করোনা উপেক্ষা করে আনন্দে মাতল হাজারো দর্শক
ঘড়ির কাঁটায় বিকাল চারটা ছুঁইছুঁই। বাংলাদেশ-নেপালের দুটি ফিফা আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচের প্রথমটি মাঠে গড়াতে বাকি এক ঘণ্টার মতো। যে ম্যাচ দিয়ে আন্তর্জাতিক ফুটবলে ফিরেছে জেমি ডে-জামাল ভূঁইয়ারা। বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে আশপাশ এলাকা তখন মুখরিত ফুটবল অনুরাগীদের পদচারণায়। বড় একটা অংশের গায়ে শোভা পাচ্ছিল বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলের জার্সি।
ফিফা ও এএফসির নির্দেশনা অনুসারে, স্বাস্থ্যবিধি মেনে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন (বাফুফে) রেখেছিল মাঠে দর্শক ঢোকার ব্যবস্থা। করোনাভাইরাস মহামারির পর উপমহাদেশের কোনো স্বীকৃত খেলায় এই প্রথম মাঠে দেখা গেল দর্শক। ছাড়া হয়েছিল আট হাজার টিকেট। সুযোগটা লুফে নেয় ফুটবলপ্রেমীরা। লম্বা সময় পর আন্তর্জাতিক ফুটবল ফেরা বলে কথা! করোনাভাইরাস মহামারি শুরুর আগে সবশেষ গত জানুয়ারিতে বঙ্গবন্ধু গোল্ড কাপে খেলেছিল বাংলাদেশ।
বাফুফের পক্ষ বলা হয়েছিল, গ্যালারিতে মার্কিং করা থাকবে। দূরত্ব মেনে বসতে হবে। কিন্তু প্রত্যাশার তুলনায় দর্শক বেশি হওয়ার কারণে পূর্ব দিকের গ্যালারিতে সেটা অনুসরণ করা হলেও আবাহনী ও মোহামেডান গ্যালারিতে তার বালাই ছিল না।
স্বাস্থ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করতে সবগুলো গেট দিয়ে দর্শক প্রবেশের অনুমতি ছিল না। তাই স্বাভাবিকভাবেই ভিড় ছিল উন্মুক্ত গেটগুলোর সামনে। সময় যত গড়িয়েছে, ততই বেড়েছে দর্শক। অর্থাৎ আট হাজার টিকেট ছাড়ার কথা বলা হলেও গ্যালারিতে উপস্থিত মানুষের সংখ্যা ছিল তার চেয়ে বেশি। মহামারির সময়ে ঝুঁকি উপেক্ষা করেই হাজির হয় তারা।
ম্যাচ জুড়ে মাঠ মাতিয়ে রেখেছিল দর্শকরা। বাংলাদেশ আক্রমণে উঠলেই গর্জে ওঠে তারা। আর সুযোগ কাজে লাগাতে ব্যর্থ হলে সমস্বরে হাহাকারও চলেছে। একদল হাজির হয়েছিল বাদ্য-বাজনা নিয়ে। ম্যাচ শেষের অনেকটা সময় পরও তারা ছিল তৎপর।
শেষ পর্যন্ত, বাংলাদেশের ফুটবলারদের কাছ থেকে সেরা উপহারটাই পেয়েছে ভক্ত-সমর্থকরা। জয়। শুক্রবার ফিফা আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচে নেপালকে ২-০ গোলে হারিয়েছে জেমি ডের দল। প্রথমার্ধে নাবীব নেওয়াজ জীবনের লক্ষ্যভেদের পর দ্বিতীয়ার্ধে ব্যবধান বাড়ান বদলি মাহবুবুর রহমান সুফিল।
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম শতবার্ষিকীতে উৎসর্গ হয়েছে বাংলাদেশ-নেপালের দুটি প্রীতি ম্যাচের সিরিজ। দ্বিতীয় ও শেষ ম্যাচটি একই ভেন্যুতে আগামী মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত হবে।
Comments