তাদের সংসার চলে ঝিনুক কুড়িয়ে

নদীতে আগের মতো ঝিনুক উৎপন্ন না হওয়ায় আয় কমেছে লালমনিরহাটের ৩০টি গ্রামের তিন শতাধিক পরিবারের। তারপরও এসব পরিবার এখনো সংসার চালায় ঝিনুক বিক্রির টাকায়। দিনভর নদীতে ঝিনুক কুড়িয়ে পাচ্ছেন পাঁচ থেকে সাত কেজি ঝিনুক। আর প্রতি কেজি ঝিনুক বিক্রি করছেন ১৫ থেকে ১৮ টাকা দরে।
আদিতমারী উপজেলার সতী নদী থেকে ঝিনুক সংগ্রহ সকরছেন এক নারী। ছবি: স্টার

নদীতে আগের মতো ঝিনুক উৎপন্ন না হওয়ায় আয় কমেছে লালমনিরহাটের ৩০টি গ্রামের তিন শতাধিক পরিবারের। তারপরও এসব পরিবার এখনো সংসার চালায় ঝিনুক বিক্রির টাকায়। দিনভর নদীতে ঝিনুক কুড়িয়ে পাচ্ছেন পাঁচ থেকে সাত কেজি ঝিনুক। আর প্রতি কেজি ঝিনুক বিক্রি করছেন ১৫ থেকে ১৮ টাকা দরে।

আদিতমারী উপজেলার ভাদাই গ্রামের রেজিয়া বেগম (৫৫) বলেন, ‘সতী নদীতে এখন আর আগের মতো ঝিনুক পাওয়া যাচ্ছে না। তিন বছর আগেও তিন-চার ঘণ্টা শ্রম দিলে ১২-১৫ কেজি ঝিনুক সংগ্রহ করতে পারতাম। কিন্তু, এখন সাত থেকে আট ঘণ্টা শ্রম দিয়ে পাঁচ থেকে ছয় কেজি ঝিনুক সংগ্রহ করতে পারছি। প্রতি বছরের নভেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত আমরা সতী নদীতে ঝিনুক কুড়িয়ে আয় করি এবং সেই আয়ে আমাদের সংসার চলে।’

রেজিয়ার স্বামী আলাউদ্দিন (৬২) জানান, গেল ২০ বছর ধরে তিনি সতী নদীতে ঝিনুক সংগ্রহ করে বিক্রি করছেন। একসময় ঝিনুক দিয়ে চুন তৈরি হতো। আর এখন ঝিনুক দিয়ে পোল্ট্রি ফিড তৈরি হচ্ছে। ঝিনুকের দাম আগের চেয়ে অনেক বেশি হলেও খুব অল্প পরিমাণে ঝিনুক মিলছে নদীতে। ‘ঝিনুক দিয়ে পোল্ট্রি ফিড তৈরি করায় নদী থেকে প্রচুর পরিমাণে ঝিনুক সংগ্রহ করা হয়েছে। সে কারণে নদীতে ঝিনুকের উৎপাদন অনেক হ্রাস পেয়েছে’, বলেন তিনি।

লালমনিরহাট সদর উপজেলার রতিপুর গ্রামের মোবারক আলী (৫০) বলেন, ‘সতী নদীতে একসময় বড় বড় আকারের ঝিনুক মিলত। কিন্তু, এখন ঝিনুকের আকার অনেক ছোট হয়ে গেছে। নদী থেকে ঝিনুক কুড়িয়ে আমরা প্রত্যেকে দিনে দেড় থেকে দুই শ টাকা আয় করতে পারি।’

লালমনিরহাট সদর উপজেলার বনগ্রাম এলাকার শিখা রানী দাস (৪৫) জানান, তিনি বিগত ২৫ বছর ধরে রত্নাই নদীতে ঝিনুক কুড়াচ্ছেন। ঝিনুক কুড়িয়ে যে আয় করছেন, তা দিয়ে সংসার চালান। ‘নদীতে ঝিনুক কুড়ানোটা আমার কর্মে পরিণত হয়েছে’, তিনি বলেন।

লালমনিরহাট শহরের উত্তর সাপ্টানা এলাকার ঝিনুক ক্রেতা আলমগীর হোসেন দ্য ডেইলি স্টারকে বলেন, ‘সারা জেলায় সতী, রত্নাই, সিঙ্গীমারী ও ভ্যাটেশ্বর নদী তীরবর্তী এলাকার প্রায় ৩০টি গ্রামের তিন শতাধিক পরিবার নদী থেকে ঝিনুক কুড়ানোর কাজ করে আয় করছেন। আমি তাদের কাছ থেকে ঝিনুক কিনে তা দিয়ে মেশিনের সাহায্যে পোল্ট্রি ফিড তৈরি করে বিক্রি করছি। ঝিনুক থেকে তৈরি পোল্ট্রি ফিডের চাহিদা ও দাম বেশি।’

Comments

The Daily Star  | English

'No justice in either country': Rohingya refugees face looting on both sides of the border

The most recent arrivals are staying with the relatives at the camp sharing their limited daily rations provided by the UN agencies.

1h ago