কুর্মিটোলায় ঢাবি ছাত্রীকে ধর্ষণ: আসামি মজনুর যাবজ্জীবন কারাদণ্ড
রাজধানীর কুর্মিটোলায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ছাত্রীকে ধর্ষণ মামলার একমাত্র আসামি মজনুকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক মোছা. কামরুন্নাহার মামলার রায় ঘোষণা করেন।
যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের পাশাপাশি মজনুকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
গত ১২ নভেম্বর এ মামলার রায় ঘোষণার তারিখ নির্ধারণ করেছিলেন আদালত। আদালত বলেন, আসামি একটি জঘন্য কাজ করেছে। প্রচলিত আইনে তার সর্বোচ্চ শাস্তি হওয়া উচিত। এই রায় মজনুর মতো ধর্ষকদের জন্য পরিষ্কার বার্তা।
রায় ঘোষণা আগে মজনু সাংবাদিকদের বলেন, ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়ার জন্য তাকে নির্যাতন করা হয়েছে। পুলিশ কোনো কারণ ছাড়াই তাকে গ্রেপ্তার করেছে। এক পর্যায়ে মজনু পুলিশকে গালাগালি করতে শুরু করেন। বিচারকের কাছে তিনি নিজেকে নির্দোষ দাবি করেন।
এর আগে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে মজনু বলেছিলেন, তিনি ওই এলাকায় অপেক্ষা করছিলেন। ভুক্তভোগী ছাত্রীকে দেখতে পেয়ে তিনি পেছন থেকে জাপ্টে ধরেন। তারপর টেনে-হেঁচড়ে পাশের একটি নির্জন জায়গায় নিয়ে যান।
তিনি বলেন, ‘যখন সে পালানোর চেষ্টা করে তখন আমি তাকে মারধর করি... আমি তাকে ধর্ষণ করেছি।’
ধর্ষণের পরে ঘড়ি, টাকা এবং মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিয়েছিলেন বলেও স্বীকার করেন মজনু।
গত ৫ জানুয়ারি রাজধানীর কুর্মিটোলা বাসস্ট্যান্ড থেকে ফুটপাত দিয়ে হেঁটে গলফ ক্লাবের পাশে পৌঁছালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রীকে তুলে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ করেন মজনু। ওই ঘটনায় ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাবা ক্যান্টনমেন্ট থানায় মামলা করেন। ৮ জানুয়ারি ভোরে র্যাব-১ অভিযান চালিয়ে শেওড়া রেলগেট এলাকা থেকে মজনুকে গ্রেপ্তার করে।
মজনু নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার মৃত মাহফুজুর রহমানের ছেলে। ওই দিন দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে র্যাব জানায়, মজনু একজন সিরিয়াল রেপিস্ট। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে মজনু স্বীকার করেছেন, তিনি প্রতিবন্ধী নারী ও ভিক্ষুকদের ধর্ষণ করতেন।
এই মামলায় ১৬ মার্চ পুলিশের গোয়েন্দা শাখার পরিদর্শক আবু বকর সিদ্দিক মজনুর বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেয়। ২৬ আগস্ট আদালত অভিযোগ গঠনের আদেশ দেন।
Comments