আশা জাগিয়ে ফিরলেন তামিম, অনবদ্য হাফিজে জিতল লাহোর
চ্যালেঞ্জিং লক্ষ্য তাড়ায় দারুণ কিছুর ইঙ্গিত দিচ্ছিলেন তামিম ইকবাল। কিন্তু ইনিংস বড় করতে পারলেন না বাংলাদেশের বাঁহাতি তারকা। বিপদে পড়া দলকে টেনে তুলে পেশোয়ার জালমির বোলারদের উপর আগ্রাসন চালালেন মোহাম্মদ হাফিজ। তার অনবদ্য ইনিংসে দুর্দান্ত জয় পেয়ে ফাইনালের আশা টিকিয়ে রাখল লাহোর কালান্দার্স।
শনিবার রাতে পাকিস্তান সুপার লিগের (পিএসএল) এলিমিনেটর ম্যাচে পেশোয়ারকে ৫ উইকেটে হারিয়েছে লাহোর। টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৯ উইকেটে ১৭০ রান তোলে পেশোয়ার। জবাবে এক ওভার হাতে রেখে জয়ের বন্দরে নোঙর করে লাহোর।
ম্যাচসেরা পাকিস্তানের অলরাউন্ডার হাফিজের ব্যাট থেকে আসে ৪৬ বলে অপরাজিত ৭৪ রান। তার টর্নেডো ইনিংসে ছিল ৯ চার ও ২ ছক্কা। তামিম ২ চার ও ১ ছয়ে ১০ বলে করেন ১৮ রান।
দ্বিতীয় কোয়ালিফায়ারে আগামীকাল রবিবার মুলতান সুলতানসকে মোকাবিলা করবে লাহোর। শনিবার সুপার ওভারে গড়ানো প্রথম কোয়ালিফায়ারে মুলতানকে হারিয়ে ফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে করাচি কিংস।
করাচি জাতীয় স্টেডিয়ামে শুরুটা ভালো হয়নি পেশোয়ারের। ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই হায়দার আলিকে বোল্ড করে দেন শাহিন শাহ আফ্রিদি। আরেক ওপেনার ইমাম উল হক ও তিনে নামা শোয়েব মাকসুদ ফেরেন থিতু হয়ে। নিয়মিত বিরতিতে তাদের যাওয়া-আসায় প্রথম ১০ ওভার শেষে দলটির স্কোর দাঁড়ায় ৩ উইকেটে মাত্র ৬৬ রান।
পরের ওভারগুলোতে রানের গতি বাড়ে অনেকখানি। সেই সঙ্গে চলে ব্যাটসম্যানদের ফেরার মিছিলও। উইকেটে অনেকটা সময় কাটানোর পর হাত খোলার আভাস দিয়েছিলেন ফ্যাফ ডু প্লেসি। কিন্তু দ্বাদশ ওভারে ছক্কা হাঁকানোর পরের বলেই দিলবার হুসাইনের শিকার হন তিনি। তার ব্যাট থেকে আসে ২৫ বলে ৩১ রান।
এরপর বিপজ্জনক হয়ে ওঠা শোয়েব মালিককে সাজঘরে পাঠান দিলবার। তিনিও ডু প্লেসির মতো উইকেটের পেছনে ক্যাচ দেন বেন ডাঙ্ককে। ২৪ বলে সমান ২টি করে চার-ছয়ে মালিকের সংগ্রহ ইনিংস সর্বোচ্চ ৩৯ রান।
কার্লোস ব্র্যাথওয়েট ও অধিনায়ক ওয়াহাব রিয়াজ দ্রুত ফিরলে ১৩৩ রানে ৮ উইকেট হারিয়ে ফেলে পেশোয়ার। সেখান থেকে ভালো পুঁজি পাওয়া ছিল খুব কঠিন। কিন্তু সেটাই সহজ করে দেখান হার্ডাস ভিলিওন। আটে নেমে ১৬ বলে ৩টি করে চার ও ছক্কায় ৩৭ রান করেন তিনি।
লাহোরের হয়ে ৩৩ রানে ৩ উইকেট নেন দিলবার। ২টি করে উইকেট পান শাহিন, ডেভিড ভিসা ও হারিস রউফ।
রান তাড়ায় ৩৩ রানের মধ্যে টপ অর্ডারের সবাইকে হারায় লাহোর। ফখর জামান ও তামিমকে একই ওভারে আউট করেন সাকিব মাহমুদ। এরপর সোহেল আখতারকেও বিদায় করেন তিনি।
তবে এক প্রান্ত আগলে সব আলো কেড়ে নেন হাফিজ। প্রথমে বেন ডাঙ্কের সঙ্গে ৫৫ ও পরে সামিত প্যাটেলের সঙ্গে ৪২ রানের জুটি গড়েন। আর ষষ্ঠ উইকেটে ভিসাকে নিয়ে অবিচ্ছিন্ন ৪১ রান যোগ করে লাহোরকে পাইয়ে দেন কাঙ্ক্ষিত জয়। ভিসা অপরাজিত থাকেন ৭ বলে ১৬ রানে।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পেশাওয়ার জালমি: ২০ ওভারে ১৭০/৯ (ইমাম ২৪, হায়দার ০, মাসুদ ১৬, ডু প্লেসি ৩১, মালিক ৩৯, ইমরান ৮, ব্র্যাথওয়েট ১০, ভিলিওন ৩৭, ওয়াহাব ০, মাহমুদ ২*; আফ্রিদি ২/১৯, রউফ ২/৪৮, দিলবার ৩/৩৩, প্যাটেল ০/২৯, ভিসা ২/৪০)
লাহোর কালান্দার্স: ১৯ ওভারে ১৭১/৫ (ফখর ৬, তামিম ১৮, সোহেল ৭, হাফিজ ৭৪*, ডাঙ্ক ২০, প্যাটেল ২০, ভিসা ১৬*; মালিক ০/৬, রাহাত ১/২৪, মাহমুদ ৩/৪১, ওয়াহাব ৩/৪১, ভিলিওন ০/২৩, ব্র্যাথওয়েট ০/২০, ইমরান ১/১৬)
ফল: লাহোর কালান্দার্স ৫ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচসেরা: মোহাম্মদ হাফিজ।
Comments