চেয়ারম্যানের দাপটে অতিষ্ঠ উপজেলা প্রশাসন

লালমনিরহাটে ইউএনওকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ

Faruk_Imrul_Kayes_Lalmonirh.jpg
লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক ইমরুল কায়েস | ছবি: সংগৃহীত

লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক ইমরুল কায়েসের ক্ষমতার অপব্যবহার ও অনৈতিক আচরণে অতিষ্ঠ উঠেছেন প্রশাসনিক কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। জেলা প্রশাসকের কাছে উপজেলা নির্বাহী অফিসারসহ (ইউএনও) ১৮ জন কর্মকর্তা তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ করেছেন।

অভিযোগপত্রে বলা হয়েছে, আদিতমারী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ফারুক ইমরুল কায়েস নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে বিধি ও নীতিমালা লঙ্ঘন করে আসছেন। তিনি উপজেলা পরিষদের বিভিন্ন কর্মকাণ্ড— ভিজিডি (ভালনারেবল গ্রুপ ডেভেলপমেন্ট), মাতৃত্বকালী ভাতা, কৃষি প্রণোদনা, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর সুবিধাভোগীর জন্য বরাদ্দ আসা অর্থ থেকে থেকে নিজের অংশ দাবি করেন। প্রতিবাদ করলে সেই দপ্তরের কর্মকর্তাকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেন এবং মারধরের হুমকি দেন।

গত ১২ নভেম্বর মাসিক সমন্বয় সভায় ভিজিডি ও মাতৃত্বকালীন ভাতার তালিকায় নিজের অংশ দাবি করেন ইমরুল কায়েস। বিধি সম্মত না হওয়ায় ইউএনও মুহাম্মদ মনসুর উদ্দিন তা নাকোচ করে দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে সভা অসমাপ্ত রেখে চলে যান তিনি। এরপর ইমরুল কায়েস উপস্থিত থেকে তার লোকজনকে ইউএনও অফিসের সিসিটিভি ক্যামেরা খোলার নির্দেশ দেন। কারণে জানতে চাইলে তিনি মনসুর উদ্দিনকে অকথ্য ভাষায় গালি দেন। সেই সঙ্গে হুমকি দিয়ে বলেন, ‘বেশি কথা বললে পিটিয়ে নরসিংদী পাঠিয়ে দিবো। উপজেলা পরিষদ কি তোর বাবার সম্পত্তি, উপজেলা পরিষদ কি তুই চালাবি।’

গত বৃহস্পতিবার রাতে মনসুর উদ্দিনহ উপজেলার ১৮ জন কর্মকর্তা জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত অভিযোগ দেন। অভিযোগপত্রের অনুলিপি স্থানীয় সংসদ সদস্য সমাজকল্যাণমন্ত্রী ও রংপুর বিভাগীয় কমিশনারকে পাঠানো হয়েছে।

আদিতমারী উপজেলা প্রকৌশলী সোহেল রানা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘উপজেলা চেয়ারম্যানের অসদাচারণ, অনৈতিক কর্মকাণ্ড ও হুমকির কারণে চাকরি করা কঠিন হয়ে গেছে। কোনো কারণ ছাড়াই তিনি গালমন্দ করেন। ক্ষমতার অপব্যবহার করে তিনি জোড়পূর্বক অবৈধ কাজ করিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করেন।’

আদিতমারী উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তা রশিদা বেগম অভিযোগ করে বলেন, ‘সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা না নিলে উপজেলা চেয়ারম্যানের অত্যাচারে চাকরি করাটা কঠিন হয়ে উঠবে।’

আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুহাম্মদ মনসুর উদ্দিন বলেন, ‘আমরা সব দপ্তরের কর্মকর্তারা লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে বলে আমরা বিশ্বাস করি।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অভিযোগ অস্বীকার করেন ফারুক ইমরুল কায়েস। তিনি বলেন, ‘জনস্বার্থে গত অর্থবছরের সব দপ্তরের কাজের অগ্রগতি জানতে চাওয়ায় কর্মকর্তারা ক্ষুব্ধ হয়েছেন। ইউএনওসহ অন্য কর্মকর্তারা মিথ্যা অভিযোগ করেছেন। সুষ্ঠু তদন্ত হলে কর্মকর্তাদের অনিয়ম ও দুর্নীতি বেড়িয়ে আসবে।’

লালমনিরহাটের জেলা প্রশাসক মো. আবু জাফর দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ফারুক ইমরুল কায়েস উপজেলা আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন।

Comments

The Daily Star  | English

Interest payments, subsidies soak up almost half of budget

Interest payments and subsidies have absorbed nearly half of Bangladesh’s total budget expenditure in the first seven months of the current fiscal year, underscoring growing fiscal stress and raising concerns over public finances.

1h ago