বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে রাস্তায় ৭০০ শ্রমিক
![](https://bangla.thedailystar.net/sites/default/files/styles/big_202/public/feature/images/garments_worker_1.jpg?itok=mPm4HNZ5×tamp=1605706737)
বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে গত দুইদিন ধরে কর্মসূচি পালন করছে ডিইপিজেডের একটি বন্ধ কারখানার শ্রমিকরা। গত মঙ্গলবার থেকে আশুলিয়া প্রেসক্লাবের সামনে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন সাতশ শ্রমিক। এ ছাড়া, ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে বিক্ষোভ ও মানববন্ধনও করেন তারা।
শ্রমিকরা জানান, ডিইপিজেডের ওই কারখানা কর্তৃপক্ষ গত জানুয়ারি থেকে ১১শ শ্রমিকের বেতন-ভাতা পরিশোধ করেননি। গত এপ্রিল মাসে কোনো নোটিশ ছাড়াই কারখানা বন্ধ করে কারখানা কর্তৃপক্ষ। তারপর থেকে বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে নানান কর্মসূচি পালন করছেন তারা।
কারখানার শ্রমিক আসরাফ আলী বলেন, ‘১০ মাসের বকেয়া বেতন-ভাতা পাব। কারখানার ১১শ শ্রমিকের কাউকেই এসব পাওনাদি পরিশোধ করেনি মালিকপক্ষ। বিভিন্ন সময় বেপজা কর্তৃপক্ষ কারখানা নিলামে বিক্রি করে বেতন-ভাতা পরিশোধের আশ্বাস দিলেও পরিশোধ করা হয়নি। দীর্ঘ দিন বেতন-ভাতা না পেয়ে আমরা পরিবার নিয়ে অনাহারে দিনাতিপাত করছি।’
কারখানার মেইনটেইনিং অপারেটর নূরজাহান বেগম বলেন, ‘করোনাকালীন সময়ে চাকরি হারিয়ে আমরা দিশেহারা। তারপর আবার মালিকপক্ষ পাওনা দিচ্ছে না। ফলে, বাসা ভাড়া ও খাবার টাকাও বকেয়া পড়ে গেছে। বাসা মালিকসহ পাওনাদাররা ওদিক থেকে টাকার জন্য চাপ দিচ্ছে। এমন অবস্থায় নিরুপায় হয়ে গত চার মাস ধরে আন্দোলন করছি। কিন্তু, মালিকপক্ষ ও বেপজা কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না। তাই গতকাল সকাল থেকে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছি। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা কর্মসূচি চালিয়ে যাব।’
ভুক্তভোগী শ্রমিকরা প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
গার্মেন্টস শ্রমিক সংহতির সভা-প্রধান তাসলিমা আক্তার লিমা দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘কারখানাটির মালামাল নিলামে বিক্রি করে শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধের আশ্বাস দিয়ে আসছিল বেপজা কর্তৃপক্ষ। তবে, সম্প্রতি বেপজা কর্তৃপক্ষ বলেছে, কোর্টের স্থগিতাদেশের কারণে নিলাম স্থগিত করা হয়েছে। তাই তারা শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধ করতে পারছে না।’
তিনি আরও বলেন, ‘গত ১১ মাস ধরে এতগুলো শ্রমিক করোনাভাইরাসের মধ্যেও সড়কে বিক্ষোভ করেছে। রোদ, বৃষ্টি ও শীত উপেক্ষা করে তারা নিজেদের পাওনা টাকার জন্য আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। কিন্তু, সরকার এতদিনেও এই সমস্যা সমাধানে কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করেনি।’
তাসলিমা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর নিজস্ব তহবিল থেকে হোক অথবা বেপজার নিজস্ব তহবিল হোক থেকে শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধের অনুরোধ জানাচ্ছি কর্তৃপক্ষের কাছে।’
যোগাযোগ করা হলে ডিইপিজেডের মহাব্যবস্থাপক আবদুস সোবহান দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘কারখানাটি বন্ধ ঘোষণার পর থেকেই শ্রমিকদের বকেয়া পরিশোধে বেপজার চেষ্টা করে যাচ্ছে। অধিকাংশ শ্রমিকের দুই মাসের বেতন পরিশোধ করা হয়েছে। বাকি পাওনা কারখানাটির মালামাল নিলামে বিক্রি করে পরিশোধের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু, ব্যাংকের আপত্তির কারণে হাইকোর্ট নিলামে স্থগিতাদেশ আরোপ করেন। আগামী সপ্তাহে শুনানি হবে।’
Comments