সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে তথ্য প্রযুক্তি আইনে মামলা প্রত্যাহার দাবি রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়নের

সংবাদ প্রকাশের কারণে দৈনিক যুগান্তরের সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ও রাজশাহীর স্থানীয় দৈনিক সোনালী সংবাদের সম্পাদক মো. লিয়াকত আলীসহ আট সাংবাদিকের বিরুদ্ধে তথ্যপ্রযুক্তি আইনে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানিয়েছেন রাজশাহীর সাংবাদিকরা।

‘রাবির আবাসিক শিক্ষকের বিরুদ্ধে হলে সিট বাণিজ্যের অভিযোগ’ শিরোনামে সংবাদ প্রকাশের জেরে ২০১৫ সালে ২৪ অক্টোবর যুগান্তরসহ ১৬টি পত্রিকার সাংবাদিকের বিরুদ্ধে আইসিটি আইনে মামলা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের শিক্ষক কাজী জাহিদুর রহমান।

মামলার তদন্ত শেষে গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর যুগান্তর পত্রিকার সম্পাদক সাইফুল ইসলামসহ আট জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা দেন তদন্ত কর্মকর্তা ও মতিহার থানার উপ-পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) মোমিন। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় এই মামলায় যুগান্তরের রাবি প্রতিনিধি মানিক রাইহান বাপ্পীকে চাপাইনবাবঞ্জের শিবগঞ্জে তার বাড়ি থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বর্তমানে তিনি কারাগারে আছেন।

এর প্রতিবাদে সোমবার সকালে রাজশাহী নগরীর সাহেববাজার জিরো পয়েন্টে রাজশাহী সাংবাদিক ইউনিয়ন (আরইউজে) এর আয়োজনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন সাংবাদিকরা।

মামলাটি প্রত্যাহারের দাবি জানিয়ে সামাজিক সংগঠন রাজশাহী রক্ষা সংগ্রাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক জামাত খান বলেন, সাংবাদিকরা জাতি গঠনে কাজ করেন। এই আইনে যদি তাদেরই হয়রানির শিকার হতে হয় তাহলে এর চেয়ে লজ্জার আর কিছু নেই। আমরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানাই তিনি যেন আইনটি বাতিল করেন।

বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের (বিএফইউজে) সহ-সভাপতি মামুন-অর-রশিদ বলেন, রাবির যে শিক্ষক আইসিটি আইনে সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন সেই শিক্ষকই এই আইনে গ্রেপ্তার হয়ে জেল খেটেছেন। তিনি নিজেই আইন মানেন না। আর তিনি সাংবাদিকদের বিরুদ্ধে যে মামলা করেছেন তাতে পুলিশ প্রভাবিত হয়ে অভিযোগপত্র দিয়েছে। আমরা এর প্রতিবাদ জানাই।

রাজশাহী মেট্রোপলিটন প্রেসক্লাবের আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট মোমিনুল ইসলাম বাবু বলেন, মামলার অভিযোগপত্র দাখিলের আগে তদন্ত কর্মকর্তা বিবাদীদের সঙ্গে কথা বলেননি। সম্পূর্ণ একপেশে মনোভাব নিয়ে তিনি বাদীর কথামতো অভিযোগপত্র দাখিল করেছেন। কিন্তু মামলা দিয়ে সাংবাদিকদের দমানো যায় না। অতীতে কখনো এটা সম্ভব হয়নি। আগামীতেও হবে না।

আরইউজে সভাপতি কাজী শাহেদ বলেন, সরকার বার বার সাংবাদিকদের আশ্বস্ত করেছে আইসিটি আইনে সাংবাদিকদের হয়রানি করা হবে না। কিন্তু বাস্তবতা তার উল্টো। একজন শিক্ষক আইসিটি আইনে শুধু সম্পাদকদের বিরুদ্ধেই মামলা করেননি, তিনি নিজের শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধেও মামলা করেছেন। তার মধ্যে যদি শিক্ষকসুলভ কোনো আচরণ থাকে, তাহলে তিনি আজই মামলা প্রত্যাহারের ঘোষণা দেবেন।

আরইউজে সাধারণ সম্পাদক তানজিমুল হকের সঞ্চালনায় এই মানববন্ধনে রাজশাহীতে কর্মরত প্রায় ৫০ জন সাংবাদিক অংশ নেন।

Comments

The Daily Star  | English

Freedom fighter’s definition: Confusion, debate over ordinance

Liberation War adviser clarifies that Sheikh Mujib, Tajuddin, others in Mujibnagar govt are freedom fighters

12h ago