল ভ্যাকসিন জোটের প্রধান নির্বাহী শেঠ বার্কলে বলেন, ‘কোভিড ১৯ এর কারণে হামের টিকাদান কর্মসূচি বিপদজনকভাবে কমেছে।’
তবে করোনার সংক্রমণ ঠেকাতে যেসব সতর্কতামূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, সেগুলোর কারণেও অনেক অঞ্চলে হামের প্রভাব কমতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন।
গত বছর যে ১৮৪টি দেশের তথ্য নেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে নয়টি দেশেই বিশ্বজুড়ে মোট হামে আক্রান্তের ৭৩ শতাংশ পাওয়া গেছে। দেশগুলো হচ্ছে: সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক, গণপ্রজাতন্ত্রী কঙ্গো, জর্জিয়া, কাজাখস্তান, মাদাগাস্কার, নর্থ মেসিডোনিয়া, সামোয়া, টোঙ্গা ও ইউক্রেন।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এর আগে মূলত নিম্ন আয়ের দেশগুলোতে হামের ভয়াবহ প্রাদুর্ভাব দেখা গেলেও এখন ইউক্রেইন, নর্থ মেসিডোনিয়া, জর্জিয়া ও কাজাখস্তানের মতো মধ্য আয়ের দেশগুলো এ রোগে সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত দেশের তালিকায় ওপরের দিকে উঠে আসছে।
ব্রাজিল, মেক্সিকো ও ফিলিপাইনের মতো মধ্য আয়ের বেশ কয়েকটি দেশে হামের টিকার দুই ডোজের মধ্যে কোনো ডোজই নেয়নি এমন শিশুর সংখ্যাও বাড়ছে।
Comments