এমএস বিলেট রপ্তানি বাড়াতে ইস্পাত শিল্প উদ্যোক্তাদের প্রতি শিল্পমন্ত্রীর আহ্বান
এমএস বিলেট উৎপাদন ও রপ্তানি বাড়াতে ইস্পাত শিল্প উদ্যোক্তাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন শিল্পমন্ত্রী নূরুল মজিদ মাহমুদ হুমায়ূন।
তিনি বলেন, অভ্যন্তরীণ চাহিদার তুলনায় দেশীয় ইস্পাত শিল্পের উৎপাদন ক্ষমতা বেশি থাকলেও এটি পুরোপুরি কাজে লাগানো সম্ভব হচ্ছে না।
শিল্পমন্ত্রী আজ জিপিএইচ ইস্পাত লিমিটেড এর উদ্যোগে চীনে ২৫ হাজার মেট্রিক টন এমএস বিলেট রপ্তানির উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এসব কথা বলেন।
অনলাইনে ভার্চুয়াল অনুষ্ঠানে বাণিজ্য মন্ত্রী টিপু মুনশি অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে চিটাগাং চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজের প্রেসিডেন্ট মাহাবুবুল আলম, জিপিএইচ ইস্পাত লিমিটেডের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আলমগীর কবির, জিপিএইচ গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম এবং অতিরিক্ত ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহাম্মদ আলমাস শিমূল আলোচনায় অংশ নেন।
শিল্পমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশ এখন এক উদীয়মান অর্থনৈতিক শক্তির নাম। প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার বিচক্ষণ নেতৃত্বে দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশ ইতোমধ্যে দ্রুত বর্ধনশীল অর্থনীতির দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। বিগত এক যুগে শিল্পায়ন, কর্মসংস্থান, দারিদ্র্য বিমোচন, দক্ষ জনশক্তি তৈরি, নারীর অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন, জিডিপি প্রবৃদ্ধি, মাথাপিছু আয়, শিল্পপণ্য রপ্তানি, রেমিট্যান্স প্রবাহ, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ, অবকাঠামো উন্নয়ন, নিরবচ্ছিন্ন পরিসেবাসহ সকল খাতে বাংলাদেশ অভূতপূর্ব সাফল্য দেখিয়েছে। বাংলাদেশের উন্নয়ন অভিযাত্রায় শিল্পখাত অন্যতম চালিকাশক্তি হিসেবে ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে। দেশের ধারাবাহিক জিডিপি প্রবৃদ্ধির পেছনে রয়েছে শিল্পখাতের উল্লেখযোগ্য অবদান বলে তিনি উল্লেখ করেন।
করোনাকালীন বাংলাদেশের অর্থনীতির গতিময়তার উদাহরণ টেনে শিল্পমন্ত্রী আরও বলেন, কোভিড মহামারীর মধ্যেও ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে বাংলাদেশ ৫ দশমিক ২৪ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে, যেখানে শিল্পোন্নত দেশগুলোর জিডিপি প্রবৃদ্ধি ঋণাত্মক। স্বাধীনতার আগে বাঙালিদের কোনো ইস্পাত কারখানা না থাকলেও বর্তমানে দেশে প্রায় ৪০০টি ইস্পাত কারখানা গড়ে উঠেছে। এসব কারখানা বার্ষিক উৎপাদন ক্ষমতা প্রায় ৮ মিলিয়ন মেট্রিক টন। দেশের অভ্যন্তরীণ ইস্পাত ব্যবহারের পরিমাণ ৭ দশমিক ৫ মিলিয়ন মেট্রিক টন।
তিনি বলেন, ইস্পাত শিল্পখাত বিকাশের পথে বিদ্যমান প্রতিবন্ধকতা দূর করতে শিল্প মন্ত্রণালয় আন্তরিকভাবে কাজ করছে। এ শিল্পের কাঁচামাল সহজলভ্য করতে মন্ত্রণালয় ইতোমধ্যে জাহাজ ভাঙা কার্যক্রমকে শিল্প হিসেবে ঘোষণা করেছে। চট্টগ্রামের সীতাকুন্ড উপজেলায় জাহাজ ভাঙ্গা শিল্প জোন গড়ে তোলা হয়েছে। বাংলাদেশ জাহাজ পুনঃপ্রক্রিয়াজাতকরণ আইন ২০১৮ পাস করে এর আওতায় চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড উপজেলায় জাহাজ ভাঙা শিল্প কারখানাগুলো পরিবেশবান্ধব করার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এসব শিল্প-কারখানায় হংকং কনভেনশন ২০০৯ অনুযায়ী ইয়ার্ড শিপ রিসাইক্লিং ফ্যাসিলিটি স্থাপন করা হচ্ছে। এর ফলে সংশ্লিষ্ট উদ্যোক্তারা উপকৃত হচ্ছেন এবং দেশেই ইস্পাত শিল্পের গুণগত মানসম্পন্ন কাঁচামাল সহজলভ্য হচ্ছে।
Comments