আফগানিস্তানে ১ ট্রিলিয়ন ডলারের খনিজসম্পদ?

খনিজসমৃদ্ধ আফগানিস্তানে রয়েছে দুর্লভ মাটিও। ছবি: সংগৃহীত

যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তান পৃথিবীর গরিব দেশগুলোর একটি। কিন্তু, বিজ্ঞানীরা বলছেন, দক্ষিণ এশিয়ার এই দেশটিই বিশ্বের খনিজ-সমৃদ্ধ দেশগুলোর অন্যতম।

বিজ্ঞানীদের হিসাবে আফগানিস্তানে যে পরিমাণ খনিজ সম্পদ রয়েছে তার মূল্য প্রায় এক ট্রিলিয়ন ডলার।

ইউএস জিওলোজিক্যাল সার্ভের (ইউএসজিএস) বরাত দিয়ে লাইভসায়েন্স ম্যাগাজিন সম্প্রতি এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আফগানিস্তানের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা থেকে তালেবানদের সরাতে ২০০৪ সালে মার্কিন বাহিনী অভিযান শুরু করে। এরপর দেশটিতে কী ধরনের খনিজসম্পদ রয়েছে তা খুঁজতে শুরু করে ইউএসজিএস।

২০০৬ সালে মার্কিন গবেষকরা আসেন আফগানিস্তানে। তারা দেশজুড়ে ম্যাগনেটিক, গ্র্যাভিটি ও হাইপারস্পেকট্রাল জরিপ পরিচালনা করেন।

এরিয়াল সার্ভেতে দেখা যায়, আফগানিস্তানে ৬০ মিলিয়ন টনের মতো তামা থাকতে পারে। আরও থাকতে পারে ২ দশমিক ২ বিলিয়ন টন আকরিক লোহা ও ১ দশমিক ৪ মিলিয়ন টন দুর্লভ মাটি যেমন, ল্যানথানাম, সিরিয়াম ও নিওডাইমিয়াম।

যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে বিপুল পরিমাণে অ্যালুমিনিয়াম, সোনা, রূপা, জিঙ্ক, পারদ ও লিথিয়াম থাকতে পারে বলেও জরিপ প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

আফগানিস্তানের হেলমান্দ প্রদেশে দুর্লভ মাটিসমৃদ্ধ খানেশিন কার্বোনাইটের যে মজুদ রয়েছে তার মূল্য ৮৯ বিলিয়ন ডলার।

ইউএসজিএসের আফগানিস্তান প্রকল্পের প্রোগ্রাম ম্যানেজার জ্যাক মেডলিন লাইভসায়েন্স’কে বলেছিলেন, ‘আফগানিস্তান খনিজসম্পদের দিক থেকে খুবই খুবই সমৃদ্ধ একটি দেশ।’

ইউএসজিএসের কাছ থেকে এমন তথ্য পেয়ে আফগানিস্তানের প্রতি আকৃষ্ট হয় যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব ডিফেন্স’স টাস্ক ফোর্স ফর বিজনেস অ্যান্ড স্ট্যাবিলিটি অপারেশনস। তারা আফগানিস্তান পুনর্গঠনের কাজে হাত দেয়।

এই টাস্ক ফোর্সের হিসাবে আফগানিস্তানে খনিজসম্পদ রয়েছে ৯০৮ বিলিয়ন ডলার মূল্যের। তবে আফগান সরকারের হিসাবে এর মূল্য ৩ ট্রিলিয়ন ডলার।

দেশটিতে খনিজসম্পদের এমন প্রাচুর্যের সংবাদ প্রকাশিত হওয়ার পর আফগান সরকার চীনের মেটালুরজিক্যাল গ্রুপের সঙ্গে ৩০ বছরের চুক্তি করে ফেলে।

তিন বিলিয়ন ডলার মূল্যের এই চুক্তির মাধ্যমে বেইজিং-ভিত্তিক এই খনিজসম্পদ আহরণ সংস্থাটি মেস আয়নাক তামার খনিতে সম্পদ আহরণের কাজ করবে।

এছাড়াও, আফগানিস্তানের সবচেয়ে বড় আকরিক লোহার খনিতে সম্পদ আহরণের কাজ দেওয়া হয়েছে ভারতের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা ও কয়েকটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে।

এদিকে, দ্য ডিপলোমেট ম্যাগাজিনের এক সাম্প্রতিক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সুসংহত ও সুসমন্বিত কৌশল গ্রহণ করা না হলে আফগানিস্তান তার খনিজ সম্পদের এই বিশাল মজুদের সুবিধা থেকে শুধু বঞ্চিতই হবে না, এই সম্পদ দেশটির জাতীয় নিরাপত্তার জন্যে হুমকি হয়েও উঠতে পারে।

Comments

The Daily Star  | English

Freedom fighter’s definition: Confusion, debate over ordinance

Liberation War adviser clarifies that Sheikh Mujib, Tajuddin, others in Mujibnagar govt are freedom fighters

12h ago